ডলারের সাপেক্ষে প্রায় প্রতিদিন নতুন তলানিতে তলিয়ে যাচ্ছে টাকা। তার উপরে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেলুনের মতো ফুলে ওঠা আমদানি খরচে রাশ টানতে এসি, ফ্রিজের মতো ১৯ ধরনের পণ্যে আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছে কেন্দ্র। অথচ দেখা যাচ্ছে বাঁধ দেওয়া যাচ্ছে না ওই তালিকার বাইরে থাকা আকরিক লোহা, কয়লার মতো পণ্য আমদানিতে। আর তাই চলতি খাতে ঘাটতি যে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তা শনিবার কবুল করলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
অথচ টাকার পতন ও অশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি বহাল থাকলেও, এত দিন জেটলি জোর গলায় বলে এসেছেন যে, এই সব কিছুর পরেও রাজকোষ ঘাটতি লাগামছাড়া হবে না। যে কোনও মূল্যে তাকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই বেঁধে রাখবে কেন্দ্র। এ বার এত স্পষ্ট করে চলতি খাতে ঘাটতি নিয়ে মাথাব্যথার কথা স্বীকার করা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত অনেকের।
তার উপরে রফতানিকারীদের সংগঠন ফিও-র সভাপতি গণেশ কুমার গুপ্তের দাবি, ডলারের দর বাড়ায় আমদানি করা যন্ত্র, কাঁচামাল, নানা পরিষেবার খরচ বেড়েছে। তার উপরে পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা ও এশিয়ার নানা দেশ ভারতীয় পণ্যের দাম কমানোর দাবি তুলছে। কারণ ডলারের সাপেক্ষে ওই সব দেশের মুদ্রার দরও পড়েছে।
আর এই অবস্থায় চলতি খাতে ঘাটতিই যে চিন্তার, তা মেনে নিয়েছেন জেটলি। তিনি বলেন, ‘‘অশোধিত তেলের দর বাড়লে তেল আমদানিতে আরও বিদেশি মুদ্রা খরচ হবে। ফলে চলতি খাতে ঘাটতিতে তার প্রভাব পড়বেই।’’ বিশেষজ্ঞদের মতে, শেয়ার বা মুদ্রা বাজারের ব্যাজার মুখে জেটলির স্বীকারোক্তি যে হাসি ফোটাবে না, তা বলা বাহুল্য।
অর্থমন্ত্রীর যদিও দাবি, আমদানি খরচ ও চলতি খাতে ঘাটতিতে রাশ টানতে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু অর্থনীতিবিদ অজিত রাণাডের যুক্তি, ‘‘ডলার এক টাকা বাড়লেই তেল আমদানি খরচ বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা বাড়ে। তা হলে জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ডলার প্রায় ১১ টাকা বাড়লে, কী হতে পারে ভাবা দরকার!’’ তাঁর মতে, অবস্থা সামলানোর উপায় রফতানি থেকে বেশি আয়। কিন্তু সেই সমাধান এখনও দূর অস্ত্।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy