দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে ভূরিভোজ মানেই বাঙালির মন জুড়ে বাড়তি উত্তেজনা। কিন্তু বিরিয়ানি, চাইনিজ, বা মাটন কারি— সবই তো ফি বছর হয়! এ বার যদি পুজোর পাতে আসে একটু ভিন্ন স্বাদের চমক? তেহারি— শুনলেই হয়তো মনে পড়ে যায় হলদে রঙা ভাত, হালকা মশলার ঘ্রাণ, আর সঙ্গে মোলায়েম মুরগির টুকরোর জিভে জল আনা স্বাদ। অনেকেই জানেন না যে, এই তেহারির জন্ম কিন্তু ভারতেই।
অওয়াধি হেঁশেলের এই পদের প্রধান উপকরণই হল সোনালি রঙা ভাত। ইদানীং বিরিয়ানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনেকেই তেহারিকে নিজের মতো করে তৈরি করেন। কেউ কেউ এতে মাংস যোগ করেন, যাতে স্বাদ আর সুবাস আরও মন কাড়ে। বিশেষত চিকেন দিয়ে তৈরি তেহারির স্বাদ সত্যি অনন্য। এর প্রধান বিশেষত্ব হল, এতে খুব বেশি মশলা ব্যবহার করা হয় না। সর্ষের তেল, গোটা গরম মশলা আর চিকেনের নিজস্ব স্বাদে রান্না হয় এই পদ। আর তার পরে হালকা, সুগন্ধী, মুখে লেগে থাকার মতো স্বাদে জন্ম নেয় এই তেহারি।
শুরুটা করবেন চাল ভিজিয়ে। গোবিন্দভোগ বা বাসমতি চাল আধ ঘণ্টা মতো ভিজিয়ে রাখতে হবে। তার পরে চিকেন রান্না করার পালা। সর্ষের তেলে তেজপাতা, দারচিনি, লবঙ্গ আর এলাচ দিয়ে হালকা ভেজে নিন। পেঁয়াজ কুচি সোনালি করে ভেজে তাতে আদা-রসুন বাটা দিয়ে কষিয়ে নিন এর পরে। এ বার তাতে চিকেন দিয়ে নুন আর গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে ভেজে নিন। দেখবেন চিকেনের রস ভিতরে আটকে থাকবে। চিকেন একটু সাদাটে হয়ে এলে জায়ফল, জয়িত্রী গুঁড়ো আর টক দই দিয়ে আঁচ কমিয়ে রান্না করুন যতক্ষণ না তার থেকে তেল বেরিয়ে আসে। অল্প গরম জল দিয়ে চিকেন সেদ্ধ হতে দিন।
আরও পড়ুন:
অন্য একটি পাত্রে সর্ষের তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ কুচি, আদা-রসুন বাটা দিয়ে দিন। এ বার ভেজানো চাল দিয়ে ভাল করে ভাজতে হবে, যতক্ষণ না চালগুলি স্বচ্ছ হয়ে ওঠে। এরপর জল-দুধ মিশিয়ে, নুন দিয়ে ফুটিয়ে নিন। জল ফুটতে শুরু করলে আগে থেকে রান্না করা চিকেন ঝোল- সমেত দিয়ে দিন তাতে। এ বার কাঁচা লঙ্কা, গোলাপ জল আর কেওড়া জল দিয়ে পাত্রটা ঢেকে দিন। একেবারে কম আঁচে পনেরো থেকে বিশ মিনিট দমে রাখুন। জল শুকিয়ে গেলে আলতো হাতে ভাত ঝরঝরে করে নিন।
ব্যস, তৈরি হয়ে গেল চিকেন তেহারি। গরম গরম রায়তা বা স্যালাডের সঙ্গে পরিবেশন করুন। এই পুজোয় বাড়ির সবাইকে দিতে এর চেয়ে ভাল পদ আর কিছু হতে পারে নাকি?
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।