ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
পুতুল-পুতুল গড়ন হলেও তার মধ্যে সেই মিষ্টি ভাব অনুপস্থিত। আসলে তার গড়ন কিছুটা ‘কিম্ভূত’। বড় বড় চোখ, খরগোশের মতো কান এবং তীক্ষ্ণ হাসিমুখের ‘লাবুবু’ পুতুলে মন মজেছে মূলত ‘জেন জ়ি’দের। হাজার হাজার টাকা খরচ করেও সেই পুতুল কিনে ফেলছেন অনেকে। বর্তমানে ট্রেন্ডে রয়েছে এই পুতুল। ‘লাবুবু’ সংগ্রহে রাখার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন অধিকাংশ নেটব্যবহারকারী। কিন্তু এই পুতুল যে ভয়ানক তার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল জনপ্রিয় একটি কার্টুন শো। বাড়িতে সেই পুতুল রাখলে নাকি মহাবিপদ।
নেগেটিভ শক্তি বয়ে নিয়ে আসতে পারে ‘লাবুবু’ পুতুল। বহু বছর আগে আমেরিকার ‘দ্য সিম্পসন্স’-এর একটি পর্বে নাকি এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্কও করা হয়েছিল। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমের পাতায় সেই পর্বের কিছু অংশের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
‘ওয়াল্টমোটিভেট্স’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে ইনস্টাগ্রামের পাতায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিয়োয় ‘দ্য সিম্পসন্স’ নামের একটি কার্টুনের কিছু দৃশ্য ধরা পড়েছে। দেখা যাচ্ছে যে, এক ব্যক্তি দৈত্যাকার একটি মূর্তি তৈরি করে বাক্সবন্দি অবস্থায় হোমার সিম্পসন্সের বাড়িতে পাঠায়। বাক্স খুলে মূর্তি পেয়ে বেশ অবাক হয়ে যায় হোমারের স্ত্রী। মূর্তির নীচে লেখা ছিল ‘পাজ়ুজ়ু’। সন্তানকে সেই মূর্তি দেখিয়ে হোমারের হাতে সেই মূর্তি দিয়ে দেয় তার স্ত্রী। মূর্তিটি খুব ভাল করে লক্ষ করে হোমার।
মূর্তির লাল চোখের দিকে তাকিয়ে সম্মোহিত হয়ে যায় সে। তার চোখের মণিও লাল হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে মূর্তিটি নিয়ে হোমার তার সন্তানের দিকে এগিয়ে যায়। তার পর সন্তানকে কোলে নিয়ে দোল খাওয়াতে শুরু করে সে। ঘরের ভিতরেও অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটতে থাকে। মূর্তিটি তার সন্তানের খাটের উপর রেখে আলো নিবিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় হোমার।
অন্ধকার ঘরে মূর্তির চোখ ঠিকরে লাল আলো বেরিয়ে আসতে থাকে। সেখানেই শেষ হয়ে যায় ভিডিয়োটি। পুতুলের নামে ধ্বনিগত সাদৃশ্য লক্ষ করা গেলেও তাদের নাম এবং গড়ন আলাদা। তবুও ‘দ্য সিম্পসন্স’-এ দেখানো পুতুলের সঙ্গে ‘লাবুবু’র তুলনা করছেন নেটাগরিকদের অধিকাংশ। উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালে ‘দ্য এক্সরজ়িস্ট’ নামের হরর ঘরানার ছবিতে যে পিশাচের চরিত্র ছিল তার নাম পাজ়ুজ়ু।
আমেরিকার ‘দ্য সিম্পসন্স’ নামের এই জনপ্রিয় কার্টুনটি শুরু হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। ‘দ্য সিম্পসন্স’-এর নির্মাতা ম্যাট গ্রোইনিং। আমেরিকার টেলিভিশন সংস্থা ‘ফক্স ব্রডকাস্টিং কোম্পানি’র জন্য তৈরি করা হয়েছিল এই কার্টুন। তবে ‘সিম্পসন্স’ পরিবারের শুধুমাত্র হাসির কাণ্ডকারখানা নিয়ে এই কার্টুন তৈরি করা হয়নি।
কয়েক দশকের মধ্যে অন্য এক কারণেও জনপ্রিয়তা অর্জন করতে শুরু করে এই কার্টুন শো। ‘দ্য সিম্পসন্স’ কার্টুনে এমন অনেক ঘটনা দেখানো হয়েছে, যা পরবর্তী কালে সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে। ২৪ বছর আগে একটি পর্বে দেখানো হয়েছিল যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এক দিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হবেন। এই পর্ব মুক্তি পাওয়ার অনেক পরে প্রেসিডেন্ট হন ট্রাম্প।
২০০৬ সালের একটি পর্বে দেখানো হয়েছিল যে, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ খুঁজতে গিয়ে বিপদের মুখে পড়েছে সিম্পসন পরিবার। ২০২৩ সালের জুন মাসে একই রকমের একটি ঘটনা ঘটেছিল। শোয়ের অনুরাগীদের দাবি, করোনা অতিমারি যে আসবে, তা-ও নাকি আগেই দেখানো হয়েছিল এই কার্টুনে।
আমেরিকার ‘টুইন টাওয়ার’ বিপর্যয়ের ভবিষ্যদ্বাণীও নাকি করেছিল এই শো। লস অ্যাঞ্জেলেসে যে ভয়াবহ আগুন লাগবে, তা-ও নাকি দেখানো হয়েছিল কার্টুনে। জনপ্রিয় এই কার্টুন শো নিয়ে অনেক ‘কন্সপিরেসি থিয়োরি’ রয়েছে। এগুলির মধ্যে অন্যতম, সিম্পসনের নির্মাতা ম্যাটের কাছে নাকি এমন এক যন্ত্র ছিল, যা চড়ে তিনি ভবিষ্যৎ দেখে এসেছেন এবং সেই ঘটনাগুলি দিয়েই তৈরি করেছিলেন ‘দ্য সিম্পসন্স’-এর বিভিন্ন পর্ব।