‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জির।’ বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের উদাত্ত কণ্ঠে দেবীর আগমনবার্তা দিকে দিকে রটে যাবে তার পরেই। কলকাতা থেকে জেলায় জেলায় সাজসজ্জা, থিম, আলোকমালা— সব ঘিরেই এখন শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। আর তার মাঝেই নতুন খবর— এ বছর মহালয়া থেকেই দুর্গাপুজোর উদ্বোধন শুরু করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন:
২১ সেপ্টেম্বর, মহালয়ার দিনেই রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পুজো চেতলা অগ্রণীতে দেবীর চক্ষুদান করবেন মমতা। সেখান থেকেই শুরু হবে ভার্চুয়াল উদ্বোধন পর্ব। শুধু ওই দিনই নয়, পরবর্তী মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবারও জেলার একাধিক পুজোর উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। গত কয়েক বছর ধরে এই নিয়ম চলছে। এ বারও মহালয়া থেকে তিন দিন ধরে ভার্চুয়াল উদ্বোধনের সূচি স্থির হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই কোন কোন জেলার কোন কোন পুজো এই উদ্বোধনের তালিকায় থাকছে, তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে।
শহরের বড় বড় পুজোগুলির মণ্ডপ, যেমন সুরুচি সঙ্ঘ, নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ, চেতলা অগ্রণী, বোসপুকুর শীতলা মন্দির, বেহালা নতুন দল কিংবা অজেয় সংহতি— সবই পুলিশ, পুরসভা, পিডব্লিউডি, সিইএসসি ও দমকল দফতরের নজরে। নিরাপত্তা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ, আলাদা প্রবেশ ও প্রস্থান পথ— সব কিছুর উপরেই জোর দেওয়া হয়েছে। পুলিশের তরফে নির্দেশ, বৃষ্টিজনিত সমস্যার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে উদ্যোক্তাদের।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে ইঙ্গিত, মহালয়ার এক দিন আগে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে নতুন নিম্নচাপ। দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে। গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা বলছে, মহালয়ায় পুজোর উদ্বোধনের পর থেকেই ঠাকুর দেখার ভিড় শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন মণ্ডপে। তাই মণ্ডপের চার পাশে জমা জল দ্রুত নামানোর ব্যবস্থা করতেও নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
পুজো কমিটিগুলিকে ভিড় সামলানো, জল জমার সমস্যা মোকাবিলা এবং দর্শনার্থীদের জন্য আলাদা প্রবেশ ও প্রস্থান পথ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে পুলিশের তরফে। গত জুলাই মাসে মুখ্যমন্ত্রী এ বছর ক্লাবগুলিকে পুজো অনুদানের অঙ্ক বাড়িয়েছিলেন। তখন থেকেই তিনি পুজোর প্রস্তুতিতে সহযোগিতা এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছিলেন। এ বার সেই পরামর্শ মেনেই পুলিশ ও অন্যান্য সরকারি সংস্থা একযোগে কাজ করছে। বৃষ্টি মাথায় রেখেও যাতে উৎসবের আনন্দ বিন্দুমাত্র কমে না যায়, তার সব রকম প্রস্তুতি চলছে।
যাবতীয় সতর্কতা, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির উত্তেজনা— সব মিলিয়ে উৎসবের পারদ আগেভাগেই চড়া।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।