স্বল্প সঞ্চয়ের পরে এ বার কমলো কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) সুদ। দেশে পিএফের প্রায় ৫ কোটি সদস্য ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে তাঁদের জমা টাকায় সুদ পাবেন ৮.৬৫% হারে। ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষে যা ছিল ৮.৮%। অর্থাৎ আগের বছরের থেকে ১৫ বেসিস পয়েন্ট কম। পাশাপাশি, সদস্যদের বোনাসের টোপ দিয়েছেন পিএফ কর্তৃপক্ষ। যে-সব সদস্য অন্তত ২০ বছর পিএফ জমা দিয়েছেন, তাঁদের অবসরের সময়ে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ওই বিশেষ বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সুদ কমানোর সিদ্ধান্ত পিএফের অছি পরিষদে গৃহীত হয়েছে। যদিও অছি পরিষদে ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের দাবি, অর্থমন্ত্রী ওই হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমাতে বলেছিলেন, যা তারা খারিজ করেছে। সঙ্গে রয়েছে বোনাসের প্রস্তাব। সব প্রস্তাবই অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে অর্থ মন্ত্রকের কাছে।
বোনাসের ক্ষেত্রে চাকরির মেয়াদে স্থায়ী শারীরিক প্রতিবন্ধতা হলে, তাঁরা ২০ বছরের কম সদস্য থাকলেও ওই সুবিধা পাবেন। বাড়ানো হয়েছে পিএফের সঙ্গে যুক্ত বিমা বা এমপ্লয়িজ ডিপজিট লিঙ্কড ইনশিওরেন্সের (ইডিএলআই) সুবিধাও।
এক নজরে
•
গত অর্থবর্ষে (২০১৬-’১৭) পিএফে সুদ কমে ৮.৬৫%
•
ইপিএফের আওতায় ন্যূনতম জীবনবিমা ২.৫ লক্ষ টাকা (এত দিন সর্বোচ্চ ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জীবনবিমা থাকলেও, ন্যূনতম অঙ্ক ছিল না)
•
কমপক্ষে ২০ বছর ইপিএফে টাকা রাখলে অবসরের সময় লয়্যালটি বোনাস ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত
কোন আয়ে কত*
বেতন** বোনাস**
•
৫,০০০ পর্যন্ত ৩০,০০০
•
৫,০০১-১০,০০০ ৪০,০০০
•
১০,০০০-এর বেশি ৫০,০০০
* চাকরির মেয়াদে স্থায়ী শারীরিক প্রতিবন্ধতা হলে, সেই কর্মীরা ২০ বছরের কম সদস্য থাকলেও এই সুবিধা পাবেন।
** হিসেব টাকায়
যে-সব সদস্য অন্তত ২০ বছর পিএফের সদস্য থেকে অ্যাকাউন্টে নিয়মিত টাকা জমা দিয়েছেন, তাঁরা অবসরের সময়ে ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লয়্যালটি বোনাস পাবেন। বোনাসের অঙ্ক স্থির হবে সদস্যের বেতনের ভিত্তিতে। এ ব্যাপারে অছি পরিষদের সদস্য এবং এআইউটিইউসির সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর সাহা বলেন, ‘‘ওই ২০ বছরের মধ্যে যদি সংস্থা বন্ধ থাকে বা কোনও কারণে অ্যাকাউন্টে টাকা জমা না-পড়ে, তা হলে ২০ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরের বছরগুলি যোগ করে দেখা হবে, মোট ২০ বছর টাকা জমা পড়েছে কি না। যদি পড়ে, তা হলে সংশ্লিষ্ট সদস্য বোনাস পাবেন, অন্যথায় নয়।
এ দিকে ইডিএলআইয়ে এত দিন বিমার সর্বোচ্চ অঙ্ক ৬ লক্ষ টাকা নির্ধারিত থাকলেও ন্যূনতম অঙ্ক কিছু ছিল না। এ বার থেকে পিএফের কোনও সদস্য কর্মরত অবস্থায় মারা গেলে তিনি অন্তত ২.৫০ লক্ষ টাকা বিমার টাকা পাবেন। ইডিএলআইয়ের তহবিলে প্রতি বছরই বিপুল অর্থ জমা পড়ে। কিন্তু খবচ হয় নামমাত্র। নিয়োগকারীরা কর্মী পিছু বেতনের ০.৫% টাকা ইডিএলআইয়ে জমা দেন। এটাই ওই তহবিলের আয়ের উৎস। পিএফ কর্তৃপক্ষের সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ২০০৬-’০৭ সালে ইডিএলআই তহবিল ছিল ৫০৬ কোটি টাকা। ২০১৫-’১৬ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১৮,১১৯.২৯ কোটি। সেখানে প্রতি বছর যে-টাকা ইডিএলআই তহবিলে জমা পড়ে, তা থেকে বিমা বাবদ ব্যয়ের পরিমাণ গত ৯ বছরে ১৫% থেকে বেড়ে হয়েছে ২০%।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy