কী ভাবে করবেন ব্যায়ামটি? ছবি: সংগৃহীত।
জিমে না গিয়েই ওজন কমাতে চান? কোনও যন্ত্র নয়, ঘরে বসেই একটি সহজ ব্যায়াম মাংসপেশিকে সক্রিয় করবে, জোর বাড়াবে এবং সামগ্রিক ভাবে আরও ফিট এবং শক্তিশালী করে তুলবে। প্রতি দিন কেবল একটি ব্যায়ামেই তা সম্ভব।
কথা হচ্ছে প্ল্যাঙ্কের। রোজের এই ব্যায়ামের ফলে শরীরে একাধিক পরিবর্তন আসতে পারে। ওজন কমানো থেকে শুরু করে শরীরের জোর বাড়ানোর জন্য নিজেকে দিনে মাত্র পাঁচটি মিনিট সময় দিন। প্রথম দিকে ১০-১৫ সেকেন্ড করে শুরু করুন। ধীরে ধীরে প্ল্যাঙ্কের মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করুন। ৩০-৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত ধরে রাখতে পারলেই বুঝবেন, আপনার শরীরে জোর বেড়েছে। যাঁরা এই ব্যায়ামে অভ্যস্ত বহু দিন ধরে, তাঁরা ১-২ মিনিট পর্যন্তও করতে পারেন।
কী ভাবে করতে হয় প্ল্যাঙ্ক?
মেঝের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে রাখতে হবে শরীরকে। এ বার আপনার কনুই কাঁধের ঠিক নীচে রাখুন। হাতের তালু থেকে কনুই পর্যন্ত মেঝেতে রেখে শরীর মেঝে থেকে তুলে ফেলুন। কেবল পায়ের আঙুলগুলিতে ভর দিতে হবে। পিঠ বেঁকানো বা নিতম্ব উঁচু করা যাবে না। দৃষ্টি থাকবে সরাসরি সামনের দিকে। যত ক্ষণ সম্ভব এই অবস্থানে স্থির থাকুন।
প্ল্যাঙ্ক করুন রোজ নিয়মিত। ছবি: সংগৃহীত।
রোজ প্ল্যাঙ্ক করলে কী কী উপকার?
পেটের মাংসপেশি শক্ত হয়: প্ল্যাঙ্ক করলে পেট, তার পাশের অংশ আর কোমর, এই নির্দিষ্ট এলাকার সব মাংসপেশি একসঙ্গে সক্রিয় হয়ে ওঠে। এতে কোমর ও পেটের অংশ দৃঢ় হয় এবং শরীরের ভার বহন করা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।
শরীরের ভঙ্গি সুন্দর হয়: প্ল্যাঙ্ক করলে পিঠ, কাঁধ, ঘাড় ও বুকের পেশি একসঙ্গে সক্রিয় হয়ে পড়ে বলে দেহের ভঙ্গি উন্নত হয়। শরীর সোজা রাখা, দীর্ঘ ক্ষণ সোজা হয়ে বসে থাকা, ইত্যাদি আর কঠিন বলে মনে গবে না।
পিঠের ব্যথা কমে: নিয়মিত এই ব্যায়াম অভ্যাস করলে মেরুদণ্ডের উপর বাড়তি চাপ কমে যায় এবং আশপাশের পেশি মজবুত হয়। এতে পিঠে টান বা ব্যথা হওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষমতা বাড়ে: প্ল্যাঙ্কের সময়ে একটানা শরীরকে একই ভঙ্গিতে ধরে রাখতে হয়। কেবল দুই হাতের উপর ভর দিতে হয়। আর তাই শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষমতা অনেকখানি বেড়ে যায়। হাঁটা-চলা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজেও বড়সড় পরিবর্তন লক্ষ করতে পারবেন।
শরীর নমনীয় হয়: প্ল্যাঙ্ক করলে কাঁধ, হ্যামস্ট্রিং ও গোড়ালির জোর বাড়ে, নমনীয় হয় পেশিগুলি। এর ফলে শরীরে জং ধরে যাওয়ার মতো অনুভূতি থেকে রেহাই পাবেন দ্রুত। সর্বদা টানটান থাকবে শরীর।
দেহ টোন হয়: পেট, বাহু, কাঁধ, নিতম্বের মতো শরীরের এই অংশগুলির পেশি একসঙ্গে কাজ করা শুরু করে প্ল্যাঙ্কের সময়ে। ফলে শরীরের আকৃতিতে বদল দেখা দেয়। শরীর আরও ছিপছিপে হয় এবং টোনড দেখায় সামগ্রিক ভাবে। এই সময়ে অনেকখানি ক্যালোরি ঝরার সুযোগ পায়।
মনোযোগের ক্ষমতা বাড়ে: শরীরকে একটানা প্ল্যাঙ্কের অবস্থানে রাখার জন্য মনোযোগের প্রয়োজন। সামান্য এ দিক-ও দিক হলেই ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। এর ফলে মানসিক ভাবে স্থির হওয়ার ক্ষমতা বাড়ে, ধৈর্য বাড়ে, মনোযোগের সমস্যাও দূর হয়।