(বাঁ দিকে) আসিম মুনির এবং ইমরান খান (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
জেলবন্দি প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাঁর গড়া রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধাকর মঞ্চ, ‘রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটি’-সহ বিভিন্ন স্তরের কমিটিগুলি ভেঙে দিয়েছেন। মঙ্গলবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে ইমরানের সাক্ষাৎ করেছিলেন তাঁর বোন উজ়মা খানুম। তাঁর মাধ্যমের দলের নেতৃত্বকে এই বার্তা পাঠানো হয়েছে বলে পাক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’-এ প্রকাশিত খবরে ইঙ্গিত।
প্রকাশিত ওই খবরে জানানো হয়েছে, ইমরান তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতা তথা বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সলমন আক্রম রাজাকে আহ্বায়ক করে একটি অস্থায়ী কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের বার্তা পাঠিয়েছেন। সলমন গঠিত ওই কমিটি আপাতত কৌশল প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের দিশানির্দেশ স্থির করবে। পাশাপাশি, পরবর্তী সাংগঠনিক স্তরগুলির জন্য নেতাদের মধ্যে অস্থায়ী ভাবে দায়িত্ব বণ্টন করবে। এ ছাড়া পাক পার্লামেন্টে পিটিআই-এর দায়িত্ব পেয়েছেন খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রভাবশালী নেতা শাহিদ আহমেদ খট্টক।
এক্স পোস্টে ইমরান নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে লিখেছেন (মনে করা হচ্ছে, ইমরানের তরফে তাঁর বোন ওই পোস্টটি করেছেন), ‘‘আমি আজ পিটিআইয়ের রাজনৈতিক কমিটি ভেঙে দিচ্ছি। রাজনৈতিক কৌশল প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের জন্য দলের সাধারণ সম্পাদক সলমন আক্রম রাজাকে একটি ছোট কমিটি গঠনের পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।’’ কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি? পিটিআই সূত্রের খবর, দলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত পাক সেনার সর্বাধিনায়ক ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের কাছে ফাঁস হয়ে যাচ্ছিল! সে কারণেই এই পদক্ষেপ। বস্তুত, ইমরান ঘনিষ্ঠ পিটিআই নেতা আসাদ কায়সর শুক্রবার এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কমিটি ভেঙে দেওয়ার অন্যতম কারণ হল, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি ফাঁস হয়ে যাচ্ছিল।’’
মঙ্গলবার জেলবন্দি ইমরানের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে উজ়মাও নিশানা করেছিলেন মুনিরকে। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার ভাই শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ। জেলের মধ্যে তাঁকে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। সে কারণে রেগে রয়েছেন। বলেছেন, তাঁর ওপর মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। তাঁকে সারা দিন কারাকক্ষে আটকে রাখা হয়। অল্প সময়ের জন্য বাইরে যেতে দেওয়া হয়। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয় না।’’ বুধবার সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে আফগানিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের জন্যও ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিশানা করেছিলেন ইমরান। পিটিআই নেতৃত্বের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পরের ধাপে ‘সম্ভাব্য সহযোগী দল’গুলির সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি পৃথক কমিটি গড়ে দিতে পারেন আদিয়ালা জেলে বন্দি ইমরান।