Coronavirus

রেশন নিয়ে অসন্তোষ, ডিলার ঘেরাও, দুর্নীতির নালিশ

বরাদ্দের থেকে কম গম দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার হুগলির আরামবাগের ষষ্ঠীপুরের অসিত চৌধুরী নামে এক রেশন ডিলারকে ঘেরাও করলেন স্থানীয় মানুষজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া-উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২০ ০৫:১৭
Share:

আরামবাগের বাতানলের ষষ্ঠীপুরে রেশন দোকানে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

লকডাউনে বহু মানুষ বেকায়দায় পড়েছেন। বিশেষ করে গরিব মানুষেরা। সে জন্য বুধবার থেকে রেশনে তাঁদের নিখরচায় চাল-গম দেওয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই ব্যবস্থা পুরোপুরি মসৃণ হল না। দুই জেলারই কিছু জায়গায় ডিলারদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল।

Advertisement

বরাদ্দের থেকে কম গম দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার হুগলির আরামবাগের ষষ্ঠীপুরের অসিত চৌধুরী নামে এক রেশন ডিলারকে ঘেরাও করলেন স্থানীয় মানুষজন। গ্রাহকদের অভিযোগ, মাথাপিছু ৩ কেজি করে গম দেওয়ার কথা। কিন্তু ওই ডিলার দু’কেজি করে দিচ্ছিলেন। কম গম নেবেন না বলে গ্রাহকেরা জানিয়ে দেন। বিহিত চেয়ে ডিলারকে ঘেরাও করা হয়। ডিলারের সঙ্গে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার যোগসাজশে খাদ্যসামগ্রী অন্যত্র চলে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে। গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ আসে। ব্লক প্রশাসন এবং খাদ্য দফতরের আধিকারিকরাও পৌঁছন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে, অভিযোগ সঠিক। খাদ্য দফতরের লোকজনকে অসিত জানান, গম সরবরাহ কম থাকায় তিনি মাথাপিছু ২ কেজি করে গম দিচ্ছিলেন। বাকি ১ কেজি করে পরে দেওয়ার কথা বলা হয়। ডিলারের দাবি, ‘‘দুর্নীতি বা গ্রাহকদের ঠকানোর প্রশ্নই নেই।’’

Advertisement

আরামবাগ মহকুমা খাদ্য দফতরের পরিদর্শক হারাধন মুর্মু বলেন, ‘‘বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তদন্ত হবে। ডিলারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেমনই সরবরাহ থাকুক, সরকারি নির্দেশিকা মেনে পুরোটাই গ্রাহককে দিতে হবে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ হতেই থাকবে। রেশন দোকান থেকে তা দেওয়াও চলবে সারা মাস ধরে। কেউ বাদ যাবেন না।’’

দুপুর ১ টা থেকে ফের উপভোক্তাদের চাল-গম দেওয়া শুরু হয়। মহকুমা রেশন ডিলার সংগঠনের সম্পাদক দিলীপকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক। সংগঠন এতে জড়াবে না।’’

উলুবেড়িয়ায় আবার কয়েক জন রেশন ডিলার গ্রাহকদের থেকেই কম দামে চাল-গম কিনে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। লতিবপুরে একটি রেশন দোকানে দেখা গেল, গ্রাহকের থেকে গম ও আটা কিনছেন রেশন ডিলার। বিষয়টি স্বীকার করে সুনীত বসু নামে ওই ডিলারের দাবি, ‘‘গ্রাহকেরা নিজেরাই খাদ্যসামগ্রী বেচে টাকা নিচ্ছেন।’’

এক গ্রাহকের পাল্টা দাবি, ‘‘ডিলার নিজেই বলছেন, খাদ্যসামগ্রী পছন্দ না হলে ১৫ টাকা কেজি দরে গম এবং ১২ টাকা কেজি দরে আটা আমাদের বিক্রি করতে পারেন। তাই অনেকে খাদ্যসামগ্রী না নিয়ে বিনিময়ে নগদ টাকা নিচ্ছেন।’’ আর এক গ্রাহক বলেন, ‘‘সুযোগ বুঝে কালোবাজারি চলছে।’’

বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। ওই দলের নেতা অনুপম মল্লিক বলেন, ‘‘কালোবাজারি নিয়ে আমরা বারে বারে সতর্ক করেছিলাম। প্রশাসনের নজরদারিই নেই। খাদ্যসামগ্রী নিম্ন মানের হলে মানুষ তা নিয়ে কী করবে? তাই হয়তো বেচে দিচ্ছেন। এতে দেখা যাবে, ডিলারদের সঙ্গে প্রশাসনের যোগসাজশ আছে।’’

উলুবেড়িয়া মহকুমা খাদ্য দফতরের আধিকারিক সুজিত কুমার মাণ্ডি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। উলুবেড়িয়ার পুরপ্রধান অভয়কুমার দাস জানিয়েছেন, ডিলার গরিব মানুষকে টাকার লোভ দেখিয়ে খাদ্যসামগ্রী কম দামে কিনে নিলে তার তদন্ত হবে।

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন