কর খাতে আয় আশানুরূপ না বাড়ার যুক্তিতে পেট্রল-ডিজেলের উৎপাদন শুল্ক ছাঁটার সম্ভাবনায় কার্যত দাঁড়ি টেনেছে অর্থ মন্ত্রক। অথচ বিশ্ব বাজারে বাড়তে থাকা অশোধিত তেল ও দেশে ডলারে নামতে থাকার টাকার ধাক্কায় সোমবার মেট্রো শহরগুলির মধ্যে মুম্বইয়ে এই প্রথম লিটারে পেট্রল ৯০ টাকা ছাড়িয়েছে। আইওসি জানিয়েছে, আজ, মঙ্গলবার কলকাতায় পেট্রলের দর ৮৪.৬৮ টাকা হয়েছে। যা নতুন রেকর্ড। ৭৫.৯৭ টাকায় পৌঁছে নতুন নজির ডিজেলেরও। এই পরিস্থিতিতে কার্যত চক্রব্যূহে আটকে আপাতত তেল আমদানিতেই রাশ টানতে চাইছে আতান্তরে পড়া শোধনাগারগুলি। ভরসা করতে চাইছে দেশে তাদের মজুত ভাণ্ডারে। যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, এ ভাবে কত দিন চলবে?
অবিলম্বে তেলের দৌড় না রুখলে মানুষের ক্ষোভ যে বাঁধ ভাঙবে, তা বিলক্ষণ বুঝছে মোদী সরকার। হজম করতে হচ্ছে বিরোধীদের তোপ। তার উপর সোমবার বিশ্ব বাজারে তেল ব্যারেলে ৮১ ডলার ছুঁয়ে প্রায় চার বছরে সর্বোচ্চ। ডলার আরও বেড়ে সাড়ে ৭২ টাকা পেরিয়েছে। ফলে তেল আমদানি খাতে খরচ বাড়ছে ভারতের। এই অবস্থায় আমদানি কমিয়ে মজুতের তেল দিয়েই জোগান স্বাভাবিক রাখার কথা ভাবছে তিন রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা— আইওসি, বিপিসিএল এবং এইচপিসিএল। এ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন আইওসি-র চেয়ারম্যান সঞ্জীব সিংহ।
বিপিসিএলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আর কে সিংহের দাবি, ২০১৩ সালে অশোধিত তেল ব্যারেলে ১০০ ডলার ছোঁয়ার সময়েও এই পথে হাঁটা হয়েছিল। তখন ডলার ছিল ৬৮ টাকা। তবে প্রশ্ন উঠেছে, মজুত যখন প্রায় শেষ হবে, তখন? যদি বিশ্ব বাজারে তেলের দর তখনও না কমে? উল্লেখ্য, ভারত কখনও মজুতের হিসেব দেয় না। তবে সূত্রের খবর, সাধারণত সংস্থার ট্যাঙ্কে ৭-৮ দিনের ছাড়াও পাইপলাইনে তেল থাকে। এ সবের সঙ্গে জলপথে থাকা জাহাজের তেল মিলিয়ে সার্বিক মজুত হিসেব হয়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক অজিতাভ রায়চৌধুরীর অবশ্য প্রস্তাব, শুল্ক কমানোর রাস্তা যখন প্রায় বন্ধ, তখন তেলের দু’রকম দাম হোক। রান্নার গ্যাসের মতোই উচ্চবিত্তদের জন্য ভর্তুকি ছাড়া। বাকিদের ভর্তুকি দিয়ে। এখন দেখার, তেলের ছেঁকা কমাতে শেষ পর্যন্ত চক্রব্যূহ ভাঙা যায় কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy