সপ্তাহটা খুব একটা ভাল যায়নি ভারত তথা বিশ্ব বাজারের কাছে। ফেড রেট বাড়ার আতঙ্ক আবার চেপে বসেছে বাজারের মাথায়। ‘মার্কিন মুলুকে সুদ বাড়ানোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে’, জ্যানেট ইয়েলেনের এই মন্তব্যে আতঙ্ক ছড়ায় গোটা বিশ্বে। ২৮,০০০ ছেড়ে নেমে আসে সেনসেক্সও। কম-বেশি নামে বহু শেয়ার। তবে বর্তমান অবস্থায় বড় মাপের শেয়ারগুলির উপর চাপ সৃষ্টি হলেও মাঝারি এবং ছোট শেয়ারগুলিকে কিন্তু তেমন পড়তে দেখা যায়নি। নতুন ইস্যুর বাজারও যথেষ্ট চাঙ্গা।
মার্কিন মুলুকে সুদ বাড়লে ভারতের শেয়ার বাজার থেকে মোটা আকারের বিদেশি লগ্নি ফেরত যেতে পারে, এই আশঙ্কায় দাম বাড়ে ডলারেরও। এক ডলারের দাম আবার ছাড়ায় ৬৭ টাকার মাত্রা। অন্য দিকে স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টি হবে—এই পূর্বাভাসের জায়গায় আবহাওয়া দফতর থেকে এখন জানানো হচ্ছে, বৃষ্টিপাতে ২ শতাংশ ঘাটতি হতে পারে। এই ঘাটতিতে অবশ্য কৃষি উৎপাদনে বড় রকমের প্রভাব পড়বে না বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে বাজার যেন একটু থমকে গিয়েছে। অবশ্য বড় পতনের আশঙ্কা কেউ করছেন না। বরং নতুন কোনও ট্রিগার পেলে সূচক আবার ঊর্ধ্বমুখী হবে বলেই আশা করা হচ্ছে। ভারতের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার এখন যথেষ্ট মজবুত। যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ আনা গিয়েছে আমদানির উপর। অর্থাৎ ফেড রেট বাড়লেও তার মোকাবিলা করা খুব শক্ত হবে না। তবে এর সাময়িক প্রভাব অবশ্যই এড়ানো যাবে না।
প্রথম পাবলিক ইস্যুতে আরবিএল ব্যাঙ্কের আশাতীত সাড়া আবার প্রমাণ করল নতুন ইস্যুর বাজার এখন বেশ শক্তিশালী। প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ৭০ গুণ আবেদন জমা পড়েছে বেসরকারি এই ব্যাঙ্কের নতুন ইস্যুতে। আশা, ১৫ থেকে ২০ শতাংশ প্রিমিয়ামে শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ হবে আরবিএল ব্যাঙ্ক শেয়ার। ২২৪-২২৫ টাকা দামে এই ব্যাঙ্ক ইস্যু করেছে মোট ৩.৭৯ কোটি শেয়ার। খুচরো লগ্নিকারীদের জন্য সংরক্ষিত শেয়ার কিনতে আবেদন পড়েছে ৫.৫ গুণ। ইস্যুটির মোট আকার কম-বেশি ১২০০ কোটি টাকা। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ১৬টি কোম্পানি নতুন ইস্যুর মাধ্যমে বাজার থেকে সংগ্রহ করেছে প্রায় ১১,০০০ কোটি টাকা।
অন্য দিকে গত এক বছরে ছোট-মাঝারি শহরগুলিতে গত এক বছরে ভালই জনপ্রিয় হয়েছে বিভিন্ন মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্প। এর বিভিন্ন কারণের মধ্যে রয়েছে: ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে সুদের হার নেমে আসা, শেয়ার এবং বন্ডের বাজার তেজী থাকা, চিট ফান্ডগুলির দৌরাত্ম্য কমা এবং বিপণন জোরদার হওয়া।
সেবি-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বড় ১৫টি শহরের (বি-১৫) বাইরে গত আর্থিক বছরে মিউচুয়াল ফান্ডগুলিতে লগ্নি বেড়েছে ১৯ শতাংশ। গোটা বাজারে মোট শেয়ার মূল্য বা মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের পরিমাণ যেখানে ১০৯ লক্ষ কোটি টাকা, তখন মিউচুয়াল ফান্ডের আওতায় থাকা সম্পদের পরিমাণ কম-বেশি ১৫ লক্ষ কোটি টাকা। সেনসেক্স ২২ হাজার থেকে ২৪ হাজার এবং পরে ২৮ হাজারে উঠে আসায় বহু লগ্নিকারী মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্পে ভাল লাভের সন্ধান পাচ্ছেন। লাভের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে এনপিএস প্রকল্পের ইকুইটি বিকল্প এবং ইকুইটি নির্ভর এক্সচেঞ্জ ট্রেডের ফান্ড বা ইটিএফ প্রকল্পগুলিতেও। সঙ্গের সারণিতে দেখানো হল দেশের প্রধান ১৫টি শহরের বাইরে গত এক বছরে কেমন ভাবে বেড়েছে মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্পগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy