Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Financial Accounts

অর্থবর্ষের প্রথমার্ধ শেষ, হাতে নিন কাগজ-কলম

এ বছর নতুন আয়কর কাঠামোর আকর্ষণ অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে এটাই মূল কর কাঠামো।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

অমিতাভ গুহ সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৭
Share: Save:

কার্যত নিমেষের মধ্যে পার হয়ে গেল ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাস। হাতে সময় আছে ভেবে অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক কাজকর্ম ফেলে রেখেছেন। তাঁদের পরামর্শ দিতে চাই, এখনই শুরু না করলে অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধও কিন্তু কেটে যাবে ঝড়ের বেগে। সুতরাং, সময় নষ্ট না করে প্রথমেই সেই সমস্ত কাজের একটি তালিকা বানিয়ে ফেলা যাক।

সেভিংস অ্যাকাউন্টে বেশি টাকা ফেলে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। প্রথমত, এখানে সুদ পাওয়া যায় কম-বেশি ৩%। অন্য দিকে, অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হওয়ার একাধিক অভিযোগ ঘিরে মাথাব্যথা বাড়ছে। এই কারণে কিছু টাকা রেখে বাকিটা সরিয়ে ফেলতে হবে মেয়াদি অ্যাকাউন্টে। নগদের প্রয়োজনের জন্য লিকুইড ফান্ডে টাকা রাখতে পারেন।

এ বছর নতুন আয়কর কাঠামোর আকর্ষণ অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে এটাই মূল কর কাঠামো। হিসাব বলছে, বছরে আয় ৭.২৭ লক্ষ টাকার মধ্যে হলে এই কাঠামোয় কোনও কর গুনতে হবে না। ১৫ লক্ষ টাকার পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রেও দেয় কর অনেকটা কম হবে। এমনিতে এই কাঠামোয় ছাড় তেমন একটা পাওয়া যাবে না। তবুও করের দায় কম হওয়ার কারণে বহু মানুষ নতুন কাঠামোতেই থাকবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এখানে থাকলে কর সাশ্রয়ের জন্য আর কোনও লগ্নি করতে হবে না। করের দায় কমার কারণে হাতে নগদও বাড়বে। কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে সম্পদ তৈরির জন্য পিপিএফ, এনপিএস এবং মিউচুয়াল ফান্ডে এসআইপি চালিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। যাঁরা পুরনো কাঠামোয় ছাড় পাওয়ার যোগ্য, তাঁরা লাভজনক মনে করলে পুরনোকেই বেছে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বাকি ছ’মাসের মধ্যে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর সাশ্রয়ী লগ্নি সেরে ফেলতে হবে। তবে সবচেয়ে আগে দেখে নিতে হবে কোন কাঠামো কার জন্য লাভজনক।

ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, মিউচুয়াল ফান্ড এবং ডিম্যাট অ্যাকাউন্টে নমিনেশন করা এখনও না হয়ে থাকলে তা অবিলম্বে সেরে ফেলতে হবে। কোনও শেয়ার যদি এখনও ডিম্যাট করা না হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা তার রেজিস্ট্রারের কাছে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কেওয়াইসি সংক্রান্ত কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। নমিনেশন এবং কেওয়াইসির তথ্য আপডেট করা না থাকলে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হবে।

শেয়ার এবং শেয়ার নির্ভর ফান্ডে কোনও লগ্নি এক বছর বা তার বেশি সময় ধরে রাখার পরে তা বিক্রি করে মুনাফা হলে, তার প্রথম ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কোনও কর বসে না। এ কথা মাথায় রেখে ভাল বাজারের সুযোগ নিয়ে শেয়ার এবং ফান্ড এমন ভাবে বিক্রি করা যেতে পারে যাতে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মুনাফা হাতে আসে।

আধার তথ্য ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক প্রতারণার প্রসঙ্গে একটু আগেই কথা হচ্ছিল। এই ধরনের প্রতারণা ঠেকাতে অবিলম্বে বায়োমেট্রিক তথ্য লক করতে হবে। এর জন্য এম আধার অ্যাপ ডাউনলোড করে এবং তাতে নিজের পিন তৈরি করে আধার এবং বায়োমেট্রিক লক করা যায়।

অর্থবর্ষের ছ’মাস পার হয়ে গিয়েছে। এই বেলায় ব্যাঙ্কের পাশবই আপডেট করান বা অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট নিয়ে নিন। দেখে নিন সমস্ত ডিভিডেন্ড এবং বিভিন্ন প্রকল্পের সুদ জমা পড়েছে কি না। একটি বাদে অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির সুদের হারে তেমন হেরফের হয়নি। প্রবীণ নাগরিকদের প্রকল্পে সুদ ৮.২%। সাত বছর মেয়াদি সরকারি সেভিংস বন্ডের সুদ ৮.০৫%। এখানে নবীনরাও টাকা রাখতে পারেন। তবে লগ্নির বিষয়ে মনস্থ করলে তা সেরে ফেলুন দ্রুত।

জীবন বিমা এবং স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম যাতে সময়মতো দেওয়া হয় সে দিকে খেয়াল রাখুন। ১৫ ডিসেম্বর এবং ১৫ মার্চের মধ্যে অগ্রিম করের শেষ দুই কিস্তি জমা করতে হবে।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

savings Liquid Cash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE