Advertisement
১১ মে ২০২৪

ভাষা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জাতি ও রাষ্ট্র গঠন

একমাত্র বাঙালিই নিজস্ব রাষ্ট্রের অধিকারী। বাঙালির মাতৃভাষা বাংলা, তার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপোষহীন নেতৃত্বে এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে। লিখছেন শামসুজ্জামান খানএকমাত্র বাঙালিই নিজস্ব রাষ্ট্রের অধিকারী। বাঙালির মাতৃভাষা বাংলা, তার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপোষহীন নেতৃত্বে এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে। লিখছেন শামসুজ্জামান খান

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

বাঙালির চিন্তাচেতনার ধারা বিগত কয়েকশো বছরে বিশেষ কোনও ছকে রূপান্তরিত হয়েছে— এমনটি বলা যায় না। স্থানীয় নাথ-যোগী, তান্ত্রিক, বাউল-বৈষ্ণব, সাধকদের গুহ্য সাধনপন্থা, চৈতন্য দেবের গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্ম-সংস্কৃতি-দর্শন, ইসলামের সুফিবাদ এবং মূল ধর্মসমূহের ভিতর থেকে চয়ন করা ইহজাগতিক বোধ ও মানব শ্রেষ্ঠত্বের বাণীই বিশাল গ্রামীণ জনপদে গ্রহণ-বর্জন-সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে একটি জীবনধারা হিসেবে বিকশিত হয়েছে। মধ্যযুগ পর্যন্ত রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব বলয়ের বাইরে সাধারণ মানুষ তাদের ইহজাগতিক স্বার্থবুদ্ধি ও সমাজ গঠনের তাগিদে এই ধারাটি বেছে নেয়। এবং এই ধারার প্রকাশ মাধ্যমে হয়ে ওঠে আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। সমাজ ও ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে ভাষার এই ওতপ্রোত সম্পর্কের মধ্যেই তৈরি হয় বাঙালির স্বকীয় জীবনঘনিষ্ঠ ও গভীর ভাবে মানবিক এক প্রাণবন্ত সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি বাঙালি হিন্দুদের নয়, বৌদ্ধদের নয়, খ্রিস্টান বা মুসলমানদের নয়— এই সংস্কৃতি সকল বাঙালির সমন্বিত সংস্কৃতি। একাদশ শতাব্দীর সেন রাজাদের শাসন এবং দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতাব্দীর মুসলিম অধিকারের তোলপাড় কিছু পরিমাণে স্বকীয় প্রবহমানতা হারিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু চতুর্দশ শতাব্দীতে বাংলার সুলতানদের আনুকূল্যে আবার তা স্বাভাবিক ধারায় পুনর্বিন্যস্ত হয় এবং এ শতাব্দীতেই এক দিকে হিন্দু-বাঙালির মঙ্গলকাব্যের ধারা এবং মুসলিম বাঙালি সৈয়দ আলাওল, সৈয়দ সুলতান-সহ শতাধিক কবির আবির্ভাবের ফলে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য এক গুরুত্বপূর্ণ স্তরে উন্নীত হয়। ইতিহাসের দু’-একটি ইঙ্গিত থেকে মনে হয়, এই সময়ে বাংলা এবং বাঙালিত্ব এক গর্বের বিষয়ে পরিণত হয়েছিল। তা না হলে শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ্ কেন নিজেকে ‘শাহে বাঙালিয়ানা’ বলে গর্ববোধ করবেন?


বাংলাদেশের ডাকটিকিট: ভাষা শহিদদের স্মরণে

কিন্তু ষোড়শ শতাব্দীতেই বাংলা ভাষা এবং বাঙালির সমন্বিত জাতিগঠন প্রয়াস আবার রাষ্ট্রীয় বাধার মুখে পড়ে। এর আগে প্রায় দু’শ বছর বাংলা অঞ্চল ছিল কেন্দ্রের অধিকারের বাইরে স্বাধীন অস্তিত্বে। কিন্তু সম্রাট আকবরের সময় ‘সুবে বাঙলা’ নামে বাংলা অঞ্চল একীভূত হয়ে কেন্দ্রের অধীনে আসে। আকবরের আমলের ভূমিনীতি হল কর্নওয়ালিসের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত। এর ফলে যে অভিজাত শ্রেণি গড়ে ওঠে তার মুসলিম অংশ উত্তর ভারতের সংস্কৃতির প্রভাবে বঙ্গীয় মুসলমানদের আশরাফ আতরাফ এই দুই শ্রেণিতে বিভক্ত করে ফেলে। এবং বলা হয়, আশরাফ বাঙালি মুসলমানদের মাতৃভাষা উর্দু। মূলত সেই থেকে বাঙালি মুসলমানের ভাষা আন্দোলনের সূচনা। কবি সৈয়দ সুলতান ‘ফাতেহা ইয়াজদাহমে’র মতো একটি ইসলামি বিষয়ে বাংলায় কবিতা লেখায় তাঁকে ‘মুনাফেক’ আখ্যা দেওয়া হয়। কবি এর উত্তরে একটি মৌলিক সত্য উচ্চারণ করে লেখেন, ‘যারে যেই ভাষে প্রভু করিলেন সৃজন/ সেই ভাষ হয় তার অমূল্য রতন’। মাতৃভাষার অধিকার নিয়ে এই সত্য উচ্চারণের পরও উত্তর ভারতের শাসকদের সুবিধাভোগীরা নিবৃত হয়নি বরং আরও বাংলা ভাষা-বিরোধিতায় সোচ্চার হয়েছিলেন। সম্ভবত সে জন্যই একশো বছর পরের কবি আবদুল হাকিম লেখেন, ‘যে জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী/ সে জন কাহার জন্ম নির্ণয় ন যানি’। বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা নিয়ে এই বিতর্ক ভারতবর্ষ ইংরেজ অধিকারে আসার ফলে সাময়িকভাবে থেমে যায়। কিন্তু পরবর্তীকালেও মুসলমানের এই মাতৃভাষা বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরে চলে। বাঙালি মুসলমানের নবাব, নাইট, জমিদার অংশের মধ্যে দু’-একটি ব্যতিক্রম বাদে অন্যরা নিজেদের আশরাফ (অভিজাত) বলে মনে করে এবং উর্দুই তাদের মাতৃভাষা বলে ঘোষণা করে। কিন্তু শিক্ষাদীক্ষায় উন্নত একটি অংশ বাংলাই যে বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা এ সম্পর্কে তাঁদের সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেন। কোনও কোনও বাঙালি মুসলমান উর্দু-ফারসি-হিন্দুস্থানী ভাষায় অভিজ্ঞ হলেও বাংলাকে নিজের ভাষা বলে গর্ববোধ করেন। কেউ কেউ সমন্বয়বাদী ধারার অনুসারী হিসেবে মুসলিম সুলতানদের আমলের ঐতিহ্য অনুসরণ করে রামায়ণ, মহাভারতেরও অনুবাদে হাত দে‌ন। এ বিষয়ে আমরা তিনটি উদাহরণ পেশ করছি।


বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান

ক) ১৮৮৩ সালে কলকাতা মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার সংস্কৃত ও বাংলা ভাষার অধ্যাপক মৌলবী (পণ্ডিত) রেয়াজ-অল-দিন আহ্‌মদ মাশহাদী তাঁর ‘বিবাদ’ প্রবন্ধে লেখেন, ‘বেশি উদারতা নেই, বিশ্ব প্রেমিকতা বা অখণ্ড পৃথিবীর কথা দূরে থাকুক, জাতি, জাতীয়-ভাব, জাতীয়-স্বার্থ প্রভৃতির স্মরণ-মননে ভারতবর্ষ বলিয়া একটা বিষয় স্থূলরূপে প্রতিভাত হইলেও আমরা বাংলাদেশের কথা বিশদরূপে বুঝি। বাঙালি বলিয়া নিজের পরিচয় দিয়ে সন্তুষ্ট হই। সহস্র বৎসর যে দেশে বাস করিয়া আসিতেছি, যাহার শীত গ্রীষ্ম সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য, প্রাচুর্য-দুর্ভিক্ষ, সুখ-সম্পদ, হর্ষ-বিষাদ সমভাবে ভোগ করিয়া আসিতেছি। সে আমার স্বদেশ নহে, তাহার বাহিরে আবার আমার এক নিজের দেশ আছে, এ কথা কখনও কেহ মনে করিতে পারে না। এই জন্য আমি মুসলমান হইলেও বাংলাদেশ, বাংলাভাষা ও বাঙালি জাতি সম্বন্ধে কোনও কথা উপস্থিত হইলে তাহাতে আমার মতামত ব্যক্ত করিবার সম্পূর্ণ ষোল আনা অধিকার আছে। তবে আমার স্বজাতীয়ের মধ্যে অনেকে আমাকে এক ঘরে বা জাতিচ্যুত মনে করিয়া নিশ্চিন্ত আছেন। আমিও তাঁহাদিগকে জাতিচ্যুত ও এক ঘরে মনে করিয়া সন্তুষ্ট আছি। (১৩০৭ বঙ্গাব্দ)

খ) মওলানা আক্রম খাঁ এ প্রসঙ্গে শ্লেষ মিশ্রিত ভাষায় লেখেন, ‘‘দুনিয়ায় অনেক রকম অদ্ভুত প্রশ্ন আছে। বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা কী? উর্দু না বাংলা? এই প্রশ্নটা তাহার মধ্যে সর্বাপেক্ষা অদ্ভুত। নারিকেল গাছে নারিকেল ফলিবে, না বেল? যদি কেহ এই প্রশ্ন লইয়া আমাদিগের সহিত তর্ক করিতে আইসেন, তাহা হইলে আমরা তাহার সঙ্গে তর্কে প্রবৃত্ত হইবার পরিবর্তে বন্ধুদিগের নিকট হইতে টাকা সংগ্রহ করিয়া তাহাকে বহরমপুরের টিকিট কিনিয়া দিতে চেষ্টা করিব। সঙ্গে মুসলিম ইতিহাসের সূচনা হইতে আজ পর্যন্ত বাংলা ভাষাই তাহাদের হইয়া আসিতেছে এবং ভবিষ্যতেও মাতৃভাষারূপে ব্যবহৃত হইবে।’’ (তৃতীয় বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সম্মেলনে সভাপতির ভাষণের অংশ, ১৩২৫ সালের বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকার বৈশাখ সংখ্যা থেকে উদ্ধৃত)

গ) ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ বাঙালি মুসলমান ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ভুলিয়া যাও কেন, তোমরা বাঙালি? তোমাদের ধমনীতে আর্য, মোঙ্গলীয়, দ্রাবিড়ী, আরবী, পারসী, আফগানি ও তুর্কি রক্ত মিশ্রিত আছে।’’ (ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ স্মারকগ্রন্থ, ১৮৯৫, গ্রন্থের ভূমিকা পৃ ১৬)

অন্য দিকে, ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের মুন্সি আদালুত খান ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশ করেন Translation of the second book of the Ramayan from the Hindi of Tulsi Das into Literal English with Copious Explanatory Notes and Allusions. উল্লেখ্য যে, তৎকালীন ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জ মহকুমার দাদরোখী গ্রামের এই বহু ভাষাবিদ-পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বেতাল পঞ্চবিংশতিরও অনুবাদ করেন।

বর্তমান বাংলাদেশের সকল মানুষই গ্রামীণ কৃষিভিত্তিক জীবনধারা থেকেই উঠে এসেছেন। তাই উপর থেকে আরোপিত উর্দু ভাষা তাদের উপর চাপানো সম্ভব হয়নি। ষোড়শ শতক থেকে উনিশ শতকের প্রথম দশক পর্যন্ত তথাকথিত আশরাফ মুসলমানেরা উর্দু চাপানোর প্রচেষ্টায় যেমন বিফল হয়েছেন, তেমনই পাকিস্তান রাষ্ট্রের স্রষ্টা মহম্মদ আলি জিন্না ১৯৪৮ সালের ২২ মার্চ ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে ‘Urdu and only Urdu shall be the state language of Pakistan’ বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ‘No, No’ ধ্বনির মধ্যে যেমন স্তব্ধ হয়ে যান, পর দিন কার্জন হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে একই বাক্য উচ্চারণ করে একইরকম ভাবে প্রচণ্ড ‘No, No’র মুখে থেমে যান। এর পরেও পাকিস্তানি এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানি অনুচরেরা পূর্ব বাংলার বাঙালির উপর উর্দু ভাষা চাপানোর নানা কূটকৌশল চালাতে থাকে। এর উত্তরে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিবাদে যেমন বাঙালি সোচ্চার হয়ে ওঠে তেমনই ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ঐতিহাসিক বোধের গভীরতায় উচ্চারণ করেন, ‘We educationist should, however, emphatically, protest and if necessary should revolt against the fresh imposition of any language other than Bengali as the medium of instruction for East Bengalee students. This imposition will be tantamount to the genocide of East Bengalees (1953)’. শহীদুল্লাহ্ সাহেবের এই দিব্যদৃষ্টির প্রতিফলন ১৯৭১-এ পূর্ব বাংলার ইতিহাসের একটি অংশ।

পূর্ব বাংলার বাঙালির রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন (১১ মার্চ ১৯৪৮, ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২), বাঙালির ভাষাভিত্তিক, জাতিসত্তা গঠন এবং রাজনৈতিক অধিকারের সংগ্রাম ও তজ্জনিত পাকিস্তানি সেনা শাসকদের ১৯৭১-এ নজিরবিহীন গণহত্যার (genocide) মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তাই খুব মৌলিক চালিকাশক্তি হিসেবে চিহ্নিত। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে উন্নীত করে ৩০ লক্ষ বাঙালির আত্মবলিদানের মাধ্যমে বাঙালির হাজার বছরের সমন্বয়বাদী ও ধর্মনিরপেক্ষ জীবনধারাকে রাষ্ট্রের মৌলনীতির অংশ করে ধর্ম নিরপেক্ষ এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনব্যাপী সাধনা তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ এবং ‘জাতির পিতা’ অভিধায় অভিষিক্ত করেছে। এই রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠার ফলেই বাঙালি একটি এথনিক কমিউনিটি থেকে রাজনৈতিক অর্থে নেশনে পরিণত হয়েছে। উপমহাদেশে বহু বড় বড় এথনিক কমিউনিটি আছে, যেমন— পঞ্জাবি, সিন্ধি, পশতু, গুজরাতি, তামিল, তেলুগু, মরাঠি, বাঙালি ইত্যাদি। কিন্তু তারা কেউ রাষ্ট্রনৈতিক অর্থে নেশন বা জাতি এবং নিজস্ব রাষ্ট্রের অধিকারী নয়। একমাত্র বাঙালিই নিজস্ব রাষ্ট্র এবং নেশনের অধিকারী। বাঙালির মাতৃভাষা বাংলা, তার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপোষহীন নেতৃত্বে এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে। বাঙালির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এই আন্দোলনকে বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসঙ্ঘ ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

(শামসুজ্জামান খান ঢাকা বাংলা অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE