বিয়েবাড়ি হোক বা অন্য অনুষ্ঠান বাড়ি, এমনকি বিকেলের জলখাবারে বাঙালির অন্যতম পছন্দের পদ হল ভেটকি ফ্রাই। ব্রেড ক্রাম্বসের কোটিং ভাঙতেই তুলতুলে, সুস্বাদু ভেটকি মাছের পুরের দেখা মেলে, আর তা মুখে দিলেই যেন অমৃত মনে হয়। কিন্তু জানেন কি এই জনপ্রিয় খাবারটির উৎপত্তি কোথায়? আর কেনই বা আবিষ্কার করা হয় এই পদ?
মনে করা হয় বাঙালির সাধের ভেটকি ফ্রাইয়ের উৎপত্তি খোদ কলকাতাতেই। যদিও নির্দিষ্ট ভাবে কোথায় প্রথমবার ভেটকি ফ্রাই বানানো হয়েছিল সেটা জানা যায় না। কিন্তু প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, ইংরেজ আমলে দেশের রন্ধবপ্রণালীর সঙ্গে মিশে যায় পাশ্চাত্যের ছোঁয়াও। এই দেশে বসে ইংরেজরা তাঁদের দেশের ফিশ কাটলেট যা মূলত কড মাছ দিয়েই তৈরি হতো সেটাকে মিস করতেন বলে, স্থানীয় রাঁধুনিরা টাটকা, তাজা মাছ এবং অন্যান্য উপকরণ দিয়ে এই পশ্চিমী পদগুলি নিজেদের মতো করে বানাতেন। ওই যে কথাতেই বলে মনের রাস্তা পেট হয়েই যায়। তাই তাঁরাও ইংরেজ 'বাবু'দের মন জয় করার জন্য বুদ্ধি দিয়ে কখনও ফিশ ফ্রাই, কাটলেট, ইত্যাদি বানাতে শুরু করেন। আর তার মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় ছিল এই ভেটকি ফ্রাই।
ভেটকি ফ্রাই হাল আমলের ক্যাফেতে পাওয়া যায় তো বটেই, কিন্তু কলকাতার বেশ কিছু প্রসিদ্ধ এবং পুরনো দোকানের সুখ্যাতি মানুষের মুখে মুখে ফেরে এই পদের জন্যই, সেই তালিকায় অবশ্যই নাম থাকবে ‘দিলখুশ কেবিন’, ‘মিত্র ক্যাফে’, ‘আপনজন’, ‘শঙ্কর কেবিন’, ‘অপূর্ব ক্যাফে’, ‘চিত্ত’দার দোকান’, ‘ইন্ডিয়ান কফি হাউজ’, ইত্যাদি। জানেন না কোথায় অবস্থিত এই দোকানগুলি? জেনে নিন সেটাও। ‘আপনজন’ দোকানটি দক্ষিণ কলকাতার কালীঘাটের কাছে অবস্থিত। এখানে ছোট, বড় নানা সাইজের ভেটকি ফ্রাই পাওয়া যায়। মিত্র ক্যাফের একাধিক শাখা কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে। শঙ্কর কেবিন অবস্থিত গড়িয়াহাটের কাছে। শোভাবাজার মেট্রোর কাছাকাছি গেলে ঘুরে আসতে পারেন অপূর্ব ক্যাফে থেকে। কলেজ স্ট্রিটেই রয়েছে ভেটকি ফ্রাইয়ের দুই প্রসিদ্ধ জায়গা ইন্ডিয়ান কফি হাউজ এবং দিলখুশ কেবিন। আর চিত্তদার দোকান এসপ্ল্যানেডে অবস্থিত।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।