Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কয়লা মজুত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে, বিক্রি কমলো কোল ইন্ডিয়ার

দেশ জুড়ে দাবদাহ চলছে। প্রতিদিনই ওঠা-নামা করছে বিদ্যুতের চাহিদা। গোটা এপ্রিল মাস জুড়ে পশ্চিমবঙ্গেও সেই একই অবস্থা। কিন্তু দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে চাহিদার তুলনায় বাড়তি কয়লা মজুত থাকায় এপ্রিলে কোল ইন্ডিয়ার বিক্রি কিছুটা কমে গেল। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম মাসে (এপ্রিল) দেশের বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি কোল ইন্ডিয়ার কাছ থেকে ৬.৮ শতাংশ কম কয়লা কিনেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৬ ০৪:৫৮
Share: Save:

দেশ জুড়ে দাবদাহ চলছে। প্রতিদিনই ওঠা-নামা করছে বিদ্যুতের চাহিদা। গোটা এপ্রিল মাস জুড়ে পশ্চিমবঙ্গেও সেই একই অবস্থা। কিন্তু দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে চাহিদার তুলনায় বাড়তি কয়লা মজুত থাকায় এপ্রিলে কোল ইন্ডিয়ার বিক্রি কিছুটা কমে গেল। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম মাসে (এপ্রিল) দেশের বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি কোল ইন্ডিয়ার কাছ থেকে ৬.৮ শতাংশ কম কয়লা কিনেছে। ওই মাসে কোল ইন্ডিয়া সব ক’টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৩ কোটি টনের কিছু বেশি কয়লা জোগান দিয়েছে। যা গত আর্থিক বছরের (২০১৫-’১৬) ওই মাসে ছিল ৩ কোটি ৩২ লক্ষের মতো।

গত এক বছর ধরেই কোল ইন্ডিয়ার খনিগুলিতে প্রচুর পরিমাণে কয়লা তোলা হয়েছে। বলা যেতে পারে গত আর্থিক বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির কয়লা উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তার থেকে সামান্য কিছু কম কয়লা তারা তুলতে পেরেছে। ফলে কোল ইন্ডিয়ার এই সাফল্যে কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী পীযূষ গয়াল যেমন খুশি, একই ভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিও তাদের চাহিদা মতো কয়লা পেয়ে আশঙ্কামুক্ত হতে পেরেছে। ফলে পরিস্থিতি এখন এমনই চলছে যে, কয়লা নিয়ে কোল ইন্ডিয়া বসে রয়েছে, কিন্তু বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি কম কয়লা নিচ্ছে। অথচ বছর খানেক আগেও এপ্রিল-মে মাসের গরমের সময়ে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি প্রায় প্রতিদিনই অভিযোগ করত, তাদের চাহিদা মতো কোল ইন্ডিয়া কয়লা জোগান দিতে পারছে না। এমনকী টাকা দিলেও না।

কী অবস্থা রাজ্যের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির?

পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের এক কর্তা জানাচ্ছেন, গ্রীষ্মের শুরু থেকেই তাঁদের প্রতিটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রচুর পরিমাণে কয়লা মজুত রাখা হয়েছিল। এপ্রিল মাসে রাজ্যের চাহিদা মেটাতে গড়ে ২৮০০-৩০০০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন করেও কয়লার কোনও ঘাটতি পড়েনি। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গত এক মাসে বিপুল পরিমাণে কয়লা পোড়ানোর পরেও তাদের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে এখনও মোট ১২ লক্ষ টনের মতো কয়লা মজুত রয়েছে। যা গ্রীষ্মে যথেষ্ট ভরসার বিষয় বলে ওই কর্তা দাবি করেছেন।

নিগমের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির মতোই পরিস্থিতি দেশের অন্য তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিরও। যাদের হাতে নগদ টাকা রয়েছে, তাদের কাছে প্রচুর পরিমাণে কয়লা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থা সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির (সিইএ) হিসেবে দেশের অধিকাংশ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে গড়ে ১৫-২০ দিনের মতো কয়লা মজুত রয়েছে। এ রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতেও ২০-২৫ দিনের মতো কয়লা গুদামজাত হয়ে রয়েছে বলে নিগম কর্তারা জানাচ্ছেন।

বিদ্যুৎ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত এক কর্তা বলছেন, গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে বেশি কয়লা মজুত রাখলেও তাতে আগুন লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কয়লার গুনগত মানও কমে যায়। যে কারণেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি কিছুটা কম কয়লা কিনছে।

কোল ইন্ডিয়ার এক কর্তা জানিয়েছেন, চাহিদা কিছুটা কমেছে। তবে খুব সামান্যই। চাহিদা মতো কয়লা জোগান দেওয়ার কারণেই এই সময়ে কিছুটা চাহিদা কমেছে। তবে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে ফের চাহিদা বাড়বে বলেই ওই কর্তা দাবি করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

coal india powerhouse
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE