ঠাকুর দেখা, দুপুরে মাংস-ভাত, আর সন্ধে বা রাতে জমিয়ে চিনা ভোজ– এ না হলে যেন পুজোর মেজাজটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ট্যাংরা এলাকায় কলকাতার চিনে পাড়া বরাবরই ভোজনরসিকদের কাছে এক আলাদা আকর্ষণ। পুজোর দিনে ‘চায়না টাউন’ তাই কয়েক দশক ধরেই জমজমাট পেটপুজোর ঠিকানা।
বড় রেস্তরাঁ থেকে ছোট ক্যান্টিনের মতো দোকান– এ পাড়ায় সর্বত্রই ভিড় লেগে থাকে। টুং নাম, কিম লিং, বিগ বস-এর মতো নামগুলো আজও সস্তায় ভরপেট চিনা ভূরিভোজের জন্য সেরা। এক প্লেট ওয়ানটন বা চাউমিন মিলে যাবে ১৫০–৩০০ টাকায়। আর দু’জন মিলে জমিয়ে খেতে চাইলে ৪০০–৯০০ টাকার বাজেটই যথেষ্ট।
আবার অন্য দিকে গোল্ডেন জয়, বেইজিং-এর মতো পুরনো রেস্তোরাঁর পরিবেশই আলাদা। কাঠের চেয়ার-টেবিল, একটু ভিন্টেজ আবহ, সঙ্গে গরম গরম ‘চিমনি স্যুপ’-- বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার আমেজ হয়ে ওঠে আরও স্মরণীয়। ম্যান্ডারিন গুরমে-ও মাঝে মাঝে আড়ালে পড়ে যায়, অথচ পরিমাণ আর মানের দিক থেকে তা একেবারে নির্ভরযোগ্য।
ইদানীং ইনস্টাগ্রাম বা ট্রিপঅ্যাডভাইজ়ারের রিভিউ ঘেঁটে অনেকেই নতুন নতুন জায়গায় ঢুঁ মারেন। কিন্তু আসল টানটা এখনও রয়ে গেছে সেই পুরনো ট্যাংরার গলিতেই, যেখানে খাওয়ার সঙ্গে জড়িয়ে আছে গল্প, ইতিহাস, আর একরাশ নস্টালজিয়া।
পুজোর ব্যস্ততার ফাঁকে যদি একটু অন্য স্বাদ খুঁজতে ইচ্ছে করে, তবে ট্যাংরার অলিগলিতে হাঁটলেই মেলে বিকেলের দম ফেলার জায়গা। গরম চাউমিন, পোর্কের গন্ধ, ওয়ানটনের ঝোল আর গ্লাস ভরা ঠান্ডা পানীয়—পুজোর মেজাজ জাঁকিয়ে বসতে আর কিছু লাগে বুঝি?
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।