‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’কে সম্পত্তি বলে বিবেচনা করা হবে, জানাল মাদ্রাজ হাই কোর্ট। —প্রতীকী চিত্র।
‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’ ভারতে লেনদেনের বৈধ মাধ্যম হিসাবে স্বীকৃত নয়। তবে দেশের আইন অনুসারে এটিকে সম্পত্তি বলে বিবেচনা করাই যায়। সম্প্রতি এক মামলায় এমনটাই জানিয়েছে মাদ্রাজ হাই কোর্ট। ক্রিপ্টোকারেন্সি নির্দিষ্ট মালিকানাধীন সম্পত্তি বলেই মনে করছে আদালত।
মাদ্রাজ হাই কোর্টের বিচারপতি আনন্দ বেঙ্কটেশ জানান, ক্রিপ্টোকারেন্সিকে হাত দিয়ে ধরা যায় না। এটি কোনও আইনি দরপত্র (লিগ্যাল টেন্ডার)-ও নয়। তবে এটি এমন একটি সম্পত্তি যা কেউ নিজের কাছে রাখতে পারেন এবং তা ভোগ করতে পারেন। বিচারপতি তাঁর নির্দেশনামায় লিখেছেন, ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি যে একটি সম্পত্তি, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এটি কোনও বাস্তব সম্পত্তি নয় এবং এটি কোনও মুদ্রাও নয়। তবে, এটি এমন একটি সম্পত্তি যা উপভোগ করা এবং দখলে রাখা সম্ভব।’
‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’ বর্তমানে ভারতের রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। ফলে এটি লেনদেনের কোনও বৈধ মুদ্রা হিসাবেও স্বীকৃত নয়। তবে ব্যক্তিগত ভাবে কেউ ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’ নিজের কাছে রাখতে পারেন বা কেনাবেচা করতে পারেন। ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’তে বিনিয়োগের জন্য বেশ কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্মও চালু রয়েছে। এমনই এক অনলাইন প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন বিনিয়োগকারী। মামলাকারীর দাবি, ২০২৪ সালে ওই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে একটি সাইবার হানা হয়েছিল। তার পরেই ওই অ্যাকাউন্টে তাঁর জমানো ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’ সম্পূর্ণ ‘ফ্রিজ়’ করে দেওয়া হয়।
আদালতে মামলাকারী জানান, তিনি ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ১,৯৮,৫১৬ টাকা ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’তে বিনিয়োগ করেন। ওই টাকার বিনিময়ে তিনি ৩,৫৩২.৩০ ‘ক্রিপ্টো কয়েন’ কেনেন। তাঁর মোবাইল নম্বর এবং ইমেল আইডি ব্যবহার করেই অ্যাকাউন্টটি রেজিস্ট্রার করা হয়েছিল। কিন্তু গত বছরের জুলাইয়ে সংস্থার তরফে তার ওই অ্যাকাউন্টটি ফ্রিজ় করে দেওয়া হয় বলে দাবি মামলাকারীর।
হাই কোর্ট জানিয়েছে, ভারতীয় আইন অনুসারে, ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’কে একটি ‘ভার্চুয়াল ডিজিটাল সম্পত্তি’ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এটিকে কোনও লেনদেনের জন্য বৈধ বলে বিবেচনা করা হয় না। কেউ এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করলে তা ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’তে রূপান্তরিত হয়। ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’কে দেশের আয়কর আইনের ২(৪৭এ) ধারায় একটি ‘ভার্চুয়াল ডিজিটাল সম্পত্তি’ হিসেবে বিবেচনা করা যায় বলে জানিয়েছে আদালত। মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত ওই ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’ পুর্নবণ্টন করা যাবে না বলে জানিয়েছে আদালত।