Advertisement
Durga Puja Vacation

পুজোর সফরে সোজা যোধপুর, কেন নীল রাজস্থানের এই শহর?

শহরের তকমা 'ব্লু সিটি'। কিন্তু কী ভাবে যোধপুরের সঙ্গে জুড়ে গেল নীল রং? ইতিহাসের পাতায় মিলল পাঁচটি কারণের হদিস।

অনিরুদ্ধ সরকার
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:১৩
Share: Save:
০১ ১০
থর মরুভূমির কোলে রাজস্থানের এক ঐতিহাসিক শহর।  যোধপুর এক আশ্চর্য রূপকথার জগৎও বটে। রাজপুত রাজা রাও জোধা বিস্তীর্ণ মরু প্রান্তরের মাঝে স্থাপন করেছিলেন এই নগর। তাঁর নামেই নাম হয় ' যোধপুর'।

থর মরুভূমির কোলে রাজস্থানের এক ঐতিহাসিক শহর। যোধপুর এক আশ্চর্য রূপকথার জগৎও বটে। রাজপুত রাজা রাও জোধা বিস্তীর্ণ মরু প্রান্তরের মাঝে স্থাপন করেছিলেন এই নগর। তাঁর নামেই নাম হয় ' যোধপুর'।

০২ ১০
মরুভূমির গ্রাস থেকে শহরকে রক্ষার জন্য দীর্ঘ প্রাচীর নির্মাণের আদেশ দেন রাজা। পাশাপাশি শত্রুর মোকাবিলার জন্য ১২৫ মিটার উঁচু এক টিলার উপর ৫ কিমি লম্বা, বিশালাকায়, দুর্ভেদ্য এক দুর্গ গড়ে দেন তিনি। নাম তার মেহেরনগড়।

মরুভূমির গ্রাস থেকে শহরকে রক্ষার জন্য দীর্ঘ প্রাচীর নির্মাণের আদেশ দেন রাজা। পাশাপাশি শত্রুর মোকাবিলার জন্য ১২৫ মিটার উঁচু এক টিলার উপর ৫ কিমি লম্বা, বিশালাকায়, দুর্ভেদ্য এক দুর্গ গড়ে দেন তিনি। নাম তার মেহেরনগড়।

০৩ ১০
এর মধ্যেই গড়ে উঠেছিল এক সময়ের প্রাচীন  যোধপুর নগর। এর পর দুর্গের বাইরে সমতলে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে আধুনিক জোধপুর শহর।

এর মধ্যেই গড়ে উঠেছিল এক সময়ের প্রাচীন যোধপুর নগর। এর পর দুর্গের বাইরে সমতলে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে আধুনিক জোধপুর শহর।

০৪ ১০
এই মেহরনগড় দুর্গের উপরের ছাদ থেকে পুরো  যোধপুর শহর দেখতে পাওয়া যায়। ছবির মতো সেই শহরের দিকে তাকালে চোখে পড়ে শুধু নীল আর নীল। সেই রঙের কারণেই  যোধপুরের নাম - 'নীল শহর' বা 'ব্লু সিটি'। কিন্তু কী ভাবে এই শহরের সঙ্গে জুড়ল নীল রং? এ বার পুজোয় সেই ইতিহাস খুঁজে দেখবেন নাকি?

এই মেহরনগড় দুর্গের উপরের ছাদ থেকে পুরো যোধপুর শহর দেখতে পাওয়া যায়। ছবির মতো সেই শহরের দিকে তাকালে চোখে পড়ে শুধু নীল আর নীল। সেই রঙের কারণেই যোধপুরের নাম - 'নীল শহর' বা 'ব্লু সিটি'। কিন্তু কী ভাবে এই শহরের সঙ্গে জুড়ল নীল রং? এ বার পুজোয় সেই ইতিহাস খুঁজে দেখবেন নাকি?

০৫ ১০
প্রথমত, রাজ্য প্রতিষ্ঠার সময় জোধপুরের রাজপুত রাজারা ছিলেন শিবভক্ত। শিব 'নীলকণ্ঠ', সে কারণে রাজার নির্দেশে বাসিন্দারা তাঁদের বাড়িগুলিতে নীল রং করেছিলেন।

প্রথমত, রাজ্য প্রতিষ্ঠার সময় জোধপুরের রাজপুত রাজারা ছিলেন শিবভক্ত। শিব 'নীলকণ্ঠ', সে কারণে রাজার নির্দেশে বাসিন্দারা তাঁদের বাড়িগুলিতে নীল রং করেছিলেন।

০৬ ১০
দ্বিতীয়ত, রাজপুত রাজাদের কেউ কেউ কৃষ্ণভক্তও ছিলেন। শ্রীকৃষ্ণের গায়ের রং নীল। তাই রাজার নির্দেশে এক সময়ে শহরের সমস্ত বাড়ির রং হয়েছিল নীল।

দ্বিতীয়ত, রাজপুত রাজাদের কেউ কেউ কৃষ্ণভক্তও ছিলেন। শ্রীকৃষ্ণের গায়ের রং নীল। তাই রাজার নির্দেশে এক সময়ে শহরের সমস্ত বাড়ির রং হয়েছিল নীল।

০৭ ১০
তৃতীয়ত, এক কালে বর্ণভেদ প্রথার কারণে ব্রাহ্মণরা নিজেদের বাড়িকে আলাদা করে চেনাতে নীল রং ব্যবহার করতেন। পরে বর্ণভেদ প্রথা উঠে গেলে সকলেই নিজেদের বাড়িতে নীল রং করতে শুরু করে।

তৃতীয়ত, এক কালে বর্ণভেদ প্রথার কারণে ব্রাহ্মণরা নিজেদের বাড়িকে আলাদা করে চেনাতে নীল রং ব্যবহার করতেন। পরে বর্ণভেদ প্রথা উঠে গেলে সকলেই নিজেদের বাড়িতে নীল রং করতে শুরু করে।

০৮ ১০
এই তিনটি ঐতিহাসিক কারণ ছাড়াও দু'টি বিজ্ঞানসম্মত কারণ রয়েছে নীল রং ব্যবহারের নেপথ্যে। যেগুলি হল- এই এলাকায় প্রচুর উইপোকার উৎপাত ছিল। জোধপুরবাসী উইপোকা প্রতিরোধক হিসেবে কপার সালফেট এবং চুনাপাথরের একটি মিশ্রণ ব্যবহার করতেন। যার রং ছিল নীল। উইপোকার হাত থেকে বাড়িকে বাঁচাতে তাঁরা এই নীল রঙের মিশ্রণেই বাড়ির দেওয়ালগুলিকে ঢেকে দিয়েছিলেন।

এই তিনটি ঐতিহাসিক কারণ ছাড়াও দু'টি বিজ্ঞানসম্মত কারণ রয়েছে নীল রং ব্যবহারের নেপথ্যে। যেগুলি হল- এই এলাকায় প্রচুর উইপোকার উৎপাত ছিল। জোধপুরবাসী উইপোকা প্রতিরোধক হিসেবে কপার সালফেট এবং চুনাপাথরের একটি মিশ্রণ ব্যবহার করতেন। যার রং ছিল নীল। উইপোকার হাত থেকে বাড়িকে বাঁচাতে তাঁরা এই নীল রঙের মিশ্রণেই বাড়ির দেওয়ালগুলিকে ঢেকে দিয়েছিলেন।

০৯ ১০
এ ছাড়া, মনে করা হয়, রাজস্থানের এই মরু-শহরের তাপমাত্রা গ্রীষ্মকালে প্রায় পঞ্চাশ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলত। সূর্যের প্রতিফলক হিসেবে নীল রং বাড়ি ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। সূর্যের প্রখর তাপ থেকে বাড়িগুলিকে রক্ষা করতে যোধপুরবাসী সেকারণে নিজেদের সেগুলিতে নীল রং করেছিলেন। সেই ধারা আজও বজায় রয়েছে।

এ ছাড়া, মনে করা হয়, রাজস্থানের এই মরু-শহরের তাপমাত্রা গ্রীষ্মকালে প্রায় পঞ্চাশ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলত। সূর্যের প্রতিফলক হিসেবে নীল রং বাড়ি ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। সূর্যের প্রখর তাপ থেকে বাড়িগুলিকে রক্ষা করতে যোধপুরবাসী সেকারণে নিজেদের সেগুলিতে নীল রং করেছিলেন। সেই ধারা আজও বজায় রয়েছে।

১০ ১০
কী ভাবে যাবেন: হাওড়া থেকে  যোধপুর সরাসরি ট্রেন রয়েছে। দিল্লি হয়েও যাওয়া যায়। দিল্লি থেকে  যোধপুর সড়কপথে ৬৫০ কিমি। কাছের বিমানবন্দর  যোধপুর। এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।

কী ভাবে যাবেন: হাওড়া থেকে যোধপুর সরাসরি ট্রেন রয়েছে। দিল্লি হয়েও যাওয়া যায়। দিল্লি থেকে যোধপুর সড়কপথে ৬৫০ কিমি। কাছের বিমানবন্দর যোধপুর। এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE