weight

একটা সময়ের পর আর ওজন কমছে না কিছুতেই? এই সব কৌশলেই করুন বাজিমাত

কলকাতা মেদ ঝরাতে কেবল একবগ্গা হয়ে ডায়েট আর শরীরচর্চা করলেই হবে না। মাথায় রাখতে হবে কিছু কৌশলও। আপনার ক্ষেত্রেও এমন কোনও কৌশলে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে না তো?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১০:২৯
Share:

ডায়েট বা শরীরচর্চার মাঝে কিছু ভুলই শরীরের বাড়তি মেদ ঝরার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ছবি: শাটারস্টক।

খাদ্যাভ্যাসের ধরন বদলানো, আলস্য ভুলে শারীরিক কসরত, জীবনযাপনকে নিয়ন্ত্রণ করা এ সবই করছেন যথাসাধ্য। তবু ফল মিলছে কই? বরং প্রথম প্রথম কিছুটা ওজন কমলেও তার পর আর কিছুতেই ঝরতে চাইছে না মেদ। এমন সমস্যা আপনার একার নয়। বরং ওজন কমানোর জন্য চেষ্টা শুরু করলে অধিকাংশ জনকেই এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।

Advertisement

একটা সময়ের পরে এই নাছোড় ওজন অনেকেরই মনোবল ভেঙে দেয়। কাঙ্ক্ষিত ফল না মেলায় হতাশা আসাও খুব আশ্চর্যের নয়। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, এই সমস্যার নেপথ্যে আসলে থেকে যায় কিছু কৌশলগত ত্রুটি। ডায়েট বা শরীরচর্চার মাঝে সে সব ভুলই শরীরের বাড়তি মেদ ঝরার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

‘‘ডায়েট বা ব্যায়াম এই দুটোই যেমন প্রয়োজন, তেমনই দরকার কিছু বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকাও। না হলে সেই ছোট ছোট ভুলের মাসুল গুনতে গিয়েই ফলাফলে কোপ পড়ে। তাই মেদ ঝরাতে কেবল একবগ্গা হয়ে ডায়েট আর শরীরচর্চা করলেই হবে না। মাথায় রাখতে হবে কিছু কৌশলও।’’— জানালেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও ডায়াটেশিয়ান সুবর্ণ গোস্বামী। আপনার ক্ষেত্রেও এমন কোনও কৌশলে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে না তো?

Advertisement

আরও পড়ুন: মাছ খেতে ভালবাসেন? ভুল উপায়ে খেয়ে শরীরের বিপদ ডাকছেন না তো?

ওজনপাল্লায় মন: শরীরের মেদ ঝরাতে গেলে প্রতি পনেরো দিন অন্তর ওজন নেওয়া জরুরি। কিন্তু আমরা অনেকেই এ বিষয়ে অতিরিক্ত সচেতন হয়ে পড়ি ও পারলে প্রায় দিন দুই অন্তর ওজন দেখি, একটু এ দিক ও দিক হলেই আরও বেশি পরিশ্রম ও আরও কড়া ডায়েটে অভ্যস্ত হতে যাই। এই ভুলের পথ থেকে আগে সরুন। যে কোনও সাধারণ ও স্বাভাবিক ডায়েট এবং শরীরচর্চায় এক জন সুস্থ মানুষের ওজন প্রতি মাসে ৪-৪.৫ কেজি কমে। থাইরয়েডের মতো সমস্যা থাকলে তা নেমে আসে দু’-আড়াই কেজিতে। ওজন কমার প্রক্রিয়া খুব ধীরগতির। এটি চটজলদি হওয়া শরীরের জন্য ভাল নয়। তাই প্রতি দিন কয়েক গ্রাম বেড়ে গেলেই আরও কড়া দাওয়াই— এই হিসাব ঠিক নয়। বরং এর প্রভাবেই শরীর অসুস্থ হয়ে হিতে বিপরীত হয়। বরং টানা পনেরো দিন পর ওজন নিন। যদি না-ও কমে ভয় নেই। নিয়ম মেনে চললে ওজন ধীরে ধীরে ঠিক কমবে।

আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য সম্পর্কে এ সব খুঁটিনাটি আগে জানতেন?

প্যাকেটজাত ফলের রসে মিশে থাকে সুগার সিরাপ।

চিনি চিনুন: চিনি তো বাদ দিয়েছেন, গ্রিন টি খাওয়ায় চিনির পাঠ আগেই উঠেছে। তার পর মিষ্টি বাদ, দুঝে চিনি বাদ। মোদ্দা কথা, চিনি এড়িয়ে চলছেন। একেবারে ঠিক করছেন। কিন্তু চিনির বদলে সুগার ফ্রি খাচ্ছেন না তোষ কিংবা ফলের বদলে কখনও কি প্যাকেটজাত ফলের রস খাচ্ছেন, বা রেস্তরাঁয় গিয়ে সামান্য কিছু খেলেও ওজনের কথা বেবে লাইম সোডার অর্ডার দিচ্ছেন শেষ পাতে? কৃত্রিম চিনিকে এত বেশি অ্যাসপার্টেম দেওয়া থাকে যে তা চিনির চেয়েও ক্ষতিকর হয়। আর ঠান্ডা পানীয়, লাইম সোডা বা প্যাকেটজাত ফলের রসে মিশে থাকে সুগার সিরাপ। এ সব কিন্তু শরীরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে অনেকটা চিনি। যা ক্ষতি করছে প্রবল। বরং সাধারণ লেবুর রস, জল ও সামান্য নুন দিয়ে বানানো লাইম সোডা খান। ফল খান, ফলের রস নয়। বন্ধ করুন সুগার ফ্রি-ও।

ব্যায়ামের ব্যারাম: একটু ওজন বাড়লেই বাড়িয়ে তুলছেন ব্যায়ামের সময়। অনেকে আবার ওয়েট লিফটিংয়ে চাপিয়ে চলছেন বেশি ওজন। বাবচেন পেশির জোর বাড়িয়ে ফ্যাট ঠেকাবেন। আবার কেউ বাবছেন, ভাত বন্ধ করেছি, হাঁটছি, এতেই চলবে। ভুল করছেন দু’পক্ষই। ব্যায়াম বন্ধ করা বা অনিয়মিত হয়ে পড়াও যেমন কাজের কথা নয়, তেমনই ওজনের পান থেকে সামান্য চুন খসলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে কাটানোর কোনও মানে নেই। বরং ফিটনেস এক্সপার্টের তৈরি করে দেওয়া নিয়ম মেনেই ব্যায়াম করুন। যেটুকু ওজন বেড়েছে, নিয়ম মানলে এমনিই তা ঝরে যাবে।

আরও পড়ুন: ওজন বেড়ে যাচ্ছে? মেদ ঝরাতে পাতে রাখতেই হবে এই সব ফল

প্রোটিনে বেখেয়াল: খাবার পাত অনেক কাটছাঁট করেছেন। ভাত ছেড়েছেন। নুন কমিয়ে চিনি বাদ দিয়েছেন। কিন্তু পাতে প্রোটিন রাকচেন না? উল্টে ফ্যাট আটকাতে কার্বহাইড্রেট ঠাসা ডায়েট করছেন নিজের ইচ্ছা মতো? এর চেয়ে বড় ভুল আর হয় না। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বুঝে শরীরের কতটা ক্যালোরি দরকার তা জেনে তবেই ডায়েট করা উচিত। যা একা একা করা ঠিক নয়। প্রোটিন দিয়ে পেট ভরানোই ওজন কমানোর প্রতম পদক্ষেপ। বরং পাতে কমিয়ে ফেলতে হয় কার্বোহাইড্রেটকে। ফ্যাটও সামান্য প্রয়োজন। তাই প্রোটিন বেশি ও কার্বস-ফ্যাট কম— এমন সুশৃঙ্খল ডায়েটই হওয়া উচিত। তাই একা একা সিদ্ধান্ত না নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ডায়েট মানুন।

আপনার শরীরে জলের পরিমাণ ঠিক কতটা হওয়া উচিত তা চিকিৎসকের থেকে জেনে জল খান পর্যাপ্ত।

জল জট: যত জল কম খাবেন, ততই শরীর জলকে জমিয়ে রাখবে তার দরকারি কাজ সারার জন্য। শরীর অনুযায়ী জলের চাহিদা বাড়ে-কমে। সাধারণত ৪-৪.৫ লিটার জল খাওয়াই নিয়ম। তাই আপনার শরীরে জলের পরিমাণ ঠিক কতটা হওয়া উচিত তা চিকিৎসকের থেকে জেনে জল খান পর্যাপ্ত। জল কমলেই শরীর নুনের সঙ্গে জলকে জমিয়ে শরীরকে ফুলিয়ে দেবে।

(শুরু হয়েছে আমাদের নতুন বিভাগ 'HELLO DOCTOR'। এ বারের বিষয় ‘ব্রণর সমস্যা’। এ বিষয়ে আপনার প্রশ্ন পাঠান query@abpdigital.in এই মেল আইডি তে। উত্তর দেবেন ত্বক বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় ঘোষ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন