প্রতীকী চিত্র।
টাকার পতন। অশোধিত তেলের দর বৃদ্ধি। বাণিজ্য ঘাটতি পাঁচ বছরের সর্বোচ্চ। এরই মধ্যে নর্থ ব্লকে আনাগোনা শুরু হয়েছে চলতি খাতে ঘাটতির ভূতের!
চলতি অর্থবর্ষে টাকার দাম অনেকটাই পড়েছে। সম্প্রতি টাকার নিরিখে ডলার পৌঁছেছিল ৭০-এর কোঠায়। অশোধিত তেলের দামের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে চিন্তা ছিলই। তার উপরে জুলাইয়ে বাণিজ্য ঘাটতি পাঁচ বছরের রেকর্ড ছুঁয়েছে। হয়েছে ১,৮০০ কোটি ডলার। অর্থ মন্ত্রকের আশঙ্কা, এই অবস্থায় অনেকটাই বাড়তে পারে চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ঘাটতি। মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘চলতি খাতে ঘাটতির ছবিটা আগের বছরের মতো ভাল নয়। অন্তত ১০ থেকে ২০ বেসিস পয়েন্ট বেশি হতে পারে।’’ রফতানির তুলনায় আমদানির অঙ্ক যত বেশি হবে, চলতি খাতে ঘাটতির চাপ ততই বাড়বে। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ওই হার ছিল ১.৯%। অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের আশঙ্কা, এ বছর এমনকি তা ২% ছাপিয়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, পরিস্থিতি যা, তাতে চলতি খাতে ঘাটতি ২.৫ শতাংশও ছুঁতে পারে। আইসিআরএ, মুডি’জের মতো রেটিং সংস্থাগুলির অনুমান, প্রথম ত্রৈমাসিকেই ঘাটতি ছুঁয়ে ফেলতে পারে ওই অঙ্ক। আশঙ্কার বিষয় হল, চলতি খাতে ঘাটতি বাড়লে টাকার দাম আরও পড়তে পারে। তাতে আমদানি, বিশেষ করে তেল আমদানির খরচ বাড়বে লাফিয়ে লাফিয়ে। ধাক্কা লাগতে পারে মূল্যবৃদ্ধির হারেও। তখন আবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে সুদ বাড়াতে হবে। ফলে শিল্পের জন্য ঋণের খরচ বাড়বে। কমতে পারে আর্থিক বৃদ্ধির গতি।
আশঙ্কার মেঘ
• জুলাইয়ে বাণিজ্য ঘাটতি পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ।
• তেল আমদানির খরচ বাড়তে পারে ২,৬০০ কোটি ডলার।
• চলতি অর্থবর্ষে টাকার দাম ৯% পড়েছে।
• চলতি খাতে ঘাটতি ২% ছাপিয়ে যেতে পারে।
আশার আলো
• টাকার দর রয়েছে ২০১৩ সালের কাছাকাছি।
• খুঁজতে হবে রফতানি বাড়ানোর উপায়।
নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমারও মানছেন, ‘‘টাকার দরের পতনের তুলনায় বাণিজ্য ঘাটতি অনেক বেশি চিন্তার।’’ তাঁর মতে, এই পরিস্থিতিতে রফতানি বাড়ানোর রাস্তা খোঁজাই এক মাত্র উপায়।
কেন্দ্রের অবশ্য যুক্তি, ২০১৩ সালে টাকার নিরিখে ডলারের দর যে জায়গায় ছিল এখনও প্রায় সেখানেই আছে। অশোধিত তেলের দরও যতটা বাড়বে আশঙ্কা করা হচ্ছিল ততটা বাড়ছে না। সে দিক থেকে চিন্তা কম। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ইরানের উপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে তেলের দাম কোথায় ঠেকবে তা কিন্তু এখনই বোঝা সম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy