হিন্দু ধর্মে উপবাস রাখার মাহাত্ম্য বিশেষ। প্রায় সকল হিন্দু
বাড়িতেই এই রীতির চল রয়েছে। কেবল মহিলারাই নয়, পুরষেরাও এই দলে শামিল হন। ইষ্টদেবতাকে
তুষ্ট করাই লক্ষ্য হোক বা কাছের মানুষের সুস্থতা কামনা বা ইচ্ছাপূরণ, নানা
কারণে আমরা উপোস করে থাকি। তবে সারা দিন কেবল জল-খাবার না খেয়ে থাকলেই উপোস
সম্পূর্ণ হয় এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল বলে জানাচ্ছে শাস্ত্র। সঠিক উপায় মেনে উপোস
রাখলে তা হলেই ফলপ্রাপ্তি ঘটে। যদিও সেই নিয়মগুলি সম্বন্ধে হাতেগোনা কিছু
ব্যক্তিরই ধারণা রয়েছে। তাই আজ জেনে নিন উপোস পালনের সঠিক নিয়মকানুন।
উপবাস রাখার নিয়ম:
- উপোস রাখলেই হবে না, সংকল্পও করতে হবে। তাই যে দিনটা উপোস করছেন,
সে দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সবার আগে সংকল্প করতে হবে।
- উপোস রাখতে কষ্ট হয় বলে যে সারা দিন ঘুমিয়ে কাটাবেন তা
কিন্তু হবে না। সেই দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে হবে।
- সংকল্প পূরণ না হওয়া পর্যন্ত উপোস ভাঙা যাবে না। সংকল্প
পূরণ হওয়ার পরই উপোস ভাঙতে পারবেন।
- উপোস ভাঙার পরে নিরামিষ আহার গ্রহণ আবশ্যিক। ফলাহার করা যেতে
পারে। হালকা কোনও খাবার খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্য ভাল হবে। কোনও আমিষ আহার এই দিন
ভুলেও গ্রহণ করা যাবে না।
- উপোস চলাকালীন মন শান্ত রাখুন। এই সময় কোনও খারাপ চিন্তা
মাথায় আনা যাবে না। মনকেও চঞ্চল হতে দেওয়া যাবে না।
- এই দিন যে কোনও প্রকার ঝগড়া-অশান্তি এড়িয়ে চলাই কাম্য। না
হলে উপবাসের পূর্ণ সুফল প্রাপ্তি হয় না।
- উপবাস রাখাকালীন কারও ব্যাপারে কটু কথা বলা যাবে না। কাউকে
নিয়ে সমালোচনা করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। যে কোনও প্রকার অপ্রয়োজনীয় কথোপকথন
এড়িয়ে চলাই ভাল হবে।
- যদি ঈশ্বরের উদ্দেশে উপবাস রাখেন, তা হলে যে ঈশ্বরকে স্মরণ করে উপোস রাখছেন সারা দিন তার নামই জপ করে চলুন। এতে তাঁর আশীর্বাদ
প্রাপ্ত হবে।
- মনের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য উপবাস রাখলে সারা দিন সেটি নিয়েই
ভাবুন। তবে সেটা নিয়ে কোনও নেগেটিভ চিন্তা মাথায় আনা যাবে না। সেই সংক্রান্ত উপবাস
পালনের কোনও বিশেষ নিয়ম রয়েছে কি না সেটা অভিজ্ঞ ব্যক্তির থেকে জেনে নিতে হবে।