Shefali Jariwala Death Prediction

শেফালী জরীওয়ালার মৃত্যুর নেপথ্যে কোষ্ঠীর আট নম্বর ঘরে চাঁদ-বুধ-কেতুর অবস্থান? এই জোট কি সত্যিই ভয়ঙ্কর?

জুনের ২৮ তারিখ আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলি অভিনেত্রী শেফালী জরীওয়ালা। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমের পাতায় একটা ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে যে শেফালীর কোষ্ঠীর আট নম্বর ঘরে চন্দ্র, বুধ ও কেতু একসঙ্গে অবস্থান করায় তাঁর মৃত্যু ঘটেছে। এই কথা কতটা সত্যি?

Advertisement

সুপ্রিয় মিত্র

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫ ১১:২৮
Share:

—প্রতীকী ছবি।

মৃত্যু চিরসত্য। সেটি যতই অনাকাঙ্ক্ষিত হোক। অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও ভয় বা যে কোনও কারণেই হোক, কমবেশি সকলেরই মনে নিজের পরমায়ু এবং মৃত্যু সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন থাকে। এমনকি যাঁরা জ্যোতিষীর কাছে অন্য কোনও সমস্যা নিয়ে যান, তাঁরাও নির্দিষ্ট সমস্যার প্রসঙ্গ ছাড়া নিজের আয়ু এবং মৃত্যু সংক্রান্ত প্রশ্ন করে থাকেন।

Advertisement

সকলের জীবনেই নানা পরিকল্পনা থাকে। কেউই অকালে সাজানো সংসার ছেড়ে চলে যেতে চান না। কিন্তু তা-ও মৃত্যুকে ফাঁকি দেওয়ার সাধ্যি আমাদের কারও নেই। জুনের ২৮ তারিখ আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলি অভিনেত্রী শেফালী জরীওয়ালা। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটেছে তাঁর। কিন্তু শেফালীর মৃত্যুর পর থেকেই তাঁর চলে যাওয়া নিয়ে নানা প্রকার জলঘোলা হচ্ছে। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমের পাতায় একটা ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে যে শেফালীর কোষ্ঠীর আট নম্বর ঘরে চন্দ্র, বুধ ও কেতু একসঙ্গে অবস্থান করায় তাঁর মৃত্যু ঘটেছে। এই কথা কতটা সত্যি?

সাধারণ মানুষ যাঁরা একটু জ্যোতিষশাস্ত্র চর্চা করেন, তাঁদের অনেকেরই ধারণা মৃত্যু মানেই অষ্টম স্থান। বিষয়টা আংশিক সত্যি হলেও, সম্পূর্ণ সত্যি না। অষ্টম স্থান থেকে মৃত্যু সংক্রান্ত যে বিষয় দেখা হয় বা অষ্টম স্থান যে বিষয়ে ইঙ্গিত দেয় তা হল আয়ু বা পরমায়ু। আমাদের কোষ্ঠীর অষ্টম স্থান থেকে মৃত্যুর প্রকৃতি, সময় এবং মৃত্যুর স্থান সম্বন্ধেও একটা ধারণা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও অষ্টম স্থান পৈতৃক সম্পত্তি, উপহার, অপ্রাপ্ত সম্পত্তি, অপমান বা মানহানি, অধঃপতন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইঙ্গিত দান করে।

Advertisement

জ্যোতিষশাস্ত্রে কোনও একটি বিষয় দেখে ভবিষ্যদ্বাণী করলে মুশকিল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেটি ভুলই প্রমাণিত হয়। খুব ভাল করে, বিভিন্ন বিষয়ে সূক্ষ্ম বিচার করার পর কোনও কিছু সম্বন্ধে মন্তব্য করা উচিত।

মৃত্যুর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় একাধিক গ্রহের উপর নির্ভরশীল, যেমন বৃহস্পতি, শুক্র, শনি, রবি, রাহু এবং কেতু। একটু বিশ্লেষণ করলে সহজ হবে।

বৃহস্পতি জীব কারক, নাড়ী জ্যোতিষ মতে বৃহস্পতি ব্যক্তি। শুক্র সঞ্জীবনী শক্তি যুক্ত গ্রহ। অর্থাৎ, শুক্র চাইলে খুব জটিল অবস্থা থেকেও কোনও মানুষকে সুস্থতায় ফিরিয়ে আনতে পারবে। শনি কর্ম কারক, মানুষের মৃত্যুর অর্থ তাঁর কর্মের সমাপ্তি। এই কারণে শনির বিচার জরুরি। রবি আত্ম কারক। রাহু বৃদ্ধি করে, কেতু হানি করে। অর্থাৎ, মৃত্যুর ক্ষেত্রে মৃত্যুযোগ বা দোষ বৃদ্ধি এবং কর্মের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। সুতরাং, মৃত্যুর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানার জন্য শুধুমাত্র অষ্টম স্থানে আবদ্ধ থাকলে সঠিক হিসাব সম্ভব না। তাই শেফালী জরীওয়ালার মৃত্যুর নেপথ্যে যে অষ্টম স্থানে কেতু, চাঁদ ও বুধের একত্র অবস্থান দায়ী সেটা হলফ করে বলা যায় না।

একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, সমস্ত বিষয়ের হিসাব হবে জন্মকালীন গ্রহের অবস্থানের সঙ্গে গোচরকালীন গ্রহের হিসাবের ভিত্তিতে।

নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্মকালীন গ্রহের অবস্থান অনুযায়ী যে সমস্ত যোগ বা দোষ সৃষ্টি হয় তা নির্দিষ্ট। ওই যোগ বা দোষ কখন ফলপ্রসূ হবে তা নির্ভর করে কখন ওই যোগ বা দোষ গোচরকালীন গ্রহের দ্বারা সক্রিয় হবে তার উপর।

একটি কথা না বললেই নয়, বাংলা প্রবাদ আছে ‘জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে, তিন বিধাতা নিয়ে’, সুতরাং এই বিষয় যখন আমরা বিধাতার হাতেই ছেড়ে দিয়েছি তখন আমাদের সেই সব বিষয় নিয়ে বিশেষ মাথা না ঘামানোই ভাল। যিনি যাঁকে বিশ্বাস করেন, আস্থা রাখেন, তাঁর উপর সেই বিশ্বাস ও আস্থা রেখে ভাল কর্ম করে যান। মৃত্যু সংক্রান্ত নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকুন, ভাল থাকুন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement