প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বিশ্ব জুড়ে স্থূলত্বের সমস্যা ঊর্ধ্বমুখী। সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, নব্বইয়ের দশকে সারা বিশ্বে ওবেসিটির (স্থূলত্ব) সমস্যা এখন প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সমস্যা কী ভাবে শরীরের ক্ষতি করে, তা সময়ে অনেকেই বুঝতে পারেন না। কিন্তু জন্মের পর জিনের একটি পরীক্ষা শিশু ভবিষ্যতে স্থূলকায় হবে কি না, তার ইঙ্গিত দিতে পারে। কারণ দেহকোষে কী ভাবে ফ্যাট জমা হবে, তা জিনগত পার্থ্যকের উপরে নির্ভরশীল। এই প্রসঙ্গে একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উল্লেখযোগ্য তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
সোমবার ‘নেচার মেডিসিন’ জার্নালে ওবেসিটি সংক্রান্ত যে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে, তা স্থূলত্ব সংক্রান্ত এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তথ্য সম্বলিত গবেষণা বলে দাবি করা হয়েছে। সারা বিশ্বের প্রায় ৬০০ জন গবেষক এই কাজে অংশ নেন। তাঁরা প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের জিনগত তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। তার থেকে তৈরি করা হয়েছে ‘পলিজেনিক স্কোর’— যা জিনগত পার্থক্যের ভিত্তিতে কোন শিশুর ভবিষ্যৎ বিএমআই (বডি মাস ইনডেস্ক) বেশি হবে, তা জানিয়ে দেবে। এই সাংখ্যমান থেকে ৫ বছর বয়সের থেকে কম বয়সি কোনও শিশু ভবিষ্যতে স্থূলত্বের শিকার হতে পারে কি না, তা-ও স্পষ্ট হবে।
ডেনমার্কের ‘ইউনিভার্সিটি অফ কোপেনহাগেন’-এর বেসিক মেটাবলিক রিসার্চের অধীনে গবেষণাটি করা হয়েছে। অধ্যাপক রুথ লস বলেন, ‘‘সুস্থ থাকতে শিশুকালই পদক্ষেপের জন্য আদর্শ সময়।’’ তিনি জনিয়েছেন, অতীতে বয়সকালে কোনও ব্যক্তির বিএমআই বেশি হবে কি না, তার ৮.৫ শতাংশ জানিয়ে দিতে পারত ‘পলিজেনিক স্কোর’। কিন্তু তাঁদের গবেষণালব্ধ ফলে তা বেড়ে হয়েছে ১৭.৬ শতাংশ। রুথের কথায়, ‘‘এটা স্থূলত্বের সম্ভাবনা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। একই সঙ্গে ভবিষ্যৎ সুরক্ষা বিষয়ক একাধিক তথ্য জানাতে তা সাহায্য করবে।’’
গবেষকেদের দাবি, এই সাংখ্যমান অনুসারে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষের স্থূলত্বের কারণকে বিভিন্ন মানদণ্ডের নিরিখে ব্যখ্যা করা যেতে পারে। গবেষকেরা এখনও এই পরীক্ষাকে ‘প্রোটোটাইপ’ হিসাবে রেখেছেন। ভবিষ্যতে আরও ভিন্নধর্মী মানুষের থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারলে, গবেষণাটি সমৃদ্ধ হতে পারে।