দীর্ঘ আড়াই বছর ঝুলে থাকার পরে কলকাতা-কুনমিং অর্থনৈতিক করিডর নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে কলকাতায় এ বিষয়ে আলোচনায় বসবেন সংশ্লিষ্ট চার দেশের (বাংলাদেশ, ভারত, চিন এবং মায়ানমার) কর্তারা।
বাণিজ্য, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং আর্থিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৩ সালে এই করিডর তৈরির ব্যাপারে উদ্যোগী হয় চার দেশ। নাম দেওয়া হয় ‘বিসিআইএম’ অর্থনৈতিক করিডোর। চার দেশের আমলা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে গঠন করা হয় যৌথ স্টাডি গ্রুপ। একটি সর্বসম্মত খসড়াপত্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় তাদেরই। এই গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাই আগামী সপ্তাহে কলকাতায় বসছেন আলোচনাচক্রে।
২০১৩ ও ’১৪, পরপর দু’বছর দু’টি বৈঠকের পর গোটা বিষয়টি কার্যত থমকে যায়। মায়নমারের তরফে প্রকল্পের খসড়া তৈরিতে দেরি, চিন-ভারত সম্পর্কের ওঠা-পড়া এবং এই পথের নিরাপত্তার প্রশ্নে চার দেশের মতপার্থক্য গোটা প্রকল্পের গতি কমিয়ে দেয়।
পাশাপাশি চিন দাবি তোলে, তাদেরই অন্য একটি মেগা প্রকল্প ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’–এর সঙ্গে এই বিসিআইএম-কে যুক্ত করা হোক। কিন্তু পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্যে দিয়ে চিনের প্রস্তাবিত ওই প্রকল্পটিতে নিরাপত্তার কারণেই আপত্তি জানায় দিল্লি। আজ অবশ্য দিল্লিকে আশ্বস্ত করে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই চিন-পাকিস্তান করিডরের উল্লেখ করে বলেন, ‘‘এ নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কারণ নেই।’’ প্রসঙ্গত মে মাসে চিন ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ মেগা প্রকল্প নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন করছে। সেখানে ভারতকেও ডাকা হয়েছে।
প্রস্তাবিত পথ
•
কলকাতা থেকে বেনাপোল হয়ে ঢাকা
•
সিলেট হয়ে অসমের শিলচর
•
মণিপুরের ইম্ফল থেকে মায়ানমারের কালে
•
মায়ানমারের মান্দালয় থেকে চিন সীমান্তের শহর রুইলি
•
চিনের তেংচং, এরহাই লেক হয়ে ইউনান প্রদেশের কুনমিং
খুলছে জট
• ২০১৪ সাল থেকে থমকে বৈঠক
• ফের আলোচনা আগামী সপ্তাহে
•
হাজির থাকবেন চার দেশের প্রতিনিধি
•
প্রকল্প থেকে সুবিধা পোশাক, চামড়া, তথ্যপ্রযুক্তি, জাহাজ তৈরির শিল্পের
সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের পরে আবার কুনমিং প্রকল্প বাঁচিয়ে তুলতে সক্রিয় হয়েছে নয়াদিল্লি। কথা হয়েছে চিন এবং মায়ানমারের নেতৃত্বের সঙ্গেও। চিন শেষ পর্যন্ত রাজি না-হলে তাইল্যান্ডকে পাশে টেনে এই করিডর করা যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সূত্রের খবর, এই বার্তা পেতেই নড়েচড়ে বসেছে চিন।
সাউথ ব্লকের বক্তব্য, ‘প্রকল্প সফল হলে চার দেশের পোশাক শিল্প, চামড়া, তথ্যপ্রযুক্তি ও জাহাজ নির্মাণ শিল্প উপকৃত হবে। সুফল পাবেন সাড়ে ১৬ লক্ষ বর্গকিলোমিটার এলাকার ৪৪ কোটি মানুষ। প্রস্তাবিত রুটটি হল: কলকাতা থেকে বেনাপোল হয়ে ঢাকা। সিলেট হয়ে শিলচর। ইম্ফল থেকে মায়ানমারের কালে। মায়ানমারের মান্দালয় থেকে চিনের রুইলি। তেংচং, এরহাই লেক হয়ে ইউনান প্রদেশের কুনমিঙে গিয়ে শেষ।
বাণিজ্যের জন্য ১৫টি পণ্য চিহ্নিত করা হয়েছে। চার দেশের মধ্যে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার ব্যবসা বাড়বে। তা ছাড়া জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রযুক্তি আদান-প্রদান, পর্যটন, কৃষি ও সেচ প্রযুক্তির লেনদেনের মতো ক্ষেত্র উপকৃত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy