অনিল অম্বানী।—ফাইল চিত্র।
বকেয়া টাকা মেটাননি অনিল ধীরুভাই অম্বানী। তাই তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল সুইডেনের টেলিকম সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থা এরিকসন ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড। তাদের অভিযোগ, এরিকসনের প্রাপ্য বকেয়া ৫৫০ কোটি টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। কিন্তু আদালতের নির্দেশের অবমাননা করেছেন রিলায়্যান্স কমিউনিকেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান (আরকম)। এখনও পর্যন্ত কানাকড়িও দেননি তিনি।
অনিল অম্বানী ও সংস্থার দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন এরিকসন কর্তৃপক্ষ। পুরো টাকাটা মেটাতে রাজি না হলে, তাঁদের গ্রেফতার করেসিভিল জেলে বন্দি করতে আবেদন জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছেও গিয়েছে তারা, যাতে দেশের বাইরে পা রাখতে না পারেন অনিল অম্বানী, রিলায়্যান্স টেলিকম লিমিটেডের চেয়ারম্যান সতীশ শাহ এবং রিলায়্যান্স ইনফ্র্যাটেল লিমিটেডের চেয়ারপার্সন ছায়া ভিরানি।
নিজেদের আবেদনে এরিকসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, “ইচ্ছাকৃতভাবে বকেয়া টাকা মেটাননি অনিল অম্বানী এবং তাঁর সংস্থা। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশকেও ধর্তব্যের মধ্যে আনেনি তারা। গতবছর ২৩ অক্টোবর টাকা মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সুদ সমেত সেই টাকা না ফেরালে অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হোক।’’
আরও পড়ুন: কুলদীপের ঘূর্ণিতে টলমল অস্ট্রেলিয়া, সিডনিতে বৃষ্টিতে পণ্ড শেষ ঘন্টার খেলা
তবে সাধারণ কয়েদিদের মতো অনিল অম্বানীকে জেলবন্দি করে রাখার দাবি তোলেনি তারা। বরং সব টাকা হাতে না আসা পর্যন্ত সিভিল জেলে তাঁকে রাখার সুপারিশ করেছে। দেনা মেটাতে না পারলে সাধারণত যেখানে রাখা হয় অভিযুক্তদের। সেখানে থাকাকালীন তাঁদের খরচ চালান মামলাকারীরা।
রিলায়্যান্স কমিউনিকেশন লিমিটেডের সঙ্গে এরিকসনের বেশ কয়েকবছর ধরে ঝামেলা চলছে। ২০১৪ সালে দুই সংস্থার মধ্যে ৭ বছরের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যাতে সারা দেশে রিলায়্যান্সের টেলিকম নেটওয়ার্ক সামলানোর ভার হাতে পায় এরিকসন। কিন্তু ২০১৪ থেকে তাদের পাওনা ১৫০০ কোটি টাকা মেটানো হয়নি বলে গতবছর ন্যাশনাল কোম্পানি ল অ্যাপেলটে ট্রাইব্যুনাল (এনসিএলএটি)-এর দ্বারস্থ হয় এরিকসন। সেখান থেকে মামলা যায় সুপ্রিম কোর্টে। যার পর ঋণের দায়ে ধুঁকতে থাকা রিলায়্যান্সের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে রাজি হন এরিকসন কর্তৃপক্ষ। ১৫০০ কোটির বদলে ৫৫০ কোটিতে বিষয়টি মিটমাট করে নিতে সম্মত হয়। ৩০ মে-র শুনানিতে ১২০ দিনের মধ্যে রিলায়্যান্সকে টাকা মিটিয়ে দিতে বলে আদালত। সেই মতো ৩ অগস্ট রিলায়্যান্সকে ২৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রিতেও অনুমতি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: কুলদীপের ঘূর্ণিতে টলমল অস্ট্রেলিয়া, সিডনিতে বৃষ্টিতে পণ্ড শেষ ঘন্টার খেলা
কিন্তু সম্পত্তি বিক্রি হয়ে গেলেও বকেয়া মেটায়নি অনিল অম্বানীর রিলায়্যান্স। তার জেরে ২৩ অক্টোবর ফের আদালতের দ্বারস্থ হন এরিকসন কর্তৃপক্ষ। যার পর রিলায়্যান্সকে সতর্ক করে দেয় আদালত। ২০১৮-র ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই সুদ সমেত টাকা মিটিয়ে দিতে হবে বলে জানায়। আজও সেই টাকা হাতে পায়নি এরিকসন। তাই অনিল অম্বানী ও তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের দাবি নিয়ে আরও একবার শীর্ষ আদালতে গিয়েছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy