তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে স্টার্ট-আপ বা সদ্য তৈরি সংস্থার জন্য সম্পূর্ণ নতুন নীতি আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই নীতির খসড়া তৈরি করছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পেরই সংগঠন ন্যাসকম। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ পরিকল্পনার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তৈরি হবে এই আলাদা নীতি।
ভারতে ছোট-বড় সব মিলিয়ে স্টার্ট-আপের সংখ্যা এখন ৩২০০। এবং প্রতি বছরই ৮০০ নতুন স্টার্ট-আপ তৈরি হচ্ছে বলে জানান ন্যাসকমের প্রেসিডেন্ট আর চন্দ্রশেখর। আর এই সংখ্যার বাড়বাড়ন্তের সঙ্গেই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে রয়েছে বলে দাবি করলেন চন্দ্রশেখর। শুক্রবার কলকাতায় ন্যাসকমের একটি অনুষ্ঠান শেষে তিনি আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘স্টার্ট-আপদের এগিয়ে যাওয়ার উপরে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করবে। ফলে তাদের কাজকর্মের সুবিধার জন্য ভিন্ন নীতি জরুরি।’’ সেই নীতি তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বলে তিনি জানান।
শুধুই বড় সংস্থার প্রসার নয়। প্রযুক্তি ও নিত্যনতুন ভাবনাচিন্তার জন্য স্টার্ট-আপ সংস্থার বিকল্প নেই বলে মনে করে ভারত তথা বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহল। চন্দ্রশেখর জানান সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের মেলবন্ধন ঘটাতে স্টার্ট-আপ সংস্থাদের কাজে লাগাতে হবে। সামান্য পুঁজির এ সব সংস্থার উন্নতির জন্য সরকারকে সহায়ক হয়ে উঠতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন আলাদা নীতি। ন্যাসকমের মতে, আর্থিক ও অন্যান্য নিয়মকানুন মেনে চলার জন্য বড় ও মাঝারি সংস্থার পৃথক বিভাগ থাকে। স্টার্ট-আপ সংস্থার তা থাকে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এক জন বা দু’জনকে নিয়ে তৈরি হয় স্টার্ট-আপ সংস্থা। চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘নতুন ভাবনাচিন্তা বাস্তবায়িত করার বদলে নিয়ম-কানুন মানতেই সময় চলে গেলে, আদতে লাভ হবে না। সংস্থা তৈরি থেকে শুরু করে উদ্যোগ পুঁজি পাওয়ার ক্ষেত্রে স্টার্ট আপের জন্য তুলনামূলক সহজ নিয়মকানুন চাই। ’’
আর শুধু ব্যবসা চালু করার জন্যই সহজ নিয়ম নয়। ব্যবসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্যও চাই সহজ নীতি। কারণ গোটা বিশ্বের মতোই ভারতেও স্টার্ট আপ সংস্থার সাফল্য হাতে গোনা যায়। চন্দ্রশেখর জানান, দশটি স্টার্ট-আপ সংস্থার মধ্যে ন’টি লাভজনক হয় না। সে ক্ষেত্রে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার রাস্তাও মসৃণ করা দরকার।
নচেৎ নতুন সংস্থা তৈরি করতে পিছপা হবে দেশের মেধাসম্পদ।
নতুন সংস্থার জন্য প্রাথমিক পুঁজি পাওয়ার রাস্তা এখন অনেকটাই খুলেছে বলে দাবি ন্যাসকমের। দেশি-বিদেশি সংস্থা উদ্যোগ পুঁজি ঢালতে এগিয়ে আসছে। বিভিন্ন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বা উদ্যোগ পুঁজি সংস্থা স্টার্ট-আপে টাকা ঢালছে। রতন টাটার মতো পোড় খাওয়া শিল্পপতিও নিত্যনতুন স্টার্ট আপ সংস্থায় লগ্নি করছেন। সংগঠন হিসেবে ন্যাসকমও স্টার্ট-আপ সংস্থাকে আর্থিক ও পরিকাঠামোর জোগান দিয়ে সাহায্য করে। তিনশোর বেশি স্টার্ট-আপ ন্যাসকমের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
পুঁজির চিন্তা কমলেও নিয়মের ফাঁস আলগা হয়নি বলে অভিযোগ চন্দ্রশেখরের। পৃথক নীতি সেই সমস্যার সমাধান করবে বলে তাঁর দাবি। কেন্দ্রও একই ভাবনাচিন্তা করছে। দ্রুত খসড়া প্রস্তাব জমা দিলে কেন্দ্রের সবুজ সঙ্কেত পেতে দেরি হবে না বলেই মনে করছে ন্যাসকম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy