ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিঙ্ক খাওয়া কতটা ক্ষতিকর হতে পারে ছবি: ফ্রিপিক।
ওআরএসের মতোই পাউডার ড্রিঙ্ক। ইলেক্ট্রোলাইট পাউডারের প্যাকেট এখন দোকানে বেশ সহজলভ্য। জলের ঘাটতি মেটাতে ও নিমেষে ক্লান্তি ভাব কাটিয়ে তরতাজা হয়ে উঠতে এই পাউডার ড্রিঙ্ক কিনে খাওয়ার চল বেড়েছে কমবয়সিদের মধ্যে। তবে শুধু কমবয়সিরা নন, বয়স্কেরাও আকছার কিনে খাচ্ছেন এগুলি। এই ধরনের পাউডার ড্রিঙ্কে কি আদৌ সুরক্ষিত?
ওআরএসের যেমন প্যাকেট কিনতে পাওয়া যায়, তেমনই ইলেক্ট্রোলাইট পাউডারেরও প্যাকেট পাওয়া যায়। অনেকেই ব্যাগে রেখে দেন এমন প্যাকেট। তার পর সারা দিনে যত বার খুশি জলে গুলে খান। এতে ক্যালোরি কম থাকে ঠিকই, তবে চিনির মাত্রা অত্যধিক পরিমাণে থাকে। একটি ছোট প্যাকেট জলে গুলে খেলে নিমেষে তরতাজা ভাব আসবে, ক্লান্তি কেটে যাবে ঠিকই, কিন্তু রক্তে শর্করার পরিমাণও বাড়বে।
ইলেক্ট্রোলাইট পাউডার ড্রিঙ্ক কি ভাল?
এই ধরনের পানীয়ের চাহিদা খুব বেড়ে গিয়েছে। একটানা কাজের পর চনমনে হয়ে উঠতে এই পানীয়ের জুড়ি মেলা ভার। নিমেষে সমস্ত ক্লান্তি কেটে যায়। শরীরে বেশ ফুরফুরে ভাব আসে। নতুন করে পরিশ্রম করার শক্তি পাওয়া যায়। আর চটজলদি চনমনে হওয়ার ফাঁদেই পা দিচ্ছেন কমবয়সিরা। যাঁরা জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করেন, তাঁরা ওয়ার্কআউটের পরে এই পানীয় খাচ্ছেন, যাতে কাজ হচ্ছে স্পোর্টস ড্রিঙ্কের মতোই। কিন্তু এই ধরনের পানীয়ের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, সে বিষয়ে অনেকেরই ধারণা নেই।
‘পাবমেড’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, ইলেক্ট্রোলাইট শরীরের কোষে কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। তাই জলের মতো ইলেক্ট্রোলাইট যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি খনিজ লবণও শরীরের জন্য জরুরি। তবে তা পরিমিত পরিমাণে। প্রতি দিন যদি এই ধরনের পানীয় বেশি পরিমাণে কেউ খান, তা হলে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বিগড়ে যাবে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, শক্তিবর্ধক এই পানীয় নিঃশব্দে হার্টের ক্ষতি করে চলেছে। হৃৎস্পন্দনের হার কমে যাওয়া থেকে হার্টের আরও অনেক সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে এমন কিছু পানীয়।
পরিশ্রমের ফলস্বরূপ শরীরের ক্যালোরির বিশেষ মাত্রায় ক্ষয় ঘটলে তবেই এই ধরনের এনার্জি ড্রিঙ্কের প্রয়োজন হয়। তার জন্য খেলোয়াড়-মহলে এই বিশেষ পানীয়ের বেশি কদর এবং প্রয়োজন। কিন্তু সকলেই যদি এমন পানীয় কিনে খেতে শুরু করেন, তা হলে বিপদ। এতে থাকা শর্করা শরীরে স্থূলতা, দাঁতের ক্ষয়রোগ, নিয়মিত মাথার যন্ত্রণা, ঘুমের ব্যাঘাত, ডায়াবিটিসের মতো অসুখের কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই এই ধরনের পাউডার ড্রিঙ্কের বদলে ছাতুর শরবত, নুন-চিনির জল, বাড়িতে আদা-লেবু-পুদিনা ভেজানো ডিটক্স পানীয় খাওয়া বেশি উপকারী।