রাতে না খেলে কি দ্রুত মেদ ঝরে? ছবি: সংগৃহীত।
রোগা হওয়ার জন্য কেউ শরীরচর্চার উপর ভরসা রাখেন, কেউ আবার পছন্দের সব খাবারের সঙ্গে একেবারে আড়ি করে দেন। কিন্তু এটি দীর্ঘমেয়াদি পর্ব। সুফল পেতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। এই পর্বে অনেকেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন। চটজলদি রোগা হতে অনেকে আবার একেবারেই কার্বোহাইড্রেট খাওয়া ছেড়ে দেন, কেউ আবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কেবল তরল খাবার খেয়ে থাকেন। আরও এক দল মানুষ দ্রুত মেদ ঝরাতে রাতের খাবার এড়িয়ে চলেন। তাঁদের ধারণা, রাতে না খেলেই বুঝি দ্রুত মেদ ঝরবে। পুষ্টিবিদেরা অবশ্য উল্টো কথা বলছেন। তাঁদের মতে, রোগা হওয়ার জন্য রাতে উপোস করে থাকা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। এতে ওজন তো কমেই না, বরং বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার শিকার হতে হয়।
রাতে না খেলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
১) বিপাক ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখার পিছনে বড় ভূমিকা আছে রাতের খাবারের। গোটা রাত খালি পেটে থাকার ফলে বদহজমের ঝুঁকি তৈরি হয়। এক টানা এমন চলতে থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ায় অস্বাভাবিক নয়।
২) রাতে কী খাচ্ছেন, তার উপর নির্ভর করে ঘুম কেমন হবে। রাতে উপোস করে থাকলে ভাল ঘুম হবে না। খিদের জ্বালায় ঘুম আসতে চাইবে না। পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য পরিমাণে অল্প হলেও রাতে খাবার খাওয়া জরুরি।
৩) ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে রাতে না খেয়ে থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই সকালে উঠে প্রবল খিদে পাবে। তখন বেশি খেয়ে নেওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাতে আদৌ কোনও সুফল পাওয়া যায় না।
৪) রাতে খাবার না খেলে শরীরে শক্তির ঘাটতি শুরু হয়। স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে, শারীরিক কর্মক্ষমতার উপরেও এর প্রভাব পড়ে।
৫) রাতে উপোস করে থাকলে খিদের জ্বালায় মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। মেজাজ ভাল না থাকলে কাজে মনঃসংযোগ বিঘ্নিত হয়।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুষ্টিবিদেরা এই সব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে রাতের খাবার একেবারে বন্ধ করে দিতে বারণ করেন। তবে রাতের খাবার যত তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলতে পারবেন, ততই ভাল। দ্রুত ওজন ঝরাতে হলে খাওয়া আর ঘুমোনোর মধ্যে তিন থেকে চার ঘণ্টার ব্যবধান রাখা ভীষণ জরুরি। ওজন ঝরাতে চাইলে রাতের খাবার একেবারেই বাদ না দিয়ে বরং আগে খেয়ে ফেললে বেশি উপকার পাবেন, এমনটাই মত বেশির ভাগ পুষ্টিবিদের।