Advertisement
০৫ মে ২০২৪

আবারও ব্যাঙ্ক জোড়ার সওয়াল করলেন জেটলি

বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক শিল্পে সংস্কার কর্মসূচির ব্যাপারে বলতে গিয়ে জেটলি বলেন, দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে মূল জীবনীশক্তি হল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। বেসরকারি ব্যাঙ্কের তুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে অনেক বেশি সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে হয়।

নয়াদিল্লি
শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৯ ০৩:৩৪
Share: Save:

রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে একাধিক ব্যাঙ্ককে মিশিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংস্কারের ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক শিল্পে সংস্কার কর্মসূচির ব্যাপারে বলতে গিয়ে জেটলি বলেন, দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে মূল জীবনীশক্তি হল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। বেসরকারি ব্যাঙ্কের তুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে অনেক বেশি সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে হয়। পাশাপাশি বাণিজ্যিক দিক দিয়ে তাদের অনেক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে কাজ করতে হয়। সংস্কারগুলি কার্যকর হলে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক আরও অনেক বেশি সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে।

আর্থিক পরিষেবা বিষয়ক সচিব রাজীবকুমার বলেন, এনহ্যান্স অ্যাকসেস অ্যান্ড সার্ভিস একসেলেন্স (ইজ) সংস্কার কর্মসূচিতে ৬টি মাপকাঠির কথা বলা হয়েছে। যার ভিত্তিতে ব্যাঙ্কের অগ্রগতি মাপা হবে। সেগুলি হল, গ্রাহকদের ব্যাপারে আরও বেশি যত্নশীল হওয়া, ব্যাঙ্কিং পরিষেবার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতা, ঋণ বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে সাহায়তা দান, ডিজিটাল পরিষেবা বৃদ্ধি-সহ আরও বেশি মানুষকে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার আওতায় আনা এবং মানব সম্পদের ক্ষেত্রে সংস্কার সাধন।

এই দিন জেটলি জানান, বিশ্বায়নের যুগে বড় মাপের বিদেশি ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার জন্য ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলিরও তৈরি হওয়া প্রয়োজন। অন্যথা আগামী দিনে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির পক্ষে কঠিন হবে। এর জন্য একাধিক ব্যাঙ্ককে মিশিয়ে দিয়ে বড় আকারের ব্যাঙ্ক তৈরি করাই তাঁদের লক্ষ্য।

জেটলি জানান, ব্যাঙ্ক পরিচালনায় সংস্কার আনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি হল ব্যাঙ্কের প্রকৃত আর্থিক স্বাস্থ্যটি ঠিক কী, তা আগে প্রকাশ করা। অনুৎপাদক সম্পদকে ধামা চাপা দিয়ে রাখার ফলেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে আর্থিক সমস্যা হয়েছিল। কেন্দ্রের নতুন সরকার ওই নীতি বর্জন করে সমস্ত অনুৎপাদক সম্পদ প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই কারণেই এক সময়ে অনুৎপাদক সম্পদ হঠাৎই বিশাল আকার নিয়েছিল।

অবশ্য জেটলি জানান, গত ২-৩ ত্রৈমাসিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদের চিত্রটির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সম্প্রতি ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, সমস্ত অনুৎপাদক সম্পদের জন্য আর্থিক সংস্থান করার উপর জোর দিতে হবে। উদ্দেশ্য, সেই সব ব্যাঙ্ককেই টিকিয়ে রাখা যাদের আর্থিক হাল মজবুত।

২০১৪-১৫ আর্থিক বছর থেকে শুরু করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি ২.৮৭ লক্ষ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ কমিয়েছে। এর মধ্যে চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ৯ মাসেই উদ্ধার হয়েছে ৯৮৪৯৩ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ। যা গত আর্থিক বছরের থেকে দ্বিগুণ। ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ব্যাপারে বলতে গিয়ে স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার বলেন, তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে মিশিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী ১ এপ্রিলের মধ্যেই ওই প্রক্রিয়া শেষ করার লক্ষ্যামাত্র ঠিক করা হয়েছে। আগামী দিনে আরও ব্যাঙ্ককে মেশানোর উদ্যোগে গতি আনা অনেকটাই নির্ভর করছে ওই তিন ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণের সাফল্যের উপর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Banks Finance Minister Arun Jaitley
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE