ছোটদের কী কী লক্ষণ দেখে সতর্ক হতে হবে? ফাইল চিত্র।
বর্ষা আসতেই ডেঙ্গির ভাইরাস দাঁত-নখ বার করে ঘরে ঘরে হানা দিতে শুরু করেছে। রোজই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে ডেঙ্গি জ্বরের দাপট নিয়ে অধিকাংশই চিন্তিত। বিশেষ করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে শিশুদের অভিভাবকদের মধ্যে। মুম্বইয়ে ইতিমধ্যেই সাত বছরের একটি ছেলের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এডিস মশার উপদ্রব বেড়েছে। কাজেই ছোটদের অনেক বেশি সাবধানে রাখতে হবে। বিপদ ঘটার আগেই লক্ষণ চিনে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
এই সময় শিশুদের জ্বর হলেই বাবা-মায়েদের বাড়তি সতর্ক থাকতে বলছেন চিকিৎসকেরা। ডেঙ্গি ভাইরাসের কারণে জ্বর কি না, তা রক্ত পরীক্ষা করলে বোঝা যাবে। তার আগে বেশ কিছু লক্ষণও প্রকাশ পাবে। ‘ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ’-এর চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল জানাচ্ছেন, যদি দেখা যায় যে শিশুদের সর্দিকাশি নেই, এ দিকে জ্বর ও গা-হাত-পা ব্যথা আছে, সে ক্ষেত্রে ডেঙ্গির কথা ভাবতেই হবে। বিশেষত পাড়ায় যদি কেউ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তা হলে শিশু থেকে প্রবীণ, সকলকেই সাবধানে হতে হবে। কারণ এর মানে হল, বাড়ির ৫০ থেকে ১০০ মিটারের মধ্যেই ডেঙ্গির ভাইরাসবাহী এডিস মশা ঘোরাফেরা করছে। এডিস মশার আর এক বৈশিষ্ট্য হল, এরা ঘন জনবসতি অঞ্চলে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করতে চেষ্টা করে। তাই বাড়িতে বা বাড়ির আশপাশে জল জমতে দেওয়া চলবে না।
সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা আর বিকেল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা এডিস ইজিপ্টাই সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। এই সময়টাতে সাবধান থাকতে হবে। শিশু খেলতে গেলে গা ঢাকা ফুলহাতা পোশাক পরান। রাতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোনোর অভ্যাস করান শিশুকে।জ্বর হলে হালকা প্যারাসিটামল দেওয়া যেতে পারে শিশুকে। তবে অবশ্যই শিশুর ওজন ও শারীরিক অবস্থা বুঝে। তবে কোনও ভাবেই অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ দেবেন না।
কী কী লক্ষণ চিনে সতর্ক হতে হবে?
জ্বর, সর্দি, পেটে ব্যথা দিয়ে রোগের সূত্রপাত। এই অবস্থায় রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ডেঙ্গি হলে জ্বরের পাশাপাশি সারা গায়ে র্যাশ বেরোতে পারে, মাড়ি থেকে রক্তপাত হতে পারে, ঘন ঘন বমি হতে থাকবে, প্রস্রাবের পরিমাণ অনেক কমে যাবে। শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি আক্রান্ত শিশুর প্লেটলেট কাউন্টের সঙ্গে সঙ্গে ‘পিসিভি’ বা ‘প্যাকড সেল ভলিউম টেস্ট’ করিয়ে নেওয়াও জরুরি। এর সঙ্গে যদি শিশুটি জানায় যে, বুকে বা পেটে ব্যথা করছে, তা হলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো দরকার। ডেঙ্গিতে বুক-পেটে জল জমে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে। র হলে কোনও অবস্থাতেই নিজেরা চিকিৎসা করা ঠিক নয়। ডেঙ্গি পরীক্ষা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চললে অনেক জটিল অবস্থা প্রতিরোধ করা যায়।