ছবি: এক্স থেকে নেওয়া।
মহানন্দে নাচতে নাচতে বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে করতে এসেছিলেন পাত্র। বিয়ে করে বাড়িও নিয়ে এসেছিলেন কনেকে। কিন্তু নববধূ শ্বশুরবাড়িতে ঢোকার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভেঙে গেল বিয়ে! কিন্তু কেন? অদ্ভুত সেই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের দেউরিয়ায়। ঘটনাটি ইতিমধ্যেই হইচই ফেলেছে উত্তরপ্রদেশ জুড়ে। আলোড়ন পড়েছে সমাজমাধ্যমেও।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৫ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশের ভালুয়ানির বাসিন্দা বিশাল মাধেসিয়া নামে এক যুবক সালেমপুরের বাসিন্দা পূজা নামে এক তরুণীকে বিয়ে করেন। পেশায় ব্যবসায়ী বিশাল ভালুয়ানি এলাকায় বাবার সঙ্গে একটি মনিহারি দোকান চালাতেন। ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বরযাত্রীদের নিয়ে পূজার বাড়ি পৌঁছোন বিশাল। রাতের মধ্যেই বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। পর দিন সকালে কনেবিদায়ের পরে পূজাকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন বিশাল। নতুন ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় নববধূকে। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে ২০ মিনিট কাটাতে না কাটাতেই পূজা ঘোষণা করেন, বিশালের সঙ্গে সংসার করতে চান না তিনি। নববধূর কথা শুনে হতবাক হয়ে যান বিশালের পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়স্বজনেরা। তিনি কেন বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে চাইছেন, সে উত্তর দিতেও রাজি হননি পূজা। পরে অবশ্য তিনি জানান, পাত্রের পরিবারের খারাপ আচরণের জন্যই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পূজার কথা শুনে বিশালের পরিবারের সদস্যেরা প্রথমে ভাবেন তিনি মজা করছেন। কিন্তু ধীরে ধীরে নববধূ বুঝিয়ে দেন তিনি একটুও রসিকতা করছেন না। বিশালের পরিবারের সদস্যেরা তাঁকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করা সত্ত্বেও তিনি রাজি হননি। এর পর বিশালের পরিবার পূজার পরিবারকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। দু’পক্ষ মিটমাট করার চেষ্টা করলেও মন পরিবর্তন হয়নি নববধূর। এর পর বিশাল এবং পূজার পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে গ্রামে পঞ্চায়েত ডাকা হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে আলোচনা হয় বিষয়টি নিয়ে। তবে তার পরেও কোনও সমাধান না হওয়ায় নবদম্পতিকে আলাদা হওয়ার পরামর্শ দেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। উভয় পক্ষকে পুনর্বিবাহের অনুমতি দিয়ে চুক্তিপত্রও লেখা হয়। একই সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়, উভয় পরিবারই যেন বিয়ের সময় একে অপরকে দেওয়া সমস্ত উপহার এবং অর্থ দেয়। এর পর ওই দিনই সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বাবা-মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরে আসেন পূজা।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই সমাজমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার বন্যা বয়ে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে বিতর্কও। নেটাগরিকদের একাংশ বিষয়টি নিয়ে মজার মজার মন্তব্য করলেও অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। এক নেটাগরিক লিখেছেন, ‘‘বিয়ের ইচ্ছা ছিল না আগে বললেই হত। এ ভাবে দুই পরিবারকে হয়রানি করার অর্থ কী?’’