Shanghai Cooperation Organisation

চিন যাওয়ার আগে পুতিনের মুখে ‘রাজনীতি, অর্থনীতির কৌশলগত অংশীদারি’ নিবিড় করার বার্তা! নজরে কি এ বার ‘ত্রিশক্তি জোট’?

ভারতের। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, এ বারের এসসিও বৈঠকে ‘রাশিয়া-ভারত-চিন ত্রিশক্তি জোট’ বা ‘রিক ট্রয়িকা’ (রাশিয়া-ইন্ডিয়া-চায়না ট্রয়িকা) দানা বাঁধার সম্ভাবনা রয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৫ ১৩:১৬
Share:

(বাঁ দিক থেকে) নরেন্দ্র মোদী, ভ্লাদিমির পুতিন, শি জিনপিং। —ফাইল চিত্র।

শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষসম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য চিনে রওনা হওয়ার আগে বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের বার্তা দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর ঘোষণা, ‘‘আগামী দিনে মস্কো-বেজিং সম্পর্কের ভিত্তি হবে রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে কৌশলগত বোঝাপড়ার উপর ভিত্তি করে।’’

Advertisement

আর্থিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে রাশিয়া-চিন সহযোগিতার অন্যতম লক্ষ্য যে আন্তর্জাতিক বাজারে রুবল ও ইউয়ানের প্রভাব বৃদ্ধি, সে কথাও স্পষ্ট করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে তাঁর বার্তা, ডলার ও ইউরোর আধিপত্য রোখার জন্য যৌথ প্রচেষ্টায় শামিল হবে দুই দেশ। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘দুই দেশ একে অপরকে এবং সমগ্র বিশ্বকে কী দিতে পারে, সে সম্পর্কে দিশানির্দেশ মিলবে শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর আসন্ন শীর্ষসম্মেলনে।

৩১ অগস্ট-১ সেপ্টেম্বর (রবি ও সোমবার) চিনের তিয়ানজ়িনে এসসিও শীর্ষসম্মেলনে যোগ দেবেন পুতিন। সেখানে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। সরকারি সূত্রের খবর, এসসিও সম্মেলনের পাশাপাশি চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে রবিবার মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। পুতিনের সঙ্গে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পার্শ্ববৈঠক হওয়ার কথা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শুল্কবাণ’ ঘিরে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন টানাপড়েনের আবহে রাশিয়া এবং চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে ভারতের। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, এ বারের এসসিও বৈঠকে ‘রাশিয়া-ভারত-চিন ত্রিশক্তি জোট’ বা ‘রিক ট্রয়িকা’ (রাশিয়া-ইন্ডিয়া-চায়না ট্রয়িকা) দানা বাঁধার সম্ভাবনা রয়েছে। যা ওয়াশিংটনের পক্ষে উদ্বেগের হতে পারে। এই আবহে পুতিনের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন তাঁরা।

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, শনিবার পুতিনের মন্তব্যেও বার্তা ছিল ‘একাধিপত্যের বদলে বহুমেরু বিশ্বের’। যার নিশানা নিঃসন্দেহে আমেরিকা। তিনি বলেছেন, ‘‘তিয়ানজ়িনে যাওয়ার জন্য আমি অত্যন্ত অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। আমরা আশা করি, এই শীর্ষ সম্মেলন সংস্থাটিকে (এসসিও) শক্তিশালী করবে, নতুন গতি দেবে। সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ এবং হুমকির মোকাবিলা করার ক্ষমতা জোরদার করবে এবং আমাদের ইউরেশীয় অঞ্চল জুড়ে সংহতি বৃদ্ধি করবে। এই সব কিছুই একটি ন্যায্য বহুমেরু বিশ্ব ব্যবস্থা গঠনে সহায়তা করবে।’’

ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্ক বসানোর জন্য ট্রাম্প সরকারের প্রধান যুক্তি, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পুতিনকে মদত দিচ্ছে নয়াদিল্লি! ভারত অবশ্য এই অভিযোগ সরাসরি খারিজ দিয়েছে। বস্তুত, রাশিয়া থেকে তেল কেনা দেশগুলির মধ্যে চিনও রয়েছে। কূটনীতিকদের একাংশের মতে, এই পরিস্থিতিতে ত্রিপাক্ষিক সমঝোতার পথ প্রশস্ত হতে পারে এসসিও শীর্ষসম্মেলনে। তিয়ানজ়িনে মধ্য, পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া মিলিয়ে ২০ জনের বেশি রাষ্ট্রনেতা যোগ দিতে চলেছেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তাঁদের মধ্যে মাত্র দু’জনকে ব্যক্তিগত ভাবে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন চিনা কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান তথা প্রেসিডেন্ট জিনপিং। তাঁরা হলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement