Advertisement
E-Paper

দ্রুত বাড়তে থাকা গ্রিন টি-র বাজার ধরতে ঝাঁপাচ্ছে দেশি সংস্থাও

দেশের বাজারে বিক্রির নিরিখে ব্ল্যাক-টি (প্রথাগত চা) যদি দৈত্য হয়, তা হলে তার পাশে গ্রিন-টি (সবুজ চা) নেহাতই বামন। কিন্তু নিখাদ বিক্রি বৃদ্ধির মাপকাঠিতে সেই বামনও এখন কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে প্রথাগত (সিটিসি ও অর্থোডক্স) চায়ের দিকে। সৌজন্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা। আর তাই এই নতুন বাজারের গন্ধে সেখানে পা রাখতে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশি সংস্থা। এত দিন এ দেশে গ্রিন টি-র প্রধান গন্তব্য ছিল অমৃতসর হয়ে জম্মু ও কাশ্মীর।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৯
Share
Save

দেশের বাজারে বিক্রির নিরিখে ব্ল্যাক-টি (প্রথাগত চা) যদি দৈত্য হয়, তা হলে তার পাশে গ্রিন-টি (সবুজ চা) নেহাতই বামন। কিন্তু নিখাদ বিক্রি বৃদ্ধির মাপকাঠিতে সেই বামনও এখন কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে প্রথাগত (সিটিসি ও অর্থোডক্স) চায়ের দিকে। সৌজন্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা। আর তাই এই নতুন বাজারের গন্ধে সেখানে পা রাখতে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশি সংস্থা। এত দিন এ দেশে গ্রিন টি-র প্রধান গন্তব্য ছিল অমৃতসর হয়ে জম্মু ও কাশ্মীর। আর বিক্রির ক্ষেত্রে প্রায় একচেটিয়া আধিপত্য ছিল হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, টাটা গ্লোবাল বেভারেজেসের মতো বহুজাতিকগুলির। কিন্তু বাজার দ্রুত বাড়তে শুরু করায় এখন সেই তালিকায় নাম লেখাচ্ছে তুলনায় ছোট অনেক সংস্থাও। যেমন, কলকাতারই ইওর্স ফুড।

চা শিল্পের দাবি, ভারতে প্রথাগত চায়ের বাজার যেখানে বছরে ৩% হারে বাড়ছে, সেখানে গ্রিন টি-র ক্ষেত্রে তা বাড়ছে ৭% হারে। হয়তো বাজারের মাপ আগে থেকেই অনেক বেশি হওয়ায় বৃদ্ধির মোট পরিমাণ প্রথাগত চায়ের বেশি। কিন্তু গ্রিন টি-র চাহিদার পালে এই হাওয়া তা তৈরিতে উৎসাহিত করছে অনেক দেশি সংস্থাকেই। সংশ্লিষ্ট শিল্পের আশা, বছর তিনেকের মধ্যে এই চায়ের ব্যবসা দ্বিগুণ (৩০০ কোটি টাকা থেকে ৬০০ কোটি) হবে এ দেশে।

কিন্তু গ্রিন টি-র চাহিদায় এমন বাড়বাড়ন্ত কেন?

চা শিল্পমহলের দাবি, এর মূল কারণ স্বাস্থ্য সচেতনতা। সর্বক্ষণ পাহাড়প্রমাণ টেনশন ঘাড়ে দ্রুত ছুটতে বাধ্য হওয়া আজকের প্রজন্ম হাজারো রোগজ্বালা এড়াতে অনেক সময়ই খাবার সম্পর্কে বাড়তি সাবধানী। যে কারণে তাঁদের অনেকের প্রাতরাশের টেবিলে এখন মাখনকে সরিয়ে জায়গা করে নেয় লো-ফ্যাট মার্জারিন। চিনির কৌটোর বদলে রান্নাঘরের তাকে জায়গা পায় ‘সুগার ফ্রি’। চা শিল্পের দাবি, এই স্বাস্থ্য সচেতনতার কারণেই দ্রুত কদর বাড়ছে গ্রিন টি-রও।

এমনিতে প্রথাগত চা আর গ্রিন টি-র মধ্যে ফারাক বিশেষ নেই। কিন্তু কাঁচা পাতা থেকে পানযোগ্য চা তৈরির পদ্ধতির ফারাক থাকে বলেই রকমফের রয়েছে তাদের মধ্যে। প্রথাগত চায়ের ক্ষেত্রে কাঁচা পাতা শুকানোর সময় যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, তাতে রাসায়নিক বিক্রিয়ার শেষে পাতায় পলিফেনল ও উৎসেচক থাকে। অন্য দিকে, গ্রিন টি-র বেলায় গরম হাওয়া দিয়ে পাতা শুকানোর সময় পলিফেনল থেকে যায় ঠিকই, কিন্তু নষ্ট করে ফেলা হয় পাতার উৎসেচককে। অনেকের মতে, গ্রিন টি-র এই পলিফেনল মেদ ঝরানোর ক্ষেত্রে প্রথাগত চায়ের তুলনায় অনেক

বেশি উপযোগী।

তাই আজকের স্বাস্থ্য সচেতন প্রজন্ম আগামী দিনে আরও বেশি করে গ্রিন টি-র দিকে ঝুঁকবে বলে মনে করছে ইওর্স ফুড। সংস্থার এমডি এস এন অগ্রবালের দাবি, চায়ের বাজারের ৩৫% রয়েছে অংসগঠিত ক্ষেত্রের হাতে। প্রথমে সেই বাজারকে ধরেই নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি করতে চান তাঁরা। সে জন্য তাঁদের বাজি গ্রিন-টি। শুরুতে পূর্বাঞ্চলের বাজারে চা আনলেও, আগামী বছরের মধ্যে দেশের অন্যত্রও বাজার ধরতে চায় ইওর্স ফুড। তার পরে পরিকল্পনা রয়েছে আমেরিকা, কানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ায় রফতানির।

এমনিতে ভারতে বছরে তৈরি হয় মোট ১.২ কোটি কেজি গ্রিন-টি। যার মধ্যে রফতানি হয় প্রায় ৩০ লক্ষ কেজি। এখন রফতানি বাজারে ওই চায়ের চাহিদা তো বাড়ছেই, দেশেও তা জম্মু-কাশ্মীরের চৌহদ্দি ছাড়িয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে অন্যত্র। আর সেই কারণেই ওই বাজার দখল করতে ঝাঁপাচ্ছে ছোট-বড় দেশি সংস্থাগুলি।

চা শিল্পের একাংশের বক্তব্য, গ্রিন-টি নিয়ে যে ভাবে বা যতখানি গবেষণা হয়েছে, প্রথাগত চা নিয়ে তা হয়নি। তাই সত্যিই এই দু’য়ের মধ্যে গ্রিন-টি কতখানি এগিয়ে, তা হয়তো কিছুটা তর্কসাপেক্ষ। কিন্তু তাঁদের মতে, এ কথা অস্বীকার করার জো নেই যে, নিজেকে অন্তত স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল বলে তুলে ধরতে পুরোদস্তুর সফল হচ্ছে গ্রিন-টি। যে কারণে তার চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে এ দেশে।

দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রিন-টি তৈরি হয় ওদলাবাড়ি বাগানে। বছরে ১৬ লক্ষ কেজি। ওই বাগানের সিইও ডি সেন মনে করেন, প্যাকেটজাত গ্রিন টি-র ব্যবসায় আগামী দিনে আরও বেশি সংস্থা এলে, আখেরে তাতে লাভ হবে চা শিল্পেরই। তাঁর বক্তব্য, দেশের সবখানে বাজার সম্প্রসারিত হলে, জম্মু ও কাশ্মীরের উপর নির্ভরতা কমবে। সুবিধা হবে চা শিল্পেরই।

green tea debapriya sengupta

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।