বৈদ্যুতিক রিকশা (ই-রিকশা) কিংবা স্কুটারের (ই-স্কুটার) জন্য ব্যাটারি ভাড়া দেওয়ার সাধারণ কেন্দ্র চালু করার কথা ভাবছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেখানে প্রয়োজন মতো ব্যাটারি বদলাতে পারবে ওই সব গাড়ি। এর ফলে ওই সব বৈদ্যুতিক যানের ব্যবসা বৃদ্ধির সম্ভাবনা যেমন তৈরি হবে, তেমনই নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়বে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।
এ রকম গাড়ির ব্যাটারি ও প্রযুক্তি যেমন এখনও সহজলভ্য নয়, তেমনই নেই তা চার্জ দেওয়ার উপযুক্ত সাধারণ পরিকাঠামোও। রফাসূত্র খুঁজতে কেন্দ্রীয় অপ্রচলিত শক্তি মন্ত্রক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতর, সোসাইটি অব ম্যানুফ্যাকচারার্স অব ইলেকট্রিক ভেহিক্লস (এসএমইভি) সমেত সব পক্ষ বার চারেক বৈঠকে বসেছে। এসএমইভি-র শীর্ষ কর্তা তথা হিরো-ইলেকট্রিকের সিইও সোহিন্দর গিল জানান, সকলের জন্য ব্যাটারি ভাড়া দেওয়ার সাধারণ কেন্দ্র চালুর ব্যাপারে নীতিগত ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য অর্থ মন্ত্রকের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। কারণ অর্থ মন্ত্রক অনুমোদন করলে তবেই আর্থিক সুবিধার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
এর আগে অবশ্য বৈদ্যুতিক চার চাকার গাড়ি সংস্থা রেভা ব্যাটারি ভাড়া দেওয়ার পরিকল্পনা নেয়। পরে মহীন্দ্রা রেভা-কে অধিগ্রহণের পরেও সেই প্রকল্প চালু রাখে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে শুধু রেভা-র ব্যাটারিই ভাড়ায় মিলত সংস্থাটির কাছ থেকে। এখন সরকার স্বীকৃত যে-কোনও ই-রিকশা কিংবা ই-স্কুটারের জন্যই সাধারণ ভাড়ার কেন্দ্র চালুর কথা ভাবছে কেন্দ্র।
সোহিন্দর জানান, এখন চালু থাকা ই-রিকশায় ব্যবহৃত সীসার ব্যাটারির খরচ প্রায় ২২-২৬ হাজার টাকা। চলে গড়ে ৬-৮ মাস। অর্থাৎ, মাসে ব্যাটারির খরচ প্রায় ৪ হাজার টাকা। কিন্তু লিথিয়াম ব্যাটারির খরচ আরও বেশি। তাই যে-সব রুটে ই-রিকশা চলে, সেই এলাকার মধ্যে এমন কেন্দ্র চালু হলে সেখান থেকেই ভাড়ায় চার্জ দেওয়া ব্যাটারি নিতে পারে গাড়িগুলি। ফলে গোড়ায় ব্যাটারি না-কিনতে হলে গাড়ির দাম কিছুটা কমবে। ভাড়ার খরচ এখনকার মাসিক খরচের চেয়ে কম হবে বলেও আশ্বাস দিচ্ছে কেন্দ্র।
অন্য দিকে, ই-স্কুটারে এখন লিথিয়াম ব্যাটারি চালু করেছে হিরো ইলেকট্রিক ও অন্য কয়েকটি সংস্থা। সেটি চলে অন্তত পাঁচ বছর। সোহিন্দর জানান, কম গতি (ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত) ও বেশি গতির (ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটারের বেশি) স্কুটারের প্রয়োজনীয় ব্যাটারির দাম গড়ে পড়ে যথাক্রমে ১৮-২০ হাজার টাকা এবং ৩৫ হাজার টাকা। ভাড়ায় ব্যাটারি নিলে একই ভাবে কমবে গাড়ি কেনার খরচ।
কিন্তু ভাড়া গুনতে গিয়ে খরচের বোঝা বাড়বে না?
এ প্রশ্নের জবাবে তাঁর বক্তব্য, প্রচলিত জ্বালানিতে চলা একটি স্কুটারের দৈনিক খরচ প্রায় ৬৫ টাকা হলেও ই-স্কুটারের ক্ষেত্রে তা ২০ টাকা (চার্জ দেওয়ার খরচ ধরে)। ভাড়া তার চেয়ে বেশি হবে না বলেই আশ্বাস দিচ্ছে কেন্দ্র। এর ফলে ই-কমার্স বা রেস্তোরাঁ থেকে ক্রেতার বাড়িতে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবসায় যুক্ত সংস্থাগুলি ই-স্কুটার ব্যবহার করলে ব্যাটারি ভাড়ায় নিলে উপকৃত হবে। ফলে ওই কেন্দ্র চালু হলে সব মিলিয়ে এ ধরনের গাড়ির ব্যবসা আরও ছড়াবে বলেই তাঁদের আশা।
উল্লেখ্য, গত অর্থবর্ষে গোটা দেশে প্রায় ২৩ হাজার ই-স্কুটার বিক্রি হয়েছিল। তার মধ্যে হিরো ইলেকট্রিক বিক্রি করেছিল ১৫,১০০টি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy