Weight Loss Tips

ভাত, সব্জি খেয়েই ১৮ কিলো ওজন ঝরিয়েছেন ফিটনেস প্রশিক্ষক, কী ভাবে তা সম্ভব?

ওজন কমাতে গেলে ভাত, ডাল ছাড়তে হয় এমনটা মনে করেন অনেকে। কিন্তু আসলে সবটাই ক্যালোরি এবং পুষ্টির খেলা। পছন্দের খাবার খেয়েও কী করে মেদ ঝরাবেন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫ ১৯:৩৫
Share:

ভাত খেয়েও ওজন কমানো যায়। সে ক্ষেত্রে কোন বিষয় মাথায় রাখা জরুরি? ছবি: ফ্রিপিক।

ঝরাতে হবে মেদ, ওজন কমিয়ে হয়ে উঠতে হবে ছিপছিপে। পুজো আসার আগেই তোড়জোড় শুরু করেছেন। ভাত, রুটি বাদ। বদলে থাকছে ওট্স, কিনোয়া কিংবা স্যালাড। মাঝেমধ্যে প্রোটিন বারও!

Advertisement

ওট্স, ডালিয়া কিংবা কিনোয়া খেতে অভ্যস্ত নন যাঁরা, তাঁদের মনে হতেই পারে, তবে কি তাঁরা মেদ ঝরাতে পারবেন না? অনেকেরই বক্তব্য, দিনে এক বেলা অন্তত পেটে ভাত না পড়লে শান্তি হয় না। স্বস্তি মেলে না। ভাত, রুটির মতো খাবার খেতেই বেশির ভাগ লোকে অভ্যস্ত। করিনা কপূরের পুষ্টিবিদও বলেন, সুস্থ থাকা, ওজন বশে রাখার উপায় লুকিয়ে দৈনন্দিন খাবারে। যে খাবার ভালবেসে খাওয়া যায় না বা যে খাবারের নাম এত দিন জানাই ছিল না, সেগুলি ডায়েটে জোড়ার দরকার হয় না।

ভাত, ডাল, তরকারি খেয়েও যে ওজন ঝরানো যায়, তা বলছেন পুষ্টিবিদেরাই। সম্প্রতি সমাজমাধ্যম প্রভাবী ফিটনেস প্রশিক্ষক অম্বিকা জৈন দাবি করেছেন তিনি প্রতি দিন ভাত খেয়ে ১৮ কেজি ওজন কমিয়েছেন। শুধু মেনে চলেছেন কয়েকটি শর্ত। ভাত খেয়েছেন মাপমতো, খাবার পাতে ছিল যথেষ্ট ফাইবার। সব্জি এবং স্যালাড মিলিয়ে-মিশিয়ে খেতেন তিনি, আর থাকত প্রোটিন। পনির, ডাল, ডিম, সয়াবিন— এর মধ্যে কোনও একটি খেতেন তিনি নিয়মিত। হজমক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে খেতেন ছাঁস, ঘোল বা চিনি ছাড়া লস্যি।

Advertisement

প্রতিটি খাবার যে কোনও ঘরেই খাওয়া হয়। এত সহজে কি সত্যি ওজন কমে?

কলকাতার পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক বলছেন, ‘‘সাদা ভাত খেয়েই ওজন কমানো যায় এবং ডায়াবিটিস থাকলেও তা খাওয়া যেতে পারে। ওজন কমানোর জন্য অনেকগুলি বিষয় জরুরি। শুধু ভাত খাওয়া কমিয়ে ফেললেই হবে, তা কিন্তু নয়। যিনি ওজন কমাতে চাইছেন, তিনি কতটা ওজন কমাবেন, তাঁর কোনও অসুখ আছে কি না, তিনি কী খেতে পছন্দ করেন বা না করেন তার উপর ডায়েটের বিষয়টি নির্ভর করে।’’

থানের পুষ্টিবিদ গুলনাজ় শেখ এক সাক্ষাৎকারে বলছেন, ‘‘ভাত কিন্তু ওজন কমানোর পথে বাধা নয়। বরং ভাতের সঙ্গে কী খাওয়া হচ্ছে, কতটা খাওয়া হচ্ছে সেটাই জরুরি। পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সঠিক খাবার বেছে নিতে পারলে, ভাত খেয়েই ওজন কমানো যাবে।’’

কেমন হবে ডায়েট?

ব্যক্ত বিশেষের ডায়েট আলাদা হবে। তবে মোটামুটি ওজন কমানোর জন্য যে বিষয়গুলি মাথায় রাখা দরকার, দুপুর হোক বা রাত মোটামুটি ১২০-১৫০ গ্রাম পর্যন্ত ভাত খাওয়া যেতে পারে বলছেন গুলনাজ়। খাবারের অর্ধেক থাকতে হবে ফাইবার সমৃদ্ধ টাটকা সব্জি, আর অতি অবশ্যই প্রোটিন। মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, পনির, সয়াবিনে প্রচুর প্রোটিন মেলে। শাক এবং সব্জিতে থাকে ফাইবারের পাশাপাশি ভিটামিন এবং খনিজ। ডিম, বাদাম, বীজ জাতীয় খাবারে মেলে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য এই সব কিছুর প্রয়োজন আছে। টক দই, ঘোলের মতো প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। হজমে সহায়তা করে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার চট করে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি হতে দেয় না।

পুষ্টিবিদেরা বলেন, ওজন কমানোর জন্য ক্যালোরি বুঝে খাওয়া জরুরি। ওজন কমাতে হলে ক্যালোরির ঘাটতি তৈরি করতে হবে। শারীরবৃত্তীয় এবং দৈনন্দিন কাজের জন্য নির্দিষ্ট ক্যালোরির দরকার হয়। খেয়াল রাখতে হবে সেই ক্যালোরির জোগান যেন থাকে আবার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি সঞ্চিত না হয়। বেশি খেয়ে ফেললে শরীরচর্চার মাধ্যমে তা ঝরিয়ে ফেলা দরকার। ক্যালোরির হিসাব ঠিক থাকলে, দৈনন্দিন যত ক্যালোরি প্রয়োজন তার চেয়ে একটু কম ক্যালোরির খাবার খেলে এই ঘাটতি তৈরি করা সম্ভব।

সকলের জন্যই কি এই ডায়েট ভাল?

পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, ডায়াবিটিস থাকলে পিসিওএস (পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম) হলে ভাত খাওয়ার মাত্রা নির্দিষ্ট করতে হবে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। ভাতের বদলে ব্রাউন রাইস তুলনামূলক ভাল হতে পারে। অনন্যা বলছেন, ‘‘ব্যক্তি অনুযায়ী ডায়েট, খাবারের পরিমাণ আলাদা হবে। তিনি কত ক্ষণ পরিশ্রম করেন, ক’টায় খান, ওজন কমানোর জন্য এমন অনেক বিষয়ই কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement