ডাল-আলু-চিনির চড়া দরের জেরে ফের মাথা তুলল পাইকারি বাজার দর।
গত ১৮ মাস ধরে একটানা কমছিল সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার। কিন্তু সোমবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে এপ্রিলের হিসেবে তা ছুঁয়েছে ০.৩৪%। গত সপ্তাহেই খুচরো মূল্যবৃদ্ধি এপ্রিলে ৫.৩৯% হারে বাড়ার কথা জানানো হয়। ফলে মানুষের দৈনন্দিন খরচের বোঝা বাড়ছে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে শিল্পমহলও। তবে মূল্যবৃদ্ধি এখনও সীমা ছাড়ায়নি বলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে নতুন করে সুদ কমানোর দাবিও তুলেছেন তাঁরা। বাড়ি-গাড়ি ঋণে সুদ কমলে তাঁরা কিছুটা স্বস্তি পেলে চাহিদার হাল ফিরবে বলেই আশা শিল্পের। পাশাপাশি কমবে শিল্পের তহবিল সংগ্রহের খরচ।
শেয়ার বাজার অবশ্য মূল্যবৃদ্ধির ব্যাপারে ছিল কিছুটা উদাসীন। প্রভাব পড়েনি বর্ষা কিছুটা দেরিতে আসার পূর্বাভাসেরও। সোমবার সেনসেক্স প্রায় ১৬৪ পয়েন্ট বেড়ে বাজার বন্ধের সময়ে থামে ২৫,৬৫৩.২৩ পয়েন্টে।
এত দিন পাইকারি দর সরাসরি কমছিল, যার অর্থ মূল্যবৃদ্ধি ছিল শূন্যের নীচে। মার্চ ও ফেব্রুয়ারিতে মূল্যবৃদ্ধি ছিল (-)০.৮৫%। গত বছরের এপ্রিলে তা ছিল (-)২.৪৩%। ২০১৬-র এপ্রিলে মূল্যবৃদ্ধির সরীসৃপ মাথাচাড়া দেওয়াতেই এই হারের মোড় ঘুরেছে। নেতিবাচক থেকে তা দাঁড়িয়েছে ইতিবাচক ০.৩৪ শতাংশে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক সমীক্ষায় অবশ্য অর্থনীতিবিদরা ০.২০% হারে দাম কমার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
এপ্রিলে সাধারণ ভাবে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৪.২৩%। তার আগের মাসে তা ছিল ৩.৭৩%। ডালের দাম বেড়েছে ৩৬.৩৬%, আলু ৩৫.৪৫%, চিনি ১৬.০৭%। কল-কারখানায় তৈরি পণ্যের দামও বেড়েছে ০.৭১%। পেঁয়াজের দাম অবশ্য পড়েছে ১৮.১৮%। জ্বালানির দামও পড়েছে ৪.৮৩%, খনিজ পদার্থ ২৭.২৪%।
চিনির দাম নিয়ে দুশ্চিন্তা এ দিন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে তার উৎপাদন সংক্রান্ত পূর্বাভাস। এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল প্ল্যাটস-এর শাখা কিংগ্সম্যান তার সমীক্ষায় ইঙ্গিত দিয়েছে, চিনির উৎপাদন ২০১৫-’১৬-র ফসল মরসুমে (অক্টোবর থেকে সেপ্টেম্বর) ২.৫১ কোটি টনের বেশি হবে না। এর আগে তা ২.৫৬ কোটি টন থাকবে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়। মূলত উত্তরপ্রদেশ ও কর্নাটকে উৎপাদন আশানুরূপ না-হওয়ার কারণেই উৎপাদন ১১% কমবে বলে মনে করছে তারা। এই পরিপ্রেক্ষিতে চিনির দাম আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট মহলে।
মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে ফিকি প্রেসিডেন্ট হর্ষবর্ধন নেওটিয়া মন্তব্য করেন, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আগামী ৭ জুন ঋণনীতি ফিরে দেখতে বসে সুদ কমানোর পথেই হাঁটবে। তাঁর আশা শীর্ষ ব্যাঙ্ক সব দিক বিবেচনা করে বিষয়টিতে গুরুত্ব দেবে। তবে ভিন্ন মত জানিয়ে ডেলয়েট ইন্ডিয়ার সিনিয়র ইকনমিস্ট রিচা গুপ্ত বলেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধি ইতিবাচক বৃত্তে ঢুকে গিয়েছে। ফলে খুব তাড়াতাড়ি সুদ কমার আশা নেই বললেই চলে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy