প্রত্যয়ী: একশোয় ঢুকেই বৈঠকে ডাক শিল্পপতিদের। তাতেও লগ্নি আসবে কি?
দুশ্চিন্তার কারণ রয়েছে যথেষ্ট। কিন্তু তা বলে উৎসব কিংবা প্রচারের সুযোগ ছাড়তে নারাজ মোদী সরকার। তাই বিশ্বব্যাঙ্কের সহজে ব্যবসা করার মাপকাঠিতে একশোর মধ্যে ঢুকে পড়া নিয়ে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে প্রচারে নেমে পড়েছে তারা। বৈঠকের আমন্ত্রণ যাচ্ছে শিল্পমহলের কাছে। লক্ষ্য এই বার্তা দেওয়া যে, দেশে ব্যবসা করা সহজ হয়েছে। এ বার অন্তত লগ্নি করুন। কিন্তু আসল পরিবেশ কিংবা পরিস্থিতি ঠিক কী, তা নিয়ে ভিন্ন মত লগ্নিকারীদেরই।
মঙ্গলবার বিশ্বব্যাঙ্কের প্রকাশিত ওই ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ রিপোর্ট বলছে, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরির অনেক মাপকাঠিতেই উন্নতি তো দূর, বরং পিছিয়ে পড়েছে ভারত। কয়েকটিতে সামান্য এগোলেও, দেশ রয়ে গিয়েছে পিছনের সারিতে। যেমন, কোন দেশে ব্যবসা শুরু করা কত সহজ, শিল্পের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে কতখানি কালঘাম ছোটাতে হয়, নির্মাণের অনুমতি পেতেই বা কাঠখড় পোড়াতে হয় কতখানি ইত্যাদি। একই কথা প্রযোজ্য সম্পত্তি নথিভুক্তিতেও।
অথচ সরকারি সূত্রে খবর, খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার শিল্পমহলের সঙ্গে একশোয় ঢুকে পড়ার ‘সাফল্য’ উদ্যাপন করবেন। তার উদ্যোগ শুরু করেছে বাণিজ্য মন্ত্রকের শিল্পোন্নয়ন দফতর। বণিকসভা, শিল্পপতিদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। মোদী তাঁদের সামনে সাফল্যের পিছনে থাকা সংস্কারের কথা তুলে ধরবেন। আলোচনা হবে প্রথম পঞ্চাশে ঢুকতে পারার নীল নক্শা নিয়ে। আর শিল্পমহলকে বলা হবে, এ বার অন্তত লগ্নি করুন!
কিন্তু শিল্পমহলের যুক্তি, কারখানাগুলির যা ক্ষমতা, তার থেকে কম উৎপাদন হচ্ছে। ফলে নতুন লগ্নির সম্ভাবনা কম। দ্বিতীয়ত, বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট থেকে সরকার উজ্জ্বল ছবিগুলি তুলে ধরার চেষ্টা করলেও, বাস্তব আলাদা। যেমন, রিপোর্ট বলছে, কর মেটানো সহজ হয়েছে। অথচ জিএসটি চালুর পরে অনেকের অভিজ্ঞতা দুর্বিষহ। অরুণ জেটলির যদিও দাবি, জিএসটি-তে ভর করে পরের বছর ভারত আরও এগোবে।
শিল্পমহলের প্রশ্ন, দেশে বিদ্যুৎ পর্যাপ্ত। তবু সংযোগে দেরি কি সংস্কারের অভাবে? তাদের আর্জি, নির্মাণের ছাড়পত্র দ্রুত দিতে পুরসভা স্তরে অনলাইন ব্যবস্থা চালু করুক কেন্দ্র। তারা মনে করাচ্ছে, কিছু দিন আগে বহু রাজ্যে লগ্নির পথে হাজারো বাধার কথা বলেছে নীতি আয়োগও।
বুধবার গুজরাতে রাহুল গাঁধীর কটাক্ষ, ‘‘অর্থমন্ত্রী বিদেশি রিপোর্ট নিয়ে মগ্ন। যে কোনও ছোট দোকানদারকে জিজ্ঞাসা করুন, তার ব্যবসা কতখানি সহজ হয়েছে।’’
কেন্দ্রের ঢাক
• এই প্রথম একশোর মধ্যে পা রাখা
• এক লাফে ৩০ ধাপ উন্নতি। যা সবচেয়ে বেশি
• ২০০টি সংস্কার সেরে লক্ষ্য প্রথম পঞ্চাশ
• আগামী দিনে সহজ হবে লগ্নি টানা
মাথাব্যথা
• স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া নিয়ে এত প্রচার। তার পরেও পিছোতে হয়েছে ব্যবসা শুরুতে
• কালঘাম ছোটে নির্মাণের অনুমতি পেতে
• বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে তবে বিদ্যুৎ সংযোগ
• ধাক্কা খেয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
• পিছোতে হয়েছে সম্পত্তি নথিভুক্তিতে
• উল্লেখযোগ্য উন্নতি মাত্র ৪টিতে
ভাল-মন্দ
২০১৭ ২০১৬ ২০১৫
ব্যবসা শুরু ১৫৬ ১৫৫ ১৫১
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ১৪৬ ১৪৩ ১৪৪
সম্পত্তি নথিভুক্তি ১৫৪ ১৩৮ ১৪০
বিদ্যুৎ সংযোগ ২৯ ২৬ ৫১
পিছোতে হয়েছে আগের থেকে
নির্মাণের অনুমতি ১৮১ ১৮৫ ১৮৪
চুক্তি কার্যকর করা ১৬৪ ১৭২ ১৭৮
সামান্য এগোলেও এখনও পিছনের সারিতে
কর মেটানো ১১৯ ১৭২ ১৭২
সহজে দেউলিয়া ঘোষণা ১০৩ ১৩৬ ১৩৫
ঋণ পাওয়া ২৯ ৪৪ ৪২
সংখ্যালঘু অংশীদারের স্বার্থরক্ষা ৪ ১৩ ১০
সার্বিক স্থান ১০০ ১৩০ ১৩০
বেশ খানিকটা উন্নতি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy