দেশের ক্ষতি। ধাক্কা অর্থনীতিতেও।
রঘুরাম রাজনের বিদায় ঘোষণাকে শনিবার এ ভাবেই ব্যাখ্যা করল ভারতের শিল্পমহল। সারা দুনিয়ায় প্রায় এক ডাকে চেনা অত বড় মাপের অর্থনীতিবিদকে যে ভাবে এবং যে ভাষায় কিছু দিন ধরে টানা আক্রমণ করা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন শিল্পপতিদের এক বড় অংশ।
শনিবার শেয়ার বাজার বন্ধ। কেনা-বেচা হয় না বিদেশি মুদ্রা। তাই ওই দুই বাজারে শীর্ষ ব্যাঙ্কের গর্ভনরের চলে যাওয়ার ঘোষণার আঁচ টের পাওয়া যাবে সোমবার, বাজার খুললে। অনেকের আশঙ্কা, এখন অন্তত সাময়িক ভাবে ধস নামতে পারে শেয়ার বাজারে। মুখ ফেরাতে পারে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির লগ্নি। মুখ থুবড়ে পড়তে পারে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দামও। আর সেই সম্ভাবনা মাথায় থাকার কারণেই সম্ভবত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শীর্ষ ব্যাঙ্কের পরবর্তী গভর্নরের নাম ঘোষণা করতে কোমর বাঁধছে কেন্দ্র।
মহীন্দ্রা গোষ্ঠীর কর্ণধার আনন্দ মহীন্দ্রা, এইচডিএফসি-র দীপক পারেখ, ইনফোসিসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণমূর্তি, ওই সংস্থার সিইও বিশাল সিক্কা থেকে শুরু করে বায়োকনের কিরণ মজুমদার শ— সকলের কথার মর্মার্থই প্রায় এক। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের শীর্ষ পদে বসার উপযুক্ত লোক নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে। কিন্তু অর্থনীতির এই টালমাটাল সময়ে হাল ধরতে রাজনের মতো দক্ষ ব্যাঙ্কার পাওয়া শক্ত। খুব কঠিন তাঁর মতো আরও এক জন অর্থনীতিবিদ খুঁজে আনা, যাঁকে গোটা পৃথিবী এক ডাকে চেনে। কুর্নিশ করে সেই হাতে গোনাদের এক জন হিসেবে, ২০০৮ সালের বিশ্বজোড়া মন্দা আগাম পড়তে পেরেছিলেন যিনি।
এক বার নয়, বরং আরও দু’বার রাজনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আগে বারবার সওয়াল করেছেন মূর্তি। কিন্তু আইএমএফের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে বুথ স্কুলের ছুটিতে থাকা অধ্যাপক সেপ্টেম্বরের পরে ফের সেই পড়াশোনার জগতে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দুঃখিত তিনি। তাঁর ক্ষোভ, আরও কিছুটা সম্মান প্রাপ্য ছিল রাজনের। একই মতের শরিক কিরণ মজুমদার শ। সিক্কা আবার খোঁচা দিয়েছেন রাজনের ‘ভারতীয়ত্ব’ নিয়ে প্রশ্ন তোলাকে। বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের মতে, রাজনের বিদায় ভারতীয় অর্থনীতির পক্ষে ভাল লক্ষণ নয়। তবে এ নিয়ে মন্তব্য করেনি অন্য দুই বণিকসভা সিআইআই ও ফিকি।
মূল্যবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাঁধাকে আইনের আওতায় আনা থেকে ঋণনীতি -কমিটি তৈরির সুপারিশ— শিল্পমহলের মতে, দীর্ঘ মেয়াদেও শীর্ষ ব্যাঙ্কের খোলনলচে বদলে যাচ্ছেন রাজন। কিন্তু অস্থির বিশ্ব অর্থনীতি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরোনোর আশঙ্কা বা ডলারে টাকার দর ফের ৭০-এর দিকে ধাওয়া করার এই সময়েই তাঁকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল বলে আক্ষেপ করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy