Advertisement
E-Paper

১২ ঘণ্টা কাজের নিয়মে

বিধি বলছে এক জিনিস। আর তার আওতায় আনা নিয়মের খসড়া বলছে আর এক।

প্রজ্ঞানন্দ চোধুরী

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:৪২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিধি বলছে এক জিনিস। আর তার আওতায় আনা নিয়মের খসড়া বলছে আর এক। এমনই বিতর্ক দানা বাঁধছে প্রস্তাবিত চারটি শ্রমবিধির একটি (অকুপেশনাল সেফ্‌টি, হেল্‌থ অ্যান্ড ওয়ার্কিং কন্ডিশন) ঘিরে। আরও নিশ্চিত করে বলতে গেলে দৈনিক কাজের সময় ঠিক করা নিয়ে।

বর্তমানে চালু থাকা মূল শ্রম আইন (১৯৪৮ সালের ফ্যাক্টরিজ় অ্যাক্ট) অনুসারে, দিনে আট ঘণ্টা (বিরতি-সহ ন’ঘণ্টা) এবং ওই আইনের ৫১ নম্বর ধারা অনুযায়ী সপ্তাহে দু’দিন ছুটি থাকলে বিরতি-সহ দিনে সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ ঘণ্টা কাজ করানো যেতে পারে। তবে কোনও অবস্থাতেই সপ্তাহে তা মোট ৪৮ ঘণ্টার বেশি হবে না। নতুন শ্রমবিধিতেও এই আইনটিকে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। কিন্তু বিধির খসড়া নিয়মে বলা হয়েছে, সপ্তাহে নিট হিসাবে কাজের সময় ৪৮ ঘণ্টা থাকলেও দৈনিক সময় চাইলে ১২ ঘণ্টা করা যাবে।

কেন্দ্রীয় শ্রমসচিব অপূর্ব চন্দ্রের অবশ্য দাবি, নতুন নিয়ম চালু হলে নিয়োগকারীর হাতে তিনটি বিকল্প থাকবে। যার আওতায় সপ্তাহে চার, পাঁচ অথবা ছ’দিন কাজ করলে চলবে। বাদবাকি দিনগুলি (এক, দুই বা তিন) ছুটি থাকবে। কর্মীর সায় নিয়েই বিকল্প স্থির হবে। যদিও কেন্দ্রের এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ শ্রমিক সংগঠনগুলি।

ইতিমধ্যেই এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সরকারকে চিঠি দিয়েছে ১০টি কেন্দ্রীয় শ্রম ইউনিয়ন। তাদের তোপ, মূল বিধিতে না-থাকলেও এই ব্যবস্থা চালু করতে চায় কেন্দ্র। ইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক, বিমার মতো ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর করা সম্ভব নয়। মহিলাদের অসুবিধা হবে আরও বেশি। তা ছাড়া, কর্মীকে ১২ ঘণ্টা কাজের জায়গায় আটকে রাখা তাঁর স্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকারক।’’ সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন এবং এআইইউটিইউসির সভাপতি শঙ্কর সাহার বক্তব্য, ‘‘আইনে আছে কাউকে টানা পাঁচ ঘণ্টা কাজ করানোর পরে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিরতি দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে ১২ ঘণ্টা কাজ কী ভাবে সম্ভব? তা ছাড়া চাকরির আকালের সুযোগে কর্মীদের ১২ ঘণ্টা কাজ করাতে বাধ্য করা হবে কি না, সেই প্রশ্নও থাকছে।’’ আর বিজেপি ঘনিষ্ঠ ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক বিনয় সিংহের দাবি, ‘‘রাজ্যসভায় এর বিরোধিতা করে বক্তব্য রেখেছি।’’

দ্বিমত রয়েছে শিল্পমহলেও। চটকল মালিকদের সংগঠন আইজেএমএ-র চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্তের মতে, দৈনিক ১২ ঘণ্টা কাজ করিয়ে তিন দিন ছুটি দেওয়া সম্ভব নয়। তবে সিআইআইয়ের প্রাক্তন সভাপতি এবং টিটাগড় ওয়াগন্সের চেয়ারম্যান জে পি চৌধুরী বলেন, কর্মীরা সপ্তাহে টানা তিন দিন ছুটি পেলে আয় বাড়াতে তা ব্যবহার করতে পারবেন।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy