ছবি: সংগৃহীত।
কলকাতা বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরেও ‘ডানা মেলেছে’ ইন্ডিগো! উত্তর আবজা নগর গ্রামে। সেখানে তাদের ‘অন্য উড়ানে’ হাসি ফুটেছে আরিফা বিবি, মামণি খাতুনদের মুখে। নেশাগ্রস্ত স্বামীর অত্যাচারে এক সময় যাঁদের জীবন অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল, আজ তাঁরাই নিজেদের পায়ে দাঁড়াচ্ছেন সেলাই মেশিন চালিয়ে কিংবা রেডিমেড পোশাকের ছোট ব্যবসাকে হাতিয়ার করে।
আরিফা বিবিদের আলোয় ফেরানোর এই প্রকল্প বন্ধন-এর। সেখানে তাঁদের মতো ছ’শো মহিলার জন্য টাকা জুগিয়েছে ইন্ডিগো। বিমান পরিবহণ সংস্থাটির ডিরেক্টর অজয় জাসরার কথায়, ‘‘আমাদের প্রেসিডেন্ট আদিত্য ঘোষ প্রকল্পের কথা শুনে উৎসাহিত হন। সারা দেশে এ ধরনের প্রকল্পে টাকা জোগাই।’’
স্বামীর অত্যাচার আর সহ্য করতে না-পেরে এক সময় ছেলে-মেয়ের হাত ধরে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে আসা আরিফা যেমন বলছিলেন, দেগঙ্গা এলাকার গ্রামে বাপের বাড়ি ফেরার পরেই শুরু হয়েছিল যুদ্ধটা। তাঁর কথায়, ‘‘লোকের বাড়ি কাজ করেও দু’বেলা ভাত জুটত না। অনেক দিনই বাচ্চাগুলো না খেয়ে ঘুমোত।’’ মাসে রোজগার হত ৭০০ টাকা। এখন সেলাই মেশিন চালিয়ে মাসে তা ৭-৮ হাজার টাকা। মেয়ের জন্য সোনাও কিনছেন একটু-একটু করে।
একই ছবি মামণি খাতুনের ঘরে। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে যখন পেটে, স্বামী ছেড়ে যান। আর আসেননি।’’ চূড়ান্ত সমস্যায় পড়েন। এখন আশপাশের আমটোলা, মির্জানগর, গোলাবাড়ি গ্রামে ঘুরে মণিহারি সামগ্রী ফেরি করেন। মাসে রোজগার ৫-৬ হাজার।
বন্ধন-এর অফিসার মহিউদ্দিন মোল্লা জানান, নির্যাতিতা মহিলাদের সাহায্যের এই কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৬ সাল থেকেই। দু’বছর ধরে তাঁদের কাউকে সেলাই মেশিন, কাউকে রেডিমেড জামাকাপড়, কাউকে মুদির দোকান দিয়ে সাহায্য করা হয়। যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন। সেই প্রকল্পেই টাকা জোগানোর সিদ্ধান্ত নেয় ইন্ডিগো।
কিন্তু সরকারি সাহায্য?
পাওয়ার কথা। কিন্তু তা চাওয়ার মতো সপ্রতিভ আরিফারা সকলে নন। সরকারি আধিকারিকের যদিও দাবি, ‘‘অনেকেই সাহায্য পান। তার প্রচার হয় না।’’ সেই না-পাওয়ায় মামণিদের অবশ্য উড়ান আটকায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy