পুজোর দিনগুলি যেন এক মায়াবী ফানুস। শহরের পথেঘাটে, বাতাসে শিউলি-ছাতিমের ঘ্রাণ, মণ্ডপে মণ্ডপে উৎসবের উন্মাদনা। সঙ্গে বাঙালির হেঁশেলে রকমারি রান্নার প্রস্তুতি। এ সময়টাতে নিরামিষ পদের কদর বেড়ে যায় কয়েক গুণ। লুচি, পরোটা বা পোলাওয়ের সঙ্গে যদি থাকে ঘরোয়া স্বাদের এক থালা নিরামিষ পনির, তবে যেন ভোজ সম্পূর্ণ হয়। পেঁয়াজ-রসুনের ঝামেলা না থাকায় এই পদ মনকে এক স্নিগ্ধ, পবিত্র অনুভূতি দেয়, যা পুজোর আবহের সঙ্গে বেশ মানানসই।
রান্নার শুরুটা হয় আলু আর পনির সামান্য ভেজে নেওয়ার মধ্য দিয়ে। সর্ষের তেলে ফোড়ন পড়ে শুকনো লঙ্কা, দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ আর জিরের। তার পরেই কড়াই ভরে ওঠে আদা বাটা, টোম্যাটো আর মশলার ঝাঁঝালো গন্ধে। চাইলে টক দই বা কাজু-চারমগজের পেস্ট মিশিয়ে গ্রেভিকে করা যায় আরও ঘন আর মোলায়েম। আলু মশলার সঙ্গে কষে নেওয়ার পরেই ফুটন্ত ঝোলে নামবে পনিরের টুকরো। শেষে একফোঁটা ঘি আর সামান্য গরম মশলা ছড়িয়ে দিলেই তৈরি ভোগের যোগ্য নিরামিষ পনির ডালনা।
এই পদে বৈচিত্র আনারও নানা উপায় আছে। কারও কারও রান্নায় টোম্যাটোর সঙ্গে বেল পেপার কেটে দেওয়া হয়, আবার কেউ আলু বাদ দিয়ে কেবল পনিরেই তৈরি করেন। পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করলে জমে ওঠে আলাদা স্বাদ।
পুজোর দিনে যখন সারা বাড়ি জুড়ে ধূপ-ধুনো আর শঙ্খধ্বনির আমেজ, তখন ভোগের থালায় এই পনিরের পদ যেন এক অনিবার্য সংযোজন। ভক্তির আবহে সহজ সরল এক ঘরোয়া পদ হয়ে ওঠে উৎসবের খাস তারকা।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।