Advertisement
E-Paper

মূলধন পেতে মানতে হবে আধ ডজন শর্ত

২.১১ লক্ষ কোটি টাকা পুঁজির মধ্যে চলতি অর্থ বছরে সরকারি ব্যাঙ্কগুলি মোট ৮৮,১৩৯ কোটি টাকা পাবে। তার মধ্যে ৮,১৩৯ কোটি টাকা আসবে বাজেট বরাদ্দ থেকে। বাকিটা বন্ড থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর কোনও বিজয় মাল্য নয়। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে। তারপর তা শোধ না হওয়ায় ব্যাঙ্কের দেউলিয়া দশা হবে, তারও পুনরাবৃত্তি নয়। সেই লক্ষ্যেই এ বার ব্যাঙ্কে নতুন পুঁজি জোগানোর সঙ্গে আধ ডজন শর্ত বেঁধে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

দু’বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে ২.১১ লক্ষ কোটি টাকা পুঁজি জোগানোর কথা অক্টোবরেই ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। তখনই মোদী সরকার বলেছিল, শুধু পুঁজিতে চিঁড়ে ভিজবে না। জরুরি পরিচালন ব্যবস্থার সংস্কার। আশঙ্কা ছিল, তা না-হলে, করদাতাদের জোগানো অর্থ নতুন করে চলে যেতে পারে ঋণখেলাপিদের পকেটে। এই লক্ষ্যেই বুধবার এক গুচ্ছ সংস্কারের পথে হাঁটল কেন্দ্র।

২.১১ লক্ষ কোটি টাকা পুঁজির মধ্যে চলতি অর্থ বছরে সরকারি ব্যাঙ্কগুলি মোট ৮৮,১৩৯ কোটি টাকা পাবে। তার মধ্যে ৮,১৩৯ কোটি টাকা আসবে বাজেট বরাদ্দ থেকে। বাকিটা বন্ড থেকে। শেয়ার বাজার থেকে ইতিমধ্যেই ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ ঘরে তুলেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। সব মিলিয়ে ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি পুঁজি।

প্রায় ৮.৪ লক্ষ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদের বোঝায় ধুঁকতে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির কাছে এই পুঁজি কার্যত সঞ্জীবনী। উদ্দেশ্য দু’টি। এক, ব্যাঙ্কগুলি যাতে ভেঙে না পড়ে। জেটলির কথায়, ‘‘রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের স্বাস্থ্যরক্ষা সরকারের প্রধান দায়িত্ব।’’ দুই, শিল্পে জুগিয়ে ব্যাঙ্কগুলি যাতে বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা নিতে পারে।

কিন্তু এ বার থেকে ঋণ বিলির সময়ে ও তার পরে ব্যাঙ্কগুলিকে আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিচ্ছে মোদী সরকার। ব্যাঙ্ক সচিব রাজীব কুমার আজ সব ব্যাঙ্কের শীর্ষকর্তাদের চিঠি লিখে বলে দিয়েছেন, প্রত্যেককেই ‘সক্রিয় ও দায়িত্ববান’ হতে হবে। মোট ঋণের ২৫ শতাংশের বেশি শিল্পকে দেওয়া চলবে না। ২৫০ কোটি টাকার বেশি ঋণে বিশেষ সংস্থাকে দিয়ে নজরদারি চালাতে হবে। শর্ত ভাঙা হলেই বিপদঘণ্টি বাজানো হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে বার্ষিক রিপোর্ট দেবে কেন্দ্র। কোন ব্যাঙ্ক কত নম্বর পেল, তা-ও জানানো হবে।

মনমোহন জমানায় সরকারের চাপে যথেচ্ছ ঋণ বিলির ফলেই অনাদায়ী ঋণ বেড়েছে বলে জেটলির অভিযোগ। তার পুনরাবৃত্তি রুখতে তাঁর ঘোষণা, ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তে কেন্দ্র নাক গলাবে না। মাল্যের কিংফিশারকে দেওয়া ঋণে দেখা গিয়েছিল, একটি বড় ব্যাঙ্কের বিপুল অর্থের সঙ্গে অন্য অনেক ব্যাঙ্ক অল্প অল্প অর্থ জুড়ে ঋণ দিয়েছিল। ফলে টাকা উসুলে সবাইকে ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হত। এ বার জোট তৈরি হলেও, একটি ব্যাঙ্ককে অন্তত মোট ঋণের ১০% দায় নিতেই হবে।

প্রশ্ন উঠেছে, এত সব শর্তে ঋণ মেলাটা আরও কঠিন হবে না তো? সরকারের যুক্তি, এতে ঋণের জোগান বাড়বে। প্রায় ৫ লক্ষ কোটি টাকা বাড়তি ঋণ দিতে পারবে ব্যাঙ্কগুলি।

শপথ

• ব্যাঙ্কের মোট ঋণ ৫ লক্ষ কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়া

• ছোট-মাঝারি সংস্থায় ঋণ বাড়াতে ‘উদ্যমী-মিত্র’ প্রকল্প

• বড় অঙ্কের ঋণ খেলাপে রাশ টানতে কড়া ব্যবস্থা। ধার দেওয়া ও আদায়ে স্বচ্ছতা

• অনুৎপাদক সম্পদ নিয়ে নজরদারিতে আলাদা বিভাগ। ২৫০ কোটির বেশি ঋণে বাড়তি সতর্কতা

• রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের পরিচালন পর্ষদকে বাড়তি দায়িত্ব দক্ষ পরিচালকদের উৎসাহ

Bank Govt
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy