প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

ঋতুকালীন অবস্থায় নারীদের কি সত্যিই পুজো করতে নেই? কী বলছেন শাস্ত্র বিশেষজ্ঞ?

শাস্ত্রে কি সত্যিই বলা হয়েছে রজঃস্বলা নারীর পুজো করা মানা?

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:৪৫
প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

‘কিশমিশ’ ছবির একটি দৃশ্যে দেখানো হয় রুক্মিণী অঞ্জনাকে ঋতুমতী অবস্থায় পুজোমণ্ডপে আসতে বললে পুরোহিতকে বাধা দেন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, এটা নাকি এক ধরনের 'অশৌচ'। বাস্তব জীবনে এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও একাধিক সময়ে, একাধিক জায়গায় এই একই কথা শোনা যায়। কিন্তু সেটা কি আদৌ ঠিক? শাস্ত্রে কি সত্যিই বলা হয়েছে রজঃস্বলা নারীর পুজো করা মানা?

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, ঋতুস্রাব চলাকালীন নারীদের শরীরে আরও বেশি মাত্রায় শক্তি প্রবাহিত হয়। সেই শক্তি নাকি স্বয়ং ঈশ্বরও সহ্য করতে পারেন না। বলা হয়, এই সময়ে যদি কেউ তুলসী গাছে জল ঢালেন, তা হলে সেই গাছ শুকিয়ে যায়। তাই নিষেধ করা হয়। ঋতুমতী হওয়ার ৫ দিনের মাথায় শ্যাম্পু করে পুজো করা যেতে পারে বলেই বিশ্বাস।

কিন্তু যদি উপবাস রেখে পুজো করার সময়ে মাসিক শুরু হয়ে যায় তখন? বলা হয়, উপোস করলেও সে ক্ষেত্রে পুজো না দেওয়াই শ্রেয়। পুজো না করেও যদি উপবাস রাখা হয়, তা হলেও ফল পাওয়া যাবে।

কিন্তু এই বিষয়ে কি আদৌ শাস্ত্রে কোনও উল্লেখ রয়েছে? এই বিষয়ে খোঁজ নিতে শাস্ত্রজ্ঞ, লেখক অজয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার ডট কম। তিনি সাফ বলেন, ''উপনিষদে কোথাও বৈষম্য নেই নারী-পুরুষের। কোথাও এ সবকে গ্রাহ্য করা হয়নি। শাস্ত্রে এ সব কিচ্ছু নেই। শোষণ, নিপীড়ন অনেক পরে এসেছে।'' প্রায় একই সুর শোনা গেল শিক্ষিকা রোহিনী ধর্মপালের মুখে। তিনি এই বিষয়ে বলেন, “পুরো মহাভারতের কেন্দ্রে যে ঘটনা সেটা কিন্তু এই মাসিক। দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের সময়টা। তা হলে ভেবে দেখুন ওই মহাকাব্যে ঋতুস্রাব ব্যাপারটা নিয়ে কিন্তু কোনও রাখঢাক গুড়গুড় নেই কিন্তু। তারও আগে যদি চলে যাই, গার্গী, লোপামুদ্রা, অপলা- এঁদের কথা যদি বলি, এঁরাও তো যজ্ঞ করতেন নিয়মিত। কোথাও তো তাঁদের মাসিক হয়েছে বলে যজ্ঞ করতে পারবেন না বলে শোনা যায়নি। অন্তত বেদ-উপনিষদে এ সব কিছু নেই। ওই যখন ব্রাহ্মণরা ব্রাহ্মণ্য দেখানো শুরু করল, তখন ওই স্মৃতিশাস্ত্রগুলি এসে নিয়ম-কানুনগুলি তৈরি করল। এ বার দেখুন, সেখানেও বলছে তিন দিন একজন অশৌচ থাকে। এ বার আমরা সবাই জানি কোনও মেয়ের মাসিক কিন্তু তিন দিনে শেষ হয়ে যায় না। তা হলে তিন দিন কেন? কারণ ওই তিন দিন অতিরিক্ত রক্ত শরীর থেকে বের হয়ে যায়। তাই ওই তিন দিন একটা মেয়ের জন্য বিশ্রামের সময়। পুজো করা যাবে না মানে কিন্তু এটা নয় যে সে রান্না করবে বা অন্য কিছু করবে। সবই বন্ধ থাকবে। আর আমরা এখন সুবিধা মতো বলছি ঋতুমতী নারীরা পুজো করতে পারেন না। কিন্তু এই সময় অফিস কি ছুটি দেবে আপনাকে? নাকি তিন দিনে আপনার মাসিক শেষ হয়ে যাবে? তা হলে শুধু পুজো বন্ধ কেন? অশুচি হচ্ছে যে সেটা কে দেখছে, কে বলছে? আমরা আসলে এগুলি নিজেদের বুদ্ধি দিয়ে আলোচনা করি না। ভাবি না।”

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

Puja Rituals Menstruation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy