ফাইল চিত্র।
ভোডাফোন আইডিয়ার ভবিষ্যৎ এবং বিএসএনএলের ৪জি পরিষেবা কবে চালু হবে, সাম্প্রতিককালে দেশের টেলি পরিষেবা ক্ষেত্রে সম্ভবত বেশি করে চর্চায় এই দু’টি বিষয়ই। তিন বছর আগে বিএসএনএল-এর (সঙ্গে এমটিএনএল, যেটি বিএসএনএলে মিশবে) পুনরুজ্জীবন প্রকল্পে ৪জি পরিষেবা চালুর ক্ষেত্রে কেন্দ্র সহায়তার আশ্বাস দিলেও ক্রমাগত তা পিছিয়েছে। অল ইন্ডিয়া গ্র্যাজুয়েট ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেলিকম অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এআইজিইটিওএ) সভায় সম্প্রতি অগস্টে তা চালুর ইঙ্গিত দিয়েছেন সংস্থাটির সিএমডি প্রবীণ কুমার পুরওয়ার। এ মাসেই কিছু যন্ত্রের বরাতের জন্য পরিচালন পর্ষদকে প্রস্তাব দেওয়ার কথাও জানান তিনি।
ক’বছর আগে ৪জি পরিষেবার যন্ত্র কেনার দরপত্র চাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল বিএসএনএল। কিন্তু চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের প্রেক্ষিতে তাদের শুধু দেশীয় প্রযুক্তিই (যা কার্যত ছিলই না) ব্যবহারের নিদান দেয় কেন্দ্র। প্রতিদ্বন্দ্বীরা যখন দেশি-বিদেশি প্রযুক্তি নিয়ে ৪জি চালুর পরে ৫জির প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন ফের বিএসএনএল পিছিয়ে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। অবশেষে রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা সংস্থা সি-ডটের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে দেশীয় ৪জি প্রযুক্তির বরাত পায় টিসিএস। সি-ডটের মূল যন্ত্র এবং টিসিএস-এর রেডিয়ো-যন্ত্রাংশ নিয়ে গড়া ওই পরিকাঠামোর পরীক্ষামূলক ব্যবহার করে গত অক্টোবরে বার্তা বিনিময় করেন টেলিকমমন্ত্রী ও সচিব।
এআইজিইটিওএ-এর সভার ভিডিয়ো ক্লিপিংয়ে (যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) পুরওয়ারকে সংস্থাটির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া, কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ ও কেন্দ্রের নানা সাহায্যের কথা বলতে শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম বিষয় হল ৪জি পরিষেবা চালু করা। পরীক্ষার অন্তিম পর্বে পৌঁছেছি। প্রশ্ন এটা নয়, ৪জি কি আমরা পাব? বরং প্রশ্ন হল, কত দ্রুত তা চালু করতে পারি?’’ তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবসে পরিষেবা চালু করতে আগ্রহী।
৪জি-র যন্ত্রের ছোট বরাত দেওয়ার ছাড়পত্রের জন্য এ মাসেই পর্ষদের কাছে যাবেন বলেও জানিয়েছেন পুরওয়ার। তাঁর আশা, মে-জুনে সরবরাহ শুরু হবে। তার পর ধাপে ধাপে নেটওয়ার্কের পরীক্ষা ও অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে বিষয়টির বাণিজ্যিক আলোচনা এগোনো হবে। কোথায় ৪জি টাওয়ার বসালে সংস্থার আয় বাড়বে, এখনই তা চিহ্নিত করে পরিকল্পনা তৈরির বার্তা দেন তিনি। শনিবার অবশ্য এ নিয়ে পুরওয়ারকে বারবার ফোন করা বা বার্তা পাঠানো হলেও জবাব মেলেনি।
ক্যালকাটা টেলিফোন্সের সিজিএম দেবাশিস সরকার এ দিন জানান, তাঁরা নতুন আরও ৫২০০টি টাওয়ারের জায়গা চিহ্নিত করে সেই পরিকল্পনা সদর দফতরে পাঠিয়েছেন। সেগুলি বসানো, অপটিক্যাল ফাইবার পাতার মতো কাজগুলির পরিকল্পনাও শুরু হয়েছে। অপেক্ষা সায়ের।
তবে এত দ্রুত ৪জি পরিষেবা চালু করা নিয়ে সংশয়ী বিএসএনএল এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পি অভিমন্যু। তাঁর দাবি, দেশীয় প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষা চললেও তার কার্যকারিতার চূড়ান্ত প্রমাণের ছাড়পত্র মেলেনি। যদিও সংস্থা সূত্রের দাবি, তা মিলেছে। অভিমন্যুর আরও প্রশ্ন, অগস্টের মধ্যে সারা দেশে এই পরিকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব? নাকি অল্প কিছু এলাকায় তা চালু হবে? সে ক্ষেত্রে সারা দেশের গ্রাহক শুরু থেকেই সেই সুবিধা পাবেন না।
শেষ পর্যন্ত কী হয়, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy