Advertisement
E-Paper

লোকসভায় পাশ জিএসটি বিল

তিনি ঠেকে শিখছেন। লোকসভায় জিএসটি-র সংবিধান সংশোধনী বিল পাশের দিনে এ কথা স্পষ্ট বোঝালেন নরেন্দ্র মোদী। সোমবার সংসদে এ বিষয়ে বিতর্কে অংশ নিতে গিয়ে বিল পাশের জন্য বারবার সমস্ত রাজ্য ও রাজনৈতিক দলকে ধন্যবাদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৪২
প্রতীক চিত্র

প্রতীক চিত্র

তিনি ঠেকে শিখছেন। লোকসভায় জিএসটি-র সংবিধান সংশোধনী বিল পাশের দিনে এ কথা স্পষ্ট বোঝালেন নরেন্দ্র মোদী।

সোমবার সংসদে এ বিষয়ে বিতর্কে অংশ নিতে গিয়ে বিল পাশের জন্য বারবার সমস্ত রাজ্য ও রাজনৈতিক দলকে ধন্যবাদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী। দাবি করলেন, জিএসটি-জমানায় ক্রেতাই হবেন আসল রাজা। নিশ্চিন্ত বোধ করবে ছোট সংস্থাগুলি। কর-সন্ত্রাস বন্ধ হবে। কাঁচা আর পাকা বিলের চক্কর থেকে বেরিয়ে এসে বন্ধ হবে কালো টাকার কারবার। সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন আমজনতা ও ছোট ব্যবসায়ীরা। বিশেষ সুবিধা পাবে শিল্পে পিছিয়ে থাকা পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিও।

গত বছরই এই বিল পাশ হয়েছিল লোকসভায়। কিন্তু রাজ্যসভার বৈতরণি পার হতে গিয়ে এ বার তাতে কিছু বদল করতে হয়েছে কংগ্রেসের দাবি মেনে। ফলে সেই সংশোধিত বিল ফের পাশ করানোর প্রয়োজন ছিল লোকসভায়। এ দিনই ৪৪৩-০ ভোটে জিতে তা করে ফেলল মোদী সরকার। সমর্থন জুগিয়েছে সব দলই। শুধু জয়ললিতার এআইএডিএমকে ছাড়া। জিএসটি-র বিরোধিতায় রাজ্যসভার মতো লোকসভাতেও ‘ওয়াক-আউট’ করেছে তারা।

একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসা ইস্তক মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগ তাদের অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করার। এই তেতো সম্পর্কের কারণে লোকসভায় পাশ হয়েও রাজ্যসভায় আটকে গিয়েছে জমি অধিগ্রহণ-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিল। সেখানে জিএসটি-র সংবিধান স‌শোধনী কেন্দ্র পাশ করাল সুর নরম করে। ঐকমত্যের রাস্তায় হেঁটে। ভুল থেকে শেখার বার্তা দিয়ে মোদী বললেন, ‘‘সংখ্যা গরিষ্ঠতার জোরে বিল পাশ করাতে চাইনি। গণতন্ত্র সংখ্যা গরিষ্ঠতার খেলা নয়। ঐকমত্যের যাত্রা।’’

অনেক দিন থেকেই দ্রুত জিএসটি চালুর জন্য চাপ তৈরি করে আসছে শিল্পমহল। কিন্তু গত দু’বছরে তা না-হওয়ায় সরকার দুষেছে কংগ্রেসকে। তাই মনমোহন সিংহের জমানায় জিএসটি-র পথে মোদীই যে অন্যতম বাধা ছিলেন, এ দিন তা মনে করিয়ে দিতে ভোলেনি কংগ্রেস। মল্লিকার্জুন খাড়্গে মোদীকে বলেন, ‘‘গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বলেছিলেন, জিএসটি বিল রাজ্যের অধিকারের বিরুদ্ধে। এখন কংগ্রেসকে দায়ী করা হচ্ছে। আগে রাজি হলে তো জিএসটি আগেই পাশ হয়ে যেত। তখন বিরোধিতা করেছিলেন কেন?’’

এ দিন মোদী স্বভাবসিদ্ধ পাল্টা আক্রমণে জাননি। বরং স্বীকার করেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন জিএসটি নিয়ে সংশয় ছিল। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথাও বলেছি।’’ তাঁর দাবি, সেই অভিজ্ঞতার জোরেই রাজ্যের সমস্যা বুঝেছেন তিনি। বদল করেছেন জিএসটি-বিলে। যেমন, রাজ্যের ক্ষতি পুরো পাঁচ বছর ধরে মেটানোর প্রতিশ্রুতিতে কেন্দ্রের প্রতি তাদের অবিশ্বাস কেটেছে।

সংসদের দুই কক্ষেই যে তিনি ঐকমত্যে জোর দিয়েছেন, তা বোঝাতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘জিএসটি নিয়ে মনমোহন সিংহ ও সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। এক জন রাজ্যসভার, অন্য জন লোকসভার।’’ রাজনীতির পর্ষবেক্ষকরা বলছেন, পরিস্থিতির চাপেই এমন নরম সুর মোদীর। কারণ, বিরোধীদের দুষলেও রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। তা ছাড়া, সংসদে সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পরে এ বার অর্ধেকের বেশি রাজ্যের সিলমোহর জরুরি। সেখানেও যে প্রতি পদে রাজনৈতিক সহযোগিতা দরকার, তা বিলক্ষণ বুঝেই এ দিন সেই আবেদন জানিয়ে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী।

অনেকের আশঙ্কা, জিএসটি চালু হলে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। অন্তত স্বল্প মেয়াদে। এ দিন অবশ্য মোদীর দাবি, খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার যে সমস্ত পণ্যের দাম নিয়ে হিসেব করা হয়, তার ৫৫% (খাদ্য, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, জরুরি ওষুধ ইত্যাদি) জিএসটি-র আওতার বাইরে। তা ছাড়া, কর আদায় বাড়লে, সেই বাড়তি অর্থ পরিকাঠামো গড়ার জন্য কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আইআইএম কলকাতার এক অনুষ্ঠানে এসে অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুও বলেন, জিএসটি চালু হলে প্রাথমিক ভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এতে লাভ হবে দেশের অর্থনীতিরই।

Lok Sabha GST bill Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy