দু’দিন বিশ্রাম নেওয়ার পরে ফের দৌড় শুরু করল শেয়ার বাজার। সোমবার এক লাফে সেনসেক্স বেড়ে গিয়েছে ২৯৩.১৫ পয়েন্ট এবং নিফটি ৮৭.০৫ পয়েন্ট। দুটি সূচকই ফের সৃষ্টি করেছে উত্থানের নতুন নজির। এ দিন বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স ছিল ২৭,৩১৯.৮৫ অঙ্কে এবং নিফটি এসে দাঁড়ায় ৮১৭৩.৯০ অঙ্কে। বিশ্ব বাজারে তেলের দাম ব্যারেলে ১০০ ডলারের নীচে নেমে আসা এবং বিদেশি আর্থিক সংস্থার ভারতের বাজারে একটানা পুঁজি বিনিয়োগই এর কারণ বলে বাজার সূত্রের খবর।
এই দিন ডলারের সাপেক্ষে টাকার দামও ১০ পয়সা বেড়েছে। বাজার বন্ধের সময়ে এক ডলার দাঁড়িয়েছে ৬০.২৯ টাকায়। গত ছ’সপ্তাহের মধ্যে এ দিনই টাকার দাম ছিল সব থেকে বেশি।
গত দু’দিনের লেনদেনে সেনসেক্সের পতন হয়েছিল মোট ১১৩.৩৩ পয়েন্ট। কিন্তু তাকে পুষিয়ে দিয়ে সোমবার অতিরিক্ত ১৬০ পয়েন্ট এগিয়ে গেল সেনসেক্স।
সূচকের এই উত্থানের পূর্বাভাস অবশ্য আগেই দিয়েছিলেন শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানিয়েছিলেন, মাঝে মধ্যে কিছুটা পতন হলেও নিট হিসাবে সূচকের গতি থাকবে উপরের দিকেই। বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাসকেই সত্য প্রমাণ করল সূচকের এ দিনের উত্থান।
এক দিকে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমা, অন্য দিকে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিনিয়োগ বৃদ্ধিই ভারতের শেয়ার বাজারকে ফের তেজী করে তুলেছে। এই দিন আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চ মানের ব্রেন্ট অশোধিত তেলের প্রতি ব্যারেলের দাম ১০০ ডলারের নীচে নেমে এসেছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, গত ১৪ মাসের মধ্যে অশোধিত তেলের দাম এর আগে এতটা কমেনি।
আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমা ভারতের অর্থনীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ভারতকে প্রয়োজনের ৮০% তেলই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ভারত যে-সব পণ্য আমদানি করে, তার মধ্যে একক ভাবে তেল আমদানি খাতেই বিদেশি মুদ্রা খরচ হয় সব থেকে বেশি। তাই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে চলতি খাতে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ঘাটতি উল্লেখযোগ্য ভাবে কমবে। যা দেশের অর্থনীতির হাল ফেরাতে সহায়ক হবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
এ দিকে ভারতের বাজারে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিও তাদের বিনিয়োগ ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছে। সংবাদ সংস্থার খবর, ওই সব সংস্থা গত সপ্তাহেই ভারতের বাজারে ৪৮১৩.৩৮ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমায় এ দিন ভারতে বিশেষত তেল উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির শেয়ার দর উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ে। ওএনজিসির দর বেড়েছে ২.৭৮%, কেয়ার্ন ইন্ডিয়া ২.২৪% এবং গেইল ০.২২%। পাশাপাশি অন্য যে-সব সংস্থার দর চোখে পড়ার মতো বেড়েছে, তার মধ্যে রয়েছে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, বজাজ অটো ইত্যাদি।
এই সপ্তাহেই মূল্যবৃদ্ধি ও শিল্পোৎপাদনের সূচক উঠল না পড়ল, তা জানা যাবে। লগ্নিকারীদের চোখ এখন সেই দিকেই। কারণ, ওই দুই সূচকের গতিপ্রকৃতি শেয়ার বাজারে বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy