Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Share Market

হাজার পয়েন্টের পতনে হারাল ৮.৫ লক্ষ কোটি

এ দিন অবশ্য লেনদেনের শুরুতে সেনসেক্স প্রায় ৪৫০ পয়েন্ট উঠেছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর থেকেই মুনাফা তুলতে শেয়ার বিক্রির ধুম পড়ে লগ্নিকারীদের মধ্যে। দিনের শেষে সূচক থামে ৭০,৩৭০.৫৫ অঙ্কে।

An image of Sensex

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩৯
Share: Save:

ফের ধস শেয়ার বাজারে। মঙ্গলবার হুড়মুড়িয়ে হাজার পয়েন্টেরও বেশি পড়ল সেনসেক্স। সূচক ফের নামল ৭০ হাজারের ঘরে। এক ধাক্কায় বিএসই-র লগ্নিকারীরা হারালেন ৮.৫ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ। গত কয়েকটি লেনদেনে যে ভাবে সূচক নেমেছে, তাকে বাজারে দামের সংশোধন বলেই আখ্যা দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। তবে এই পতনের পিছনে দেশ-বিদেশের বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলেও মনে করছেন তাঁরা। জানাচ্ছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের দেখেশুনে বাজারে পা ফেলতে হবে।

এ দিন অবশ্য লেনদেনের শুরুতে সেনসেক্স প্রায় ৪৫০ পয়েন্ট উঠেছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর থেকেই মুনাফা তুলতে শেয়ার বিক্রির ধুম পড়ে লগ্নিকারীদের মধ্যে। দিনের শেষে সূচক থামে ৭০,৩৭০.৫৫ অঙ্কে। যা আগের দিনের চেয়ে ১০৫৩.১০ পয়েন্ট কম। নিফ্‌টি পড়ে ৩৩৩.০০ পয়েন্ট। দাঁড়ায় ২১,২৩৮.৮০ অঙ্কে। এর আগে গত সপ্তাহে বুধবার অস্থির বাজারে এক দিনেই সেনসেক্স পড়েছিল ১৬২৮ পয়েন্ট। এ দিন ডলারের সাপেক্ষে নেমেছে টাকার দামও। এক ডলার ৮ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৮৩.১৫ টাকা।

বাজার বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দী বলেন, আমেরিকা ও ইরানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির বিরূপ প্রভাব পড়ছে সূচকে। তার উপরে লোহিত সাগরে হুথি জঙ্গি গোষ্ঠীর হানার জেরে পণ্যবাহী জাহাজগুলিকে তাদের গতিপথ পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এর ফলে জাহাজ ভাড়া বেড়ে পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। পাশপাশি, আমেরিকার চাঙ্গা বন্ডের বাজার লগ্নিকারীদের টানছে। তাতে
ইন্ধন জোগাচ্ছে মূল্যবৃদ্ধি লক্ষ্যের থেকে উপরে থাকায় সে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ক্রমশ ক্ষীণ হতে থাকা। এ সবের প্রভাব পড়ছে ভারতের বাজারে। তার উপরে দেশে বিভিন্ন সংস্থার তৃতীয় ত্রৈমাসিকের যে আর্থিক ফলাফল প্রকাশ হচ্ছে, তাতেও খুশি নয় বাজার। বিশেষত চিন্তায় রাখছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি।

আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলে জানিয়েছে মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ। সেই মন্তব্যও এ দিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সূচকে টেনে নামিয়েছে। আর অস্থির বাজারের সুযোগ নিয়ে শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করেছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। এ দিন তারা শেয়ার বেচেছে ৩১১৫.৩৯ কোটি টাকার।

তবে সূচকের এই পতনকে সংশোধন আখ্যা দিয়েছেন ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখ। তিনি বলেন, ‘‘শেয়ারের দাম অযৌক্তিক ভাবে বেড়ে গিয়েছিল। তাই এই সংশোধন স্বাভাবিক। এটা বাজারের ভিতকে পোক্ত করবে। তবে মিউচুাল ফান্ডগুলির লগ্নি অব্যাহত থাকায় খুব বেশি দিন অবশ্য বাজার নীচে থাকবে বলে মনে হয় না।’’

একই মত আইআইএফএলের বাজার গবেষণা বিভাগের কর্তা জয়েস ভানুশালিরও। তিনি বলেন, “পতন আরও কিছু দিন চলবে। সেনসেক্স ৬৮,০০০ ও নিফ্‌টি ২০,৮০০-তে নামতে পারে। তার পরে ফের সূচক উঠবে বলে মনে হয়। সব মিলিয়ে অবশ্য ২০২৪ সালে বাজারের মুখ থাকবে উপরের দিকেই।’’ এই অবস্থায় সাধারণ ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের আপাতত বাজার থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ভানুশালির মতে, তাঁদের উচিত হাতে টাকা জমিয়ে রাখা। পরে সূচক পড়লে ভাল শেয়ারে তা লগ্নি করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sensex Share Market Stock Market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE