পথ চলা শুরু হয়েছিল মূলত শিল্প সংস্থাকে ঋণ দিতেই। কিন্তু এখন অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা ঘাড় থেকে নামিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে আরও বেশি করে খুচরো ঋণের হাত ধরতে চাইছে আইডিবিআই ব্যাঙ্ক।
নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সংক্রান্ত এক আলোচনায় সম্প্রতি আইডিবিআইয়ের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর সৌম্য শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘এক সময়ে মোট ঋণের সিংহভাগই ছিল শিল্প ঋণ। কিন্তু এখন খুচরো ঋণের উপরেই জোর দেওয়া হবে। শিল্প সংস্থাকে ঋণ আদৌ না-দেওয়ার কোনও সিদ্ধান্ত অবশ্যই নেওয়া হয়নি। তবে যে-সব সংস্থার রেটিং (ধার ফেরত দেওয়ার সম্ভাবনার মূল্যায়ন) খুব ভাল, শুধু তাদেরই ঋণ দেওয়া হবে।’’ ইতিমধ্যেই খুচরো ঋণ ব্যাঙ্কের মোট ধারের ৪৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলেও তাঁর দাবি। তিনি বলেন, চলতি অর্থবর্ষে তা আরও ২২% বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এর সঙ্গে ঘুরে দাঁড়াতে আরও একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটি। সেখানে জোর দেওয়া হয়েছে তহবিল সংগ্রহ ও ব্যাঙ্ক পরিচালনার খরচ কমানোর উপর। পাখির চোখ করা হচ্ছে অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা দ্রুত কমানোকে।
৫২ বছর আগে শিল্প সংস্থাগুলিকে ঋণ দিতে তৈরি হয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। ১২ বছর আগে কেন্দ্রের নির্দেশে রাতারাতি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আইডিবিআই। কিন্তু কয়েকটি মাত্র শাখা নিয়ে অগ্রাধিকার ক্ষেত্রে ৪০% ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা কখনওই ছুঁতে পারেনি ব্যাঙ্কটি।
ব্যাঙ্কের দাবি, গত কয়েক বছরে দেশে শিল্প ক্ষেত্রে কর্মকাণ্ড ঝিমিয়ে পড়ায় ঋণের চাহিদাও কমেছে। বেড়েছে অনুৎপাদক সম্পদও। গত অর্থবর্ষে নিট হিসেবে তা দাঁড়িয়েছে মোট ঋণের ১৩.২২%। এই খাতে অর্থ সংস্থান করতে গিয়ে ব্যাঙ্কের নিট লোকসান হয়েছে ৫,১৫৮ কোটি টাকা। অথচ ওই বছর মোট মুনাফা হয়েছিল ৪,৫৭৮ কোটি। মাত্রাছাড়া অনুৎপাদক সম্পদের কারণে আইডিবিআই ব্যাঙ্ক-কে কড়া নজরদারিতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কও। এই চক্রব্যূহ থেকে বেরোতে আপাতত পরিষেবা বাড়ানো ও খুচরো ঋণ দেওয়ার উপরেই জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত।
পাশাপাশি, হাল ফেরানোর পরিকল্পনা করতে ইতিমধ্যেই তিনটি কমিটি তৈরি করেছে ব্যাঙ্ক—
• প্রথম কমিটি অনুৎপাদক সম্পদ কমানোর পথ খুঁজবে।
• নতুন করে যাতে অনুৎপাদক সম্পদ তৈরি না-হয়, সে বিষয়ে কড়া
নজর রাখবে দ্বিতীয় কমিটি।
• আর ব্যাঙ্কের মূল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন কোন কোন লগ্নি গুটিয়ে নেওয়া যায়, তা চিহ্নিত করবে তৃতীয় কমিটি। জুলাইয়ের মধ্যে এই কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে।
• ব্যবস্থা ল্যাঙ্কো ইনফ্রাটেকের বিরুদ্ধে: সংবাদ সংস্থার খবর। আইডিবিআই ব্যাঙ্ককে ল্যাঙ্কো ইনফ্রাটেকের বিরুদ্ধে দেউলিয়া আইনে ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছে আরবিআই। সংস্থার খেলাপি-ঋণ প্রায় ১১,৩৬৭ কোটি। বিএসই-কে এ কথা জানিয়েছে ল্যাঙ্কো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy