Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

দূষণ তদন্তের আতসকাচে নাম ১৬টি গাড়ি ব্র্যান্ডের

দূষণ কেলেঙ্কারিতে অনেক দিনই নাভিশ্বাস ফোক্সভাগেনের। বুধবার ওই অনিয়মের কথা মেনেছে মিৎসুবিশি। আর এ বার জার্মানিতে দূষণ তদন্তের আতসকাচের তলায় দাঁড়াতে হচ্ছে আরও ১৫টি গাড়ি ব্র্যান্ডকে। যারা প্রায় সকলেই গাড়ি দুনিয়ার প্রথম সারির নাম।

সংবাদ সংস্থা
সান ফ্রান্সিসকো, লন্ডন ও টোকিও শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৩৫
Share: Save:

দূষণ কেলেঙ্কারিতে অনেক দিনই নাভিশ্বাস ফোক্সভাগেনের। বুধবার ওই অনিয়মের কথা মেনেছে মিৎসুবিশি। আর এ বার জার্মানিতে দূষণ তদন্তের আতসকাচের তলায় দাঁড়াতে হচ্ছে আরও ১৫টি গাড়ি ব্র্যান্ডকে। যারা প্রায় সকলেই গাড়ি দুনিয়ার প্রথম সারির নাম।

শুক্রবার জার্মান পরিবহণমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডোবরিন্ড বলেন, ফোক্সভাগেন ছাড়াও দূষণ সংক্রান্ত অনিয়ম রয়েছে অডি, মার্সিডিজ, ওপেল এবং পোর্শের গাড়িতে। ওই জার্মান ব্র্যান্ডগুলি ছাড়াও তালিকায় রয়েছে রেনো, আলফা রোমেও, শেভ্রলে, ফিয়াট, হুন্ডাই, জাগুয়ার, জিপ, ল্যান্ড রোভার, নিসান, সুজুকি, ডাসিয়ার নাম। তিনি জানান, অনিয়মের জেরে নিজে থেকেই ৬.৩০ লক্ষ গাড়ি ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানকার বিভিন্ন সংস্থা। তবে সংস্থাগুলি এখনও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

গাড়ির যন্ত্রাংশ বাঁচাতে এবং দুর্ঘটনা আটকাতে নির্দিষ্ট তাপমাত্রার নীচে নিজে থেকেই দূষণ নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পদ্ধতি চালু রয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। যা সেখানকার আইনে অপরাধ নয়। কিন্তু এই পদ্ধতির সুযোগ নিয়ে কোনও গা়ড়ি সংস্থা দূষণ নিয়ন্ত্রণে অনিয়ম করেছে কি না, তা-ই খতিয়ে দেখছে জার্মানি। ফ্রান্সে আবার তদন্ত শুরু হয়েছে সে দেশের সংস্থা পিএসএ পুজো সিট্রোয়েনের বিরুদ্ধেও। দূষণের অভিযোগ ওঠায় সম্প্রতি নিজেরাই তদন্ত শুরুর কথা জানিয়েছে জার্মান সংস্থা ডেইমলার।

এ দিকে, সমস্যা আরও জটিল হয়েছে মিৎসুবিশির। বুধবারই গাড়িতে দূষণ কমিয়ে দেখানোর জন্য মাইলেজের হিসাবে কারচুপির কথা স্বীকার করেছিল তারা। প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছিল তাদের জাপানে বিক্রি হওয়া ছোট গাড়িতে এই সমস্যা রয়েছে। কিন্তু এখন মনে করা হচ্ছে রফতানি হওয়া বেশ কিছু গাড়িতেও একই কারচুপি করা হয়েছে। সেই সূত্রে শুক্রবার মিৎসুবিশির থেকে আমেরিকায় বিক্রি হওয়া গাড়িগুলির সব তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে মার্কিন গাড়ি সুরক্ষা সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

কারচুপির কথা স্বীকার করার পরে মাত্র তিন দিনে মিৎসুবিশির শেয়ার দর নেমেছে ৪০ শতাংশেরও বেশি। এই ঘটনায় জাপানের গাড়ি শিল্পের ভাবমূর্তি ধাক্কা খেতে পারে বলেও মনে করছেন সরকার। সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, এই কেলেঙ্কারির জেরে মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ ও জরিমানা দিতে হতে পারে মিৎসুবিশিকে। জাপানের ষষ্ঠ বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ অবশ্য নতুন নয়। এর আগে ২০০০ সালে এবং তার চার বছর পরেও গাড়ির সুরক্ষা-সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে কারচুপির কথা স্বীকার করেছিল তারা।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক কালে দূষণ কেলেঙ্কারির কথা প্রথম সামনে আসে গত সেপ্টেম্বরে। যখন মার্কিন মুলুকে এক পরীক্ষায় জানা যায়, দূষণের আসল মাত্রা যাতে ধরা না-পড়ে, তার জন্য কারচুপি করেছে ফোক্সভাগেন। ডিজেল গাড়ি তৈরির সময়েই তাতে বসিয়ে রেখেছে এমন সফটওয়্যার, যাতে তা চলার সময় আসলে যা দূষণ হচ্ছে, সেটি কমিয়ে দেখানো যায়। পরীক্ষা করতে গেলেই চালু হয়ে যায় ওই সফটওয়্যার। আর তার ফলে দূষণের মাত্রা নেমে আসে আসলের তুলনায় অনেক নীচে। এই কেলেঙ্কারিতে বৃহস্পতিবারই মার্কিন মুলুকে দূষণ কাণ্ডের জেরে সমস্যায় পড়া প্রায় ৫ লক্ষ গাড়ি সারানোর কাজ শুরু করতে সেখানের আদালতে চুক্তি করার কথা জানিয়েছে ফোক্সভাগেন। ক্রেতাদের থেকে গাড়ি কিনে নেওয়া বা সেগুলি সারানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থা। জানিয়েছে উচ্চপদস্থ কর্তাদের শেয়ারের মাধ্যমে বোনাসের ৩০% আটকানোর পথে হাঁটার কথা। তিন বছরে সেই শেয়ার দর ২৫% বাড়লে তবেই ২০১৮ সালে তা ফেরানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pollution scanner car
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE