Rahul Gandhi

রাহুলকে সাজা দেওয়া সেই বিচারকের ‘আইন ভেঙে’ পদোন্নতি গুজরাতে! স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যের বিজেপি সরকার ২০০৫ সালের ‘গুজরাত স্টেট জুডিশিয়াল সার্ভিস রুল’ ভেঙে বিচারক বর্মাকে পদোন্নতি দিয়েছে বলেও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে শুক্রবার।

Advertisement
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৩ ১৫:১৫
Share:

রাহুল গান্ধীকে সাজা দেওয়া বিচারকের নিয়ম ভেঙে পদোন্নতি নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক।

মোদী পদবি নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের দায়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে ২ বছরের জেলে সাজা দিয়েছিলেন তিনি। এর পরেই ‘বেআইনি ভাবে’ গুজরাত সরকার সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সেই বিচারক হরিশ হাসমুখভাই বর্মার পদোন্নতি করেছিল বলে জানাল সুপ্রিম কোর্ট!

Advertisement

বিচারপতি এমআর শাহ এবং বিচারপতি সিটি রবিকুমারকে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ শুক্রবার সেই পদোন্নতিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।বিচারক বর্মার পাশাপাশি আরও ৬৭ জন বিচারককে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যের বিজেপি সরকার ২০০৫ সালের ‘গুজরাত স্টেট জুডিশিয়াল সার্ভিস রুল’ ভেঙে পদোন্নতি দিয়েছে বলেও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে শুক্রবার। সবগুলি বদলির উপরেই জারি হয়েছে স্থগিতাদেশ। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘পদোন্নতির ক্ষেত্রে অবশ্যই অভিজ্ঞতা এবং যোগ্যতার মাপকাঠির বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে তা হয়নি।’’

মোদী পদবি মামলায় গত ২৩ মার্চ ‘অপরাধমূলক মানহানি’র অভিযোগে রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক বর্মা। ২ বছর জেলের সাজাও দিয়েছিলেন (ঠিক এই মেয়াদের সাজা দিলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে কোনও সাংসদ বা বিধায়কের পদ খারিজ হয়)। তার দেড় মাসের মধ্যেই কেন গুজরাতের সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক বর্মার পদোন্নতি হল, সুপ্রিম কোর্টে সে প্রশ্ন তুলেছিলেন গুজরাতেরই দুই সিনিয়র বিচারক। শুক্রবার শীর্ষ আদালত সেই আবেদনের ভিত্তিতেই এই স্থগিতাদেশ দিয়েছে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ১০ বছর নিম্ন আদালতে বিচারকের পদে থাকা ৪৩ বছরের বর্মা সম্প্রতি রাজকোটের দায়রা আদালতে অতিরিক্ত বিচারক হিসাবে পদোন্নতি পেয়েছিলেন। বিচারক বর্মা-সহ গুজরাতের মোট ৬৮ জন বিচারকের পদোন্নতির নির্দেশিকা জারি হয় চলতি মাসেই। সেই নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, গুজরাতের দুই সিনিয়র সিভিল জজ— রবিকুমার মেহতা এবং সচিন প্রতাপরায় মেহতা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, নিয়ম ভেঙে পদোন্নতি হয়েছে বিচারক বর্মা-সহ ৬৮ জনের। শুক্রবার দুই বিচারপতির বেঞ্চ সেই অভিযোগের সারবত্তা মেনে নিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় কর্নাটকের কোলারে ‘মোদী’ পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে গত ২৩ মার্চ গুজরাতের সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা ২ বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে। বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদীর দায়ের করা মামলার ভিত্তিতেই ছিল ওই রায়। ওই রায়ের পরেই ২৪ মার্চ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮(৩) নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করেছিলেন।

রাহুল তাঁকে দোষী ঘোষণা এবং সাজার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে গত ৩ এপ্রিল সুরাতেরই দায়রা আদালতে (সেশনস কোর্ট) আবেদন করেছিলেন। কিন্তু গত ২০ এপ্রিল অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আরপি মোগেরা খারিজ করেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির সেই আবেদন। এর পরে পদবি-মন্তব্যে দোষী ঘোষণা এবং সাজা কার্যকরের জন্য সুরাত দায়রা আদালতের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে মঙ্গলবার গুজরাত হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন রাহুল। কিন্তু গত মঙ্গলবার গুজরাত হাই কোর্টের বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছক অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের আবেদন খারিজ করে জানান, আগামী ৪ জুন, গরমের ছুটি শেষ হলে এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন