Advertisement
E-Paper

বাজেটে খুশি শেয়ার বাজার, এক লাফে উঠল ৪৮৬ পয়েন্ট

তেমন কিছু সরাসরি হাতে আসেনি। তবে হারাতেও হয়নি কিছু। আর তাতেই খুশি শেয়ার বাজার। মূলত এর জেরেই বুধবার এক লাফে ৪৮৫.৬৮ পয়েন্ট এগিয়ে গেল সেনসেক্স। বাজার বন্ধের সময়ে দাঁড়াল ২৮,১৪১.৬৪ অঙ্কে। আর এক সূচক নিফ্‌টিও ছা়ড়িয়েছে ৮,৭০০-র মাত্রা।

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৭

তেমন কিছু সরাসরি হাতে আসেনি। তবে হারাতেও হয়নি কিছু। আর তাতেই খুশি শেয়ার বাজার। মূলত এর জেরেই বুধবার এক লাফে ৪৮৫.৬৮ পয়েন্ট এগিয়ে গেল সেনসেক্স। বাজার বন্ধের সময়ে দাঁড়াল ২৮,১৪১.৬৪ অঙ্কে। আর এক সূচক নিফ্‌টিও ছা়ড়িয়েছে ৮,৭০০-র মাত্রা। ১৫৫.১০ পয়েন্ট বেড়ে তা থিতু হয়েছে ৮,৭১৬.৪০ অঙ্কে।

এ দিন ডলারের সাপেক্ষে ৪০ পয়সা বেড়েছে টাকার দামও। যা চলতি বছরের কোনও এক দিনে ভারতীয় মুদ্রাটির সব থেকে বেশি বৃদ্ধি। দিনের শেষে এক ডলার হয়েছে ৬৭.৪৭ টাকা।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক’দিন আগে বলেছিলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য শেয়ার বাজারেরও কিছুটা স্বার্থত্যাগ করা উচিত। যাকে শেয়ারের লগ্নিতে দীর্ঘ মেয়াদি মূলধনী লাভকর ছাড়ের উপর কোপ পড়ার ইঙ্গিত হিসেবেই দেখতে শুরু করেন লগ্নিকারীরা। দ্রুত ছড়ায় আতঙ্ক। তাঁদের ধারণা হয়, এ বার বাজেটে ওই সুবিধা কিছুটা কাটাছাঁট করা হতে পারে। এমনকী এই ভয় দূর করতে অর্থমন্ত্রী জেটলি ওই সুবিধা তুলে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে মন্তব্য করলেও আশ্বস্ত হতে পারছিল না সংশ্লিষ্ট মহল। কিন্তু বাজেটে মূলধনী লাভকরের ওই সুবিধা সম্পর্কে কোনও উচ্যবাচ্য না করাতেই বাজার ভারমুক্ত অনেকখানি হয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাজার অবশ্য খুশি হয়েছে বাজেটে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য বিপুল তহবিল বরাদ্দ হওয়ার কারণেও। কারণ, পরিকাঠামো ক্ষেত্রের উন্নতি দেশের আর্থিক অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা নেয়।

এতে ইন্ধন জুগিয়েছে ২০১৭-’১৮ সালে রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা ৩.২ শতাংশে বেঁধে রাখার প্রস্তাবও। প্রবীণ বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে-র দাবি, ‘‘ঘাটতি ৩.২ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখতে পারলে তা আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক হবে।’’

এ ছাড়া যে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির জন্যও কিছু করছাড়ের কথা ঘোষণা করা হয়েছে বাজেটে। বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, ভারতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ওই সংস্থাগুলি এতে কিছুটা উৎসাহিত হতে পারে।

তবে শেয়ার বাজারের এই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া কতটা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই। ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিকেক্টর এস কে কৌশিক বলেন, ‘‘সূচকের এই বৃদ্ধি বাজেটের পরিপ্রেক্ষিতে শেয়ার বাজারের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। বাজারকে আজ কিছু খোয়াতে হয়নি ঠিকই। কিন্তু চাঙ্গা হওয়ার মতো উল্লেখযোগ্য তেমন কোনও রসদও ছিল না তাতে।। আমার আশঙ্কা, খুব শীঘ্রই বাজেট নিয়ে লগ্নিকারীদের এই উল্লাস স্তিমিত হবে। সূচকের বড় পতন হলেও অবাক হব না।’’

হতাশ স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ-ও। তিনি বলেন, ‘‘বাজেট আমাকে আশাহত করেছে। নোট নাকচের পরে এ বার আয়করে সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে যে-আশা তৈরি হয়েছিল, তাতে কার্যত জলই ঢেলেছেন অর্থমন্ত্রী। আয়কর ভাল ছাড় মিললে মানুষের হাতে লগ্নিযোগ্য অর্থ বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এ দিন দেওয়া সামান্য ছাড়ে সেই উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। বরং বছরে ৫০ লক্ষ টাকার বেশি আয়ের উপর করের বোঝা বাড়ানো হয়েছে।’’

কমলবাবুরও আশঙ্কা, ক’দিনের মধ্যেই শেয়ারের দামে বড় সংশোধন হতে পারে। তাঁর বক্তব্য, নোট বাতিলের যে-বিরূপ প্রভাব শিল্প সংস্থাগুলির উপর পড়েছে, তার প্রতিফলন আগামী দু’টি ত্রৈমাসিকের আর্থিক ফলেই দেখা যাবে। একই কারণে এ বার বৃদ্ধিও যে কিছুটা কমবে, তা সরকারই কবুল করেছে। ফলে শেয়ার বাজার আগামী দিনে ক্রমে চাঙ্গা হবে, এটা আশা করার কোনও যুক্তি আছে বলে মনে করেন না কমলবাবুর মতো বাজার বিশেষজ্ঞরা।

ভারতের বাজারে লগ্নির ব্যাপারে তেমন উৎসাহী হতে দেখা যায়নি বিদেশি বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলিকেও। এ দিন তারা ঢেলেছে মাত্র ৯২.৭০ কোটি টাকা। তবে ভারতীয় আর্থিক সংস্থাগুলি প্রায় ১,১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে।

এ দিকে, ধাপে ধাপে উঠছে রাজীব গাঁধী ইকুইটি সেভিংস স্কিমের আওতায় করছাড়। প্রকল্প তেমন জনপ্রিয় নয় বলেই এই যা দেওয়া হয় শেয়ার বাজারে প্রথম লগ্নির জন্য। আয়কর আইনের ৮০সিসিজি-র আওতায় ২০১৮-’১৯ থেকে ছাড় মিলবে না এই প্রকল্পে।

Sensex Share Market Budget 2017
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy